২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইতিহাসের কালো অধ্যায়

-

আজ ২৩ জুন পলাশী দিবস। দেশীয় বণিক, বিশ্বাস ঘাতক ও ইংরেজ বেনিয়াদের চক্রান্তে পলাশীর আক্রমণে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের সাথে মাত্র এক ঘণ্টার প্রহসনের যুদ্ধে পরাজিত হন। তার পর প্রায় দুই শ’ বছরের গোলামির জিঞ্জির। ইংরেজ বেনিয়াদের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য সুদীর্ঘ প্রায় দুই শ’ বছরের আন্দোলন। কত বীরের রক্ত ঝরেছে, কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কালের গর্ভে ইতিহাস তার সাক্ষী। পলাশীর ২৩ জুনের ইতিহাস প্রকৃত সোনার বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করার ইতিহাস। ২৩ জুনের ইতিহাস, বিশ্বাস ঘাতকতার ইতিহাস।
পলাশীর প্রান্তরে মীর জাফরের বিশ্বাস ঘাতকতায়, বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার ভাগ্য বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। মীর জাফর অবশ্যই বিশ্বাস ঘাতক ছিলেন, ইতিহাসে দেখা যায় তার চেয়ে বহুগুণ বড় ও সফল বিশ্বাস ঘাতক ছিলেন ধনকুবের জগৎ শেঠ। মীর জাফর বিজাতি, বিদেশী ইংরেজদেরকে কখনও আপন উদ্যোগে ডেকে আনেননি। সে কাজটি করেছিলেন জগৎশেঠ গোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গী সাথীরা। তিনি ছিলেন শিখণ্ডি মাত্র।
মাড়োয়ারি হীরা চান্দ লোটা-কম্বল সম্বল করে সুবে-বাংলায় এসেছিল ১৬৯৫ সালে। তারপর ছেলে মানিক চাঁদ পরে সুবে বাংলায় পাটনা থেকে চলে আসে ঢাকায়। এই মানিক চাঁদের ভাগিনাই ফতে চাঁদ হচ্ছে কুখ্যাত স্বরূপ চাঁদ জগৎশেঠ। যে ছিল তথা ভারতের বুক থেকে মুসলিম শাসনের উচ্ছেদের মূল নায়ক। ইতিহাসে দেখা যায়, বিভিন্ন কূটনীতি ও কলা-কৌশলের এই পথের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিল মীর জাফর, ইয়ার লতিফ, শেঠ রূপ চাঁদ, মাহতাব রায়, রায়দুর্লভ, রাজা রাজ বল্লভ, নন্দ কুমার, উমিচাঁদ, দুর্লভরাম, মানিক চাঁদসহ আরও অনেকে। দেশ ও জাতির অকল্পনীয় ক্ষতির দুয়ার এরাই খুলে দেন এবং ইতিহাসের কদাকার আবর্জনায় এরা নিক্ষিপ্ত হয়। এই স্বরূপ চাঁদ জগৎশেঠ ও পিতামহের নীতি ও আদর্শের অনুসারী ছিলেন এবং জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সিরাজউদ্দৌলা, মীর জাফর ও মীর কাশিমের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন। নবাবের উদার ছত্রছায়ায় সুদের ব্যবসায় অর্থলগ্নি করে এই স্বরূপ চাঁদ হয়েছিলেন ধনকুবের। নবাবের দরবারে সর্বগ্রাসী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই স্বরূপ চাঁদ জগৎশেঠ। পাঁচ পুরুষ ধরে নবাবের দরবারে সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা এবং নিজেদের ক্রমবর্ধিষ্ণু বিশ্বাসঘাতকতায় চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে অপরিমেয় বিত্তের অধিকারী জগৎশেঠই ইংরেজদেরকে বাংলার শাসন ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার কাজে তৎকালে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, সে সময়ে জগৎশেঠের পরিবারের বার্ষিক আয় ছিল ৪০ লাখ টাকা, যা বর্তমান বাংলাদেশের মুদ্রা মানে ৯০০ শত কোটি টাকারও বেশি। মুর্শিদাবাদের দরবারে বেসরকারি ব্যক্তিত্ব হয়েও বিপুল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই স্বরূপ চাঁদ জগৎশেঠ। মুর্শিদকুলী খাঁর আমল থেকে পড়ে ওঠা নব্যবণিক শ্রেণীকে ও বিদেশী বণিকদেরকে পুঁজি সরবরাহ করে সারা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের একক করায়ত্ত চলে আসে তার হাতে। এই সুবাদেই নবাবের দরবারে ডজন খানেক মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও কর্ণধার ব্যক্তি ছিলেন এই স্বরূপ চাঁদ জগৎশেঠ। প্রচলিত ইতিহাসে সিরাজউদ্দৌলা অত্যাচারী, নারী লোভী, মাতাল এবং আরও অনেক দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তরুণ যুবক সিরাজের কিছু কিছু দোষ ত্রুটি থাকাই স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক কিছু নয়। সত্যিকারভাবে ইতিহাসের বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, এগুলো অতিরঞ্জিত। এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই।
সিরাজের নানা আলীবর্দী খান ইন্তেকাল করেন ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ৯ এপ্রিল। আর পলাশী যুদ্ধে সিরাজের পতন ঘটে ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন, অর্থাৎ ১৪ মাস ১৪ দিন পর। তাকে চর্তুদিকে ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়েছে। কিশোর সিরাজউদ্দৌলা ক্ষমতায় বসেই এই ১৪ মাসে কমপক্ষে ১২০০ মাইল দুর্গম পথ তাকে অতিক্রম করতে হয়েছে। সে সময়ে কোনো উন্নত যানবাহন ছিল না। পাঁচ, পাঁচটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করতে হয়েছে। চর্তুদিকে অসংখ্য ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হয়েছে। তাকে তো আলেকজান্ডারের চেয়েও দ্রুত গতিতে পথ চলতে হয়েছে। রাত কাটাতে হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে ও অশ্বপৃষ্ঠে। দিন কাটাতে হয়েছে ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে। নানাজীর উদ্যোগে সেই অল্প বয়সে বিবাহিত সিরাজের তখন আপন স্ত্রী লুৎফা, শিশু কন্যা জোহরারও প্রতি ফিরে তাকাবারও তো ফুরসত ছিল না। নাটকে আলেয়া নামের আর্য্য সুন্দরীদের মোহাবিষ্ট জালে রূপাকৃষ্ট পতঙ্গের মতো লাম্পট্য লীলায় সময় কাটাবার সুযোগ তিনি পেলেন কোথায়? এগুলো আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মকে আজ অবশ্যই গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। এ দেশের মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে যারা সে সময়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন, তাদের অনেককেই অস্বাভাবিকভাবে মরতে হয়েছে। সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করেছিল মোহাম্মদী বেগ মীরণের নির্দেশে। মোহাম্মদী বেগ উন্মাদ অবস্থায় দাম্পত্য কলহে এক কূপে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। মীরণের মৃত্যু ঘটেছিল বজ্রপাতে। সিরাজের খালা ষড়যন্ত্রকারী ঘসেটি বেগমকে মীরণ বুড়িগঙ্গার প্রবল খরস্রোতা নদীতে নৌকা ডুবিয়ে মেরে ফেলে। মীর জাফর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে দু’দুবার বাংলার মসনদে বসেছিলেন। কিন্তু শেষ বয়সে মারাত্মক কুষ্ঠ ব্যধিতে তার ভবলীলা সাঙ্গ হয়। মীর কাশিম আলী খান পরবর্তীতে বাঙলার নবাব হয়েছিলেন; কিন্তু শুরুতেই তিনি ছিলেন বাংলার মুসিলম শাসন অবসানের মূল ষড়যন্ত্রের অন্যতম সহযোগী। ভগবান গোলায় নবাবকে তিনি সর্বপ্রথম ধরিয়ে দেন তার শ্যালক মীরণের হাতে। শেষ পর্যায়ে এসে মীর কাশিম অনুধাবন করলেনÑ একদা এই চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি বাঙলার মুসলমানদের স্বার্থের চরমতম ক্ষতিই সাধন করেছেন এখন আর কোনো উপায় নেই। মীর কাশিম বুঝলেন ঠিকই, কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু মূল ষড়যন্ত্রকারীরা কি চিরকালই পর্দার অন্তরালে থেকে যাবে? মুঙ্গেরের দুর্গশীর্ষ থেকে বস্তায় ভরে তিনি নিক্ষেপ করেন জগৎশেঠ আর রায়দুর্লভের জীবন্ত দেহ গঙ্গার বুকে। অপর এক অপঘাতে নিহত হলো রাজা রাজ বল্লভ। পরবর্তীকালে তার সব কীর্তি পদ্মা নদীর গ্রাস করে কীর্তিনাশা নামধারণ করলো। কিন্তু এত করেও মীর কাশিম তার শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ইংরেজ কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে বনে জঙ্গলে আত্মগোপন করেই রইলেন। জঙ্গলেই তার দুই ছেলে নিহত হন। নির্বংশ মীর কাশিম আলী খান এরপর কোথায় উধাও হয়ে যান ইতিহাস সে সম্পর্কে নীরব। দীর্ঘ দিন পর তার লাশ পাওয়া যায় দিল্লির আজমেরি গেটের কাছে রাস্তার ওপরে। ষড়যন্ত্রকারীদের ইংরেজরা প্রায়ই প্রচুর অর্থবিত্ত এবং পদক, পদবি দিয়ে তুষ্ট করত বলে জানা যায়। এ রকম এক পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েও পদক প্রাপ্ত হিসেবে ডাক না পাওয়ায় সভাস্থলে উমিচাঁদের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। নন্দকুমার ভূষিত ছিল মহারাজা উপাধিতে কিন্তু ওয়ারেন হেস্টিংসের সাজানো মামলায় আসামি হিসেবে তাকে শেষ পর্যন্ত শেওড়া গাছে ঝুলতে হয় ফাঁসি কাষ্ঠে। আর রবার্ট কাইভ স্বয়ং নিজের গলায় ুর চালিয়ে আত্মহত্যা করে নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে যান। বড়ই করুন সে মৃত্যু। এভাবেই দেখা যায় বাংলার মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী ভূমিকা পালনকারীদের ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করেনি, চক্রান্তকারীদের ভোগ করতে হয়েছে মর্মান্তিক পরিণতি।
পলাশী যুদ্ধে পরজয়ের মূল কারণ কি? তা সঠিকভাবে আজো আমাদের জানা নেই। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এই যে, পলাশী যুদ্ধে রবার্ট কাইভের মাত্র তিন হাজার ২০০ সৈন্যের কাছে সিরাজউদ্দৌলার ৫০ হাজার সৈন্যের অভাবনীয় পরাজয় ঘটে। আশ্চার্যজনক ব্যাপার একটা দেশের হাজার হাজার সৈন্য পরবর্তীতে কোথায় গেল? পলাশী যুদ্ধের মাত্র তিন-চার বছরের পরে মীর কাশিমের কাটোয়া, গিরিয়া, উদয়নালার যুদ্ধে অথবা দিনাজপুর ও রংপুরকে কেন্দ্র করে নূরুল দিন ও ফকির মজনু শাহের যে প্রতিরোধ সংগ্রাম সেখানেও এসব সৈন্যের ঐক্যবদ্ধ লড়াই দেখতে পাওয়া যায়নি। সে সময় বাঙলার নবাব মীর জাফরকে সবাই কাইভের গর্দভ বলে জানতেন। শেষ মহূর্তে বাংলার মানুষেরা কেন তখন সেই গর্দভের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। পলাশীর প্রান্তরে ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া প্রেক্ষাপটে আজ আমাদের গভীরভাবে নতুন করে উপলব্ধি করতে হবে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। বিশ্বাসঘাতকতার অধ্যায়।
অথচ পলাশী যুদ্ধ সম্পর্কে রবার্ট কাইভ তার আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, সে দিন স্থানীয় অধীবাসীরা ইংরেজদের প্রতিরোধ করতে চাইলেই লাঠিসোটা আর হাতের ইটপাটকেল মেরেই তাদের খতম করে দিতে পারতো। কিন্তু এ দেশবাসীরা তা উপলব্ধি করতে পারেনি। যেকোনো কারণেই হোক সে দিন বাংলার মানুষ এগিয়ে যায়নি। তাদের রাজনৈতিক সচেতনতার তখন খুবই অভাব ছিল। পলাশীর ট্র্যাজেডির পরেও বাংলার সাধারণ মানুষ, কৃষক সমাজ দৈনন্দিন জীবন, নিত্যদিনের মতোই মাঠে কৃষি কাজ করেছে। ফসল বুনেছে। অথচ পলাশীর যুদ্ধে গোটা জাতীয় জীবনে কি নিদারুণ ভাগ্য বিপর্যয় ঘটলো, এক ঘণ্টার প্রহসন যুদ্ধে গোটা জাতির স্বাধীনতা হরণ করে নিয়ে গেল গোটা কয়েক বেনিয়া ইংরেজ অথচ তাদের টনক নড়লো না। টনক যখন নড়লো, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাদের আর তখন কিছুই করার ছিল না। সিরাজউদ্দৌলা কখনও তার দেশের প্রজাদের সাথে কোনো অবস্থাতেই বিশ্বাস ঘাতকতা করেননি। কখনও স্বেচ্ছায় স্বদেশকে বিকিয়ে দেননি। পলাশীর প্রান্তরে মর্মান্তিক নাট্যমঞ্চে এক মাত্র তিনি ছিলেন মূল নায়ক। সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাঙলার স্বাধীনতার শেষ প্রতীক।
প্রভাবশালী বাঙালিদের স্বার্থপরতা, ঔপনিবেশিক আধিপত্যবাদ, বাংলার দক্ষিণ এশিয়ার ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক ঔপনিবেশিক প্রভূত্ব প্রতিষ্ঠার দুর্বার আকাক্সা। প্রশাসনিক কাজে নবাবের সে সময়ে হিন্দু আধিপত্যের বিস্তার লাভ। নবাবের পরিবারের কিছু কিছু ঘোর শত্রু বিভীষণের ক্ষমতার লোভ এবং মুশির্দকুলী খাঁর এই উদার দাক্ষিণ্যে বেড়ে ওঠা কুলিন হিন্দু রাজা, মহারাজা, সভাসদ, সামরিক প্রশাসক, রাজত্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের মুসলিম বিদ্বেষই পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পতন, পরাজিত এবং নিহত হওয়ার অন্যতম মূল কারণ।
২৩ জুন আমাদের জাতীয় জীবনে দুরপনেয় কলঙ্কের দিন, তেমনি তা এক শিক্ষণীয় দিবসও বটে। বাংলার ইতিহাসে এই পলাশী অধ্যায় যেমন ন্যক্কারজনক হৃদয়বিদারক ঘটনা, তেমনি আমাদের জাতীয় জীবনে এর মাশুল দিতে হয়েছে দীর্ঘ ২০০ বছরের গোলামির জিঞ্জির। ২৩ জুনের পলাশীর ইতিহাস, কিছু বিশ্বাসঘাতক চক্রান্তকারীর যোগসাজশে দেশের স্বাধীনতা বিদেশী বেনিয়াদের হাতে তুলে দেয়ার ইতিহাস। ২৩ জুনের ইতিহাস প্রকৃত সোনার বাঙালাকে শ্মশানে পরিণত করার ইতিহাস।
উপসংহারে একটা কথাই বলতে হয়, স্বাধীনতা দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। স্বদেশ প্রেম দেশের সবচেয়ে বড় আমানত। এই সত্যটা জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিটি নাগরিককে আমাদের সর্বদাই মনে রাখতে হবে। বস্তুত বাংলার মুসিলম স্বার্থবিরোধী যেকোনো চক্রান্তের পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ ও মর্মান্তিক হতে পারে চোখ, কান খোলা রাখলে যে কেউ দূর এবং নিকট ইতিহাস থেকে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ পেতে পারেন। বস্তুত ইতিহাস কোনো ষড়যন্ত্রকারীকেই ক্ষমা করে না। পলাশী পরবর্তী ঘটনাবলি তার আরেক জ্বলন্ত প্রমাণ।
প্রতি বছর ২৩ জুন আমাদের এই সতর্কবাণী শুনিয়ে যায় দেশের ভেতরের শত্রুরা বাইরের শত্রুর চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। আমরা কি ২৩ জুনের বিপর্যয় থেকে আদৌ কোনো শিক্ষা নিতে পেরেছি কি? ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো এই যে, ইতিহাস থেকে কেউ কিছু শেখে না।


আরো সংবাদ



premium cement