২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাছ শিকার করতে গিয়ে নিজেই মাছের শিকারে পরিণত

- ছবি : সংগৃহীত

সমুদ্রে বন্ধুর সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মুহম্মদ ইদুল, তখন একটি মাছ পানি থেকে লাফিয়ে উঠে তার ঘাড়ে আঘাত করে। সমুদ্র থেকে লাফিয়ে উঠে একটি মাছ তার ঘাড় ছিদ্র করে ফেলে এবং সেই অবস্থাতেই তিনি সাঁতরে তীরে পৌঁছে হাসপাতালের দিকে ছোটেন - এভাবেই নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অদ্ভূত ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার এক কিশোর।

সূচের মত তীক্ষ্ণ মাথার একটি 'নীডলফিশ' সমুদ্র থেকে লাফিয়ে উঠে ১৬ বছর বয়সী মুহম্মদ ইদুলের ঘাড় এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফেলে এবং সেই মাছের ধাক্কায় নৌকা থেকে পানিতে পড়ে যান তিনি।

জীবন বাঁচাতে ঐ অবস্থাতেই তীরের দিকে সাঁতার শুরু করেন এবং তীরে পৌঁছে হাসপাতালের দিকে দৌড় শুরু করেন।

মুহম্মদ ইদুল যে হাসিখুশি অবস্থায় বেঁচে আছেন এবং সবাইকে তার গল্প বলতে পারছেন, সেই কৃতিত্বের অধিকাংশই তার উপস্থিত বুদ্ধি সম্পন্ন বন্ধু ও হাসপাতালের যত্নশীল চিকৎসকদের পাওনা।

'ছুরিকাঘাত'
ঘাড়ে মাছ আটকে থাকার ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর মুহম্মদ ইদুল বেশ তারকাখ্যাতি পেয়েছেন। ঐ ঘটনার পাঁচদিন পর মুহম্মদ ইদুল জানান বন্ধু সার্দির সাথে রাতে মাছ ধরতে সমুদ্রে যাওয়ার পর ঘটনা ঘটে।

"সার্দি'র নৌকা আগে রওনা করে, তারপর আরেকটি নৌকায় যাই আমি। সৈকত থেকে প্রায় আধা মাইল দূরে যাওয়ার পর সার্দি নৌকার ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলে দেয়।"

"সেসময় হঠাৎ একটি নীডলফিশ পানি থেকে লাফিয়ে উঠে আমার ঘাড়ে তার সুঁচালো ঠোঁট ঢুকিয়ে দেয়।"

সাথে সাথেই অন্ধকার পানিতে পড়ে যান মুহম্মদ। মাছটি তখনও তার ঘাড়ে আটকে রয়েছে। মাছের সরু, লম্বা ও তীক্ষ্ণ মুখাগ্র তার চোয়ালের নিচের দিক দিয়ে ঢুকে মাথার পেছনের ভাগ দিয়ে বের হয়ে ছিল তখন।

সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, মাছটি সে অবস্থাতেও পানির মধ্যে পালানোর জন্য ছটফট করছিল এবং মুহম্মদ ইদুল তার ঘাড়ের ভেতর অনুভব করতে পারছিলেন মাছের ছটফটানি। মুহম্মদ মাছটি শক্ত করে ধরে রাখেন। তার বন্ধু সার্দির কাছে সাহায্য চান তিনি।

"সার্দি আমাকে বলে মাছটিকে যেন ঘাড় থেকে বের না করার চেষ্টা করি, তাহলে রক্তপাত বেড়ে যাবে", বলেন মুহম্মদ ইদুল।

ইদুল ও তার বন্ধু সার্দি দুইজনই তখন সাঁতরে তীরে চলে আসেন। পুরোটা সময় মুহম্মদ ইদুল প্রায় আড়াই ফিট লম্বা মাছটি হাত দিয়ে ধরে রাখেন যেন সেটি বেশি নাড়াচাড়া করতে না পারে। মাছটি তখনও তার ঘাড়ে বিদ্ধ ছিল।

মুহম্মদ ইদুলের বাবা সাহারউদ্দিন দ্রুত বাউ-বাউয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলেকে। হাসপাতালে যেতে তাদের গ্রাম দক্ষিণ বুটন থেকে প্রায় দেড় ঘন্টা লাগে।

কিন্তু ঐ হাসপাতালের ডাক্তাররা মাছটি কাটতে পারলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় মুহম্মদ ইদুলের ঘাড় থেকে মাছের ঠোঁট বের করতে পারেনি, যার ফলে ঠোঁটটি আটকে ছিল মুহম্মদ ইদুলের ঘাড়েই।

ঘাড় থেকে মাছের ঠোঁটটি বের করতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ সুলাওয়েসির রাজধানী মাকাসারের কেন্দ্রীয় হাসপাতালে। সেই আধুনিক ওয়াহিদিন সুদিরোহুসোদো হাসপাতালের কর্মীরাও এই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে।

হাসপাতালের পরিচালক খালিদ সালেহ জানান এ ধরণের ঘটনা এই প্রথমবারের মত দেখেছেন তারা। মাছের ঠোঁটটি ইদুলের ঘাড় থেকে বের করতে পাঁচজন বিশেষজ্ঞের এক ঘন্টাব্যাপী অস্তপচার করতে হয়েছে।

পাঁচদিন বাদে মুহম্মদ ইদুলের সাথে যখন কথা হয় তখন তিনি যথেষ্ট সুস্থ। তার ঘাড়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা। তিনি তখনও ঘাড় পুরোপুরি ঘুরাতে পারছেন না, তবে তার মুখে হাসি।

হাসপাতালের পরিচালক খালিদ সালেহ জানান, "তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাকে কয়েকদিনের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হতে পারে। তবে সে এখনই তার গ্রামে ফিরে যেতে পারবে না, কারণ তার আরো বেশকিছু পরীক্ষা করতে হবে।"

তবে এরকম অদ্ভূত ঘটনা ঘটলেও মুহম্মদ ইদুলের মাছ ধরার শখ কিন্তু আগের মতই রয়েছে।

"পরেরবার থেকে আমার আরেকটু সতর্ক থাকতে হবে। নীডলফিশ আলো সহ্য করতে পারে না। তাই আলো জালার সাথে সাথেই সেটি লাফিয়ে পানির ওপর উঠে আসে", ব্যাখ্যা করেন মুহম্মদ ইদুল। বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধান বিরোধী নয় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুরের ইন্তেকাল থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের

সকল