১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনা ভাইরাস প্রয়োজন সতর্কতা

-

নভেল করোনা ভাইরাস কী জিনিস সেটা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ভাইরাসটির আতঙ্কে ভুগছে সারা বিশ্ব। আর এই সপ্তাহে তো সবার আতঙ্ক আকাশ ছুঁয়েছে। এত বেশি আতঙ্কিত না হয়ে বরং আরেকবার আমরা ভালোভাবে জেনে নিই কিভাবে এই রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে।
ডব্লিউএইচও বা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সাধারণ জনগণের সুরক্ষার জন্য হাত, শ্বাসতন্ত্র ও খাদ্যাভ্যাসের পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত বেশ কিছু পরামর্শ বা নির্দেশনা দিয়েছে। যার মধ্যে আছেÑ
ষ অ্যালকোহল বেসড হ্যান্ডওয়াশ, সাবান বা হ্যান্ডরাব/হ্যান্ড-স্যানিটাইজার দিয়ে বারবার হাত পরিষ্কার করুন।
ষ হাত দেখতে নোংরা মনে হলে অবশ্যই হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে পানির ট্যাপ ছেড়ে হাত ধুতে হবে। জমিয়ে রাখা পানিতে হাত ধোয়া যাবে না; কোনো পাত্রে হাত ডুবিয়ে হাত ধোয়া যাবে না।
ষ হাত যদি অপরিষ্কার মনে না হয়, তবুও কিছুক্ষণ পরপর হ্যান্ড-স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন।
ষ নিজের চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করতে হলে অবশ্যই হাত ভালোভাবে ধুয়ে সাথে সাথে স্পর্শ করতে হবে। অপরিষ্কার হাতে ভুলেও এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্পর্শ করা যাবে না।
ষ যে কোনো রোগে অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার পরই হাত ভালোভাবে ধুতে হবে।
ষ খাবার তৈরি করার আগে, রান্না করার সময় ও রান্নার পর হাত ধুতে হবে। কোনো পোষা প্রাণীকে হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ষ হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্যু পেপার দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকুন। তারপর সাথে সাথে টিস্যু পেপারটি ফেলে দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। হাতের কাছে টিস্যু পেপার বা রুমাল না থাকলে কনুই বাঁকা করে সেখানে নাক ও মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিন।
ষ রাস্তাঘাটে থুথু বা কফ ফেলা থেকে একদমই বিরত থাকুন।
ষ মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক দিয়ে মুখ, নাক ও থুতনি সম্পূর্ণ ঢেকে রাখুন। মাস্ক পরার পর সেটি স্পর্শ করবেন না। একটি মাস্ক এক দিনের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। মাস্ক খোলার সময় খুলতে হবে দুই কানের কাছ থেকে এবং সাথে সাথে মুখ থেকে দূরে সরিয়ে ফেলতে হবে। থুতনির কাছে নামিয়ে ঝুলিয়ে রাখা যাবে না।
ষ প্লেন, বাস, ট্রেন বা যেকোনো যানবাহনে চড়লে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন যার জ্বর বা কাশি হয়েছে। অফিস, রেস্তোরাঁ বা অন্য যেকোনো জায়গাতেও এই নিয়মটি মেনে চলুন।
ষ লম্বা জার্নিতে একটু পরপর হ্যান্ড-স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করুন।
ষ যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কারো জ্বর, কাশি হয়ে থাকে, সাথে নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা অনুভব করে থাকেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এবং ডাক্তারকে গত তিন সপ্তাহে কোথায় কোথায় গিয়েছেন সেই সম্পর্কেও তথ্য দিন।
ষ জ্বর ও কাশি থাকলে জার্নি করবেন না।
ষ যদি এমন কোনো এলাকায় বসবাস করে থাকেন যেখানে নভেল করোনা ভাইরাসের কোনো রোগী পাওয়া গেছে, সেই এলাকার কাঁচাবাজারে গেলে কোনো প্রাণী স্পর্শ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। এমনকি মাছ-গোশত বা জীবিত কোনো জীবজন্তু রাখা হয় এমন কাউন্টারগুলোও স্পর্শ করবেন না।
ষ মাছ-গোশত ভালোভাবে সম্পূর্ণরূপে রান্না করে খেতে হবে। কাঁচা বা আধাসেদ্ধ মাছ- গোশত বা দুধ খাওয়া সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে হবে। যেসব এলাকায় নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকায়ও মাছ-গোশত খাওয়া যাবে তবে নিশ্চিত করতে হবে যে খাবারটি পুরোপুরি সেদ্ধ হয়েছে। আর কাঁচা মাছ-গোশত স্পর্শ করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন।
ষ কাঁচা মাছ-গোশত কখনো রান্না করা খাবারের সাথে একত্রে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। একান্তই প্রয়োজন হলে টাইট ঢাকনাযুক্ত বাক্সে ভরে বাক্সটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে তবেই রাখতে পারেন।
ষ অসুস্থ কোনো প্রাণী যেমন অসুস্থ গরু, খাসি বা মুরগি খাওয়া যাবে না।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত সব দেশের
জন্য বিশেষ সতর্কতা :
ষ বাজারে গেলে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাছ-গোশত স্পর্শ করার পরপরই হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ষ পচা গোশত, যেকোনো বর্জ্য পদার্থ, ডাস্টবিন ও তরল ময়লা ফেলার স্থান থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ষ অসুস্থ কোনো প্রাণীর সংস্পর্শে আসা যাবে না।
ষ রাস্তাঘাটে মালিকবিহীন যেসব কুকুর বিড়াল থাকে সেগুলো থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ষ যারা বাজার বা সুপার মার্কেটে কাজ করেন তারা অবশ্যই মাছ-গোশত নিয়ে কাজ করার সময় এপ্রোন, মাস্ক ও গ্লাভস পরুন। প্রতিদিন কাজ শেষে তা ধুয়ে কাজের জায়গাতেই শুকাতে দিয়ে তারপর বাসায় যান। এই গ্লাভস, এপ্রোন বা মাস্ক কখনো বাড়িতে নিয়ে যাবেন না। এতে করে আপনার পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। মাছ-গোশত স্পর্শ করার পরপরই হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। কাজের জায়গা ও কাজের সরঞ্জাম দুটোই প্রতিদিন একবার সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।

 


আরো সংবাদ



premium cement