২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হলুদ বরণ

-

বিয়ের আয়োজনের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদের দিনই উৎসবের রূপ নেয় বিয়েবাড়ি। বিয়ের উৎসবে মেতে ওঠে সবাই। আগের দিনের দাদী-নানীদের গান বদলে এখন ডিজে গানে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে পুরো বাড়ি, যেন উৎসব থেকে কেউ পিছিয়ে না থাকে। কতই না তোড়জোড় আর হৈ-হুল্লোড় থাকে এ হলুদবরণ উৎসব ঘিরে। বর ও কনের বাড়ির আত্মীয়স্বজনের আসা শুরু হয় মূলত গায়ে হলুদের দিন থেকেই।
হলুদে বর ও কনেকে হলুদবরণ করে সাজানোর জন্য সাজসজ্জার উপকরণ ডালা-কুলার মধ্যে সাজিয়ে সুন্দর করে পাঠানো হয়। সাথে থাকে পান-সুপারি-মিষ্টি । গায়ে হলুদের উৎসব যেন রঙ আর ছন্দের মেলা। হলুদসন্ধ্যায় কনের সাজটা হওয়া চাই মানানসই। এক সময় হাতে বাটা মেহেদি ও হলুদ গায়ে মাখিয়ে উৎসবটি করা হতো। আজকাল অনেক বিয়েতে নামীদামি শিল্পী দিয়ে নাচ-গানের আয়োজন করা হয়। গায়ে হলুদের মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে রঙের ব্যবহারকে অনেকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। গায়ে হলুদের ডালা , কুলা, গয়না-সেট, জুতা, পাঞ্জাবি, প্রসাধনী, ফুল ইত্যাদিসহ আরো অনেক আয়োজন করা হয়ে থাকে।
ডালার ভেতর দেয়া হয় মিষ্টি, পান-সুপারিসহ অন্যান্য জিনিস। আর কুলার ভেতরে দেয়া হয় বর ও কনের হলুদের প্রয়োজনীয় সাজসজ্জার সামগ্রী। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ডালা-কুলা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছাতাবরণ ডালা-কুলা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাকে আরো আর্কষীয় করে তুলবে। ছাতাবরণ ডালা-কুলার দাম পড়বে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। নরমাল কুলার দাম ১৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। রাখির দাম ১০০ টাকা থেকে এক হজার ২০০ টাকার মধ্যে। কনের গয়না-সেটের দাম পড়বে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্র্র্যন্ত। পাঞ্জাবি ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা। হলুদের জুতা ২০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। পাগড়ি ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। শেরোয়ানি ৮ হাজার থেকে ৪৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। বরের হলুদের কেনাকাটায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো জিনিস বাদ না পড়ে, সেজন্য বিয়ের সামগ্রীর দোকানগুলোতে আগে থেকেই একটি তালিকা তৈরি করা থাকে । ক্রেতা সেই তালিকা থেকে পছন্দ করে থাকেন হলুদের সরঞ্জাম। রাজধানী ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের নিঝুম সাজ ঘরের বিপণন কর্মী মো: মিরন হোসেন জানান, হলুদের প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম আমাদের এখানে রয়েছে। এমনকি বিয়ে সংক্রান্ত সব কিছুই সরবরাহ করে থাকি। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী একেকজন একেক রকম জিনিস নিয়ে থাকেন। এ জন্য চাহিদা অনুযায়ী দামেরও ভিন্নতা রয়েছে।
রাজধানীর গাউছিয়ার বাঁধন সাজ ঘরের একজন বিক্রেতা জানান, হলুদের বর-কনের আলাদা সরঞ্জাম পাওয়া যায়। কোনো ক্রেতা সব আইটেম নিয়ে থাকেন, আবার কেউ কিছু আইটেম বাদ দিয়েও নিয়ে থাকেন। তবে সময়ের সাথে প্রযুক্তির পরিবর্তনের কথা জানান ব্যবসায়ীরা। গায়ে হলুদ যেহেতু বিয়ের আগের সাজ তাই বিয়ের সাজ থেকে ভিন্নতা রয়েছে। গায়ে হলুদে বরের জন্য সবচেয়ে সেরা সাজ হচ্ছে পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবি হতে পারে যেকোনো রঙের। তবে পাঞ্জাবির রঙ উজ্জ্বল হওয়াই ভালো।

হলুদের মঞ্চ : হলুদের মঞ্চ সাধারণত ফুল দিয়েই করা হয়। গাঁদা ও গোলাপ ফুলকে প্রাধান্য দিয়ে করা হয় হলুদের মঞ্চ। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, ক্যারনসহ অন্যান্য ফুলও ব্যবহার করা হয়।
পাওয়া যাবে : গায়ে হদুলের যাবতীয় সরঞ্জাম রাজধানীর সব জায়গাতেই পাওয়া যাবে। তবে হদুলের বিপুল সম্ভার রয়েছে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন, গাউছিয়া, বসুন্ধরা সিটি, ওয়ারী ও রাজধানী সুপার মার্কেটে। এ ছাড়া, চকবাজারেও পাওয়া যাবে গায়ে হলুদের সরঞ্জাম।


আরো সংবাদ



premium cement