২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিজয়ের চেতনায় রঙিন : রঙের ঝলক

-

ডিসেম্বর বাঙালির স্বাধীনতা ও বিজয়ের মাস। এ মাসেই আমরা পেয়েছি নিজের দেশ, ভাষা এবং সার্বভৌমত্ব। এ মাসের গুরুত্ব বাঙালির জীবনে অনেক বেশি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের এ দিনটি নানাভাবে উদযাপন করবে বাঙালি জাতি। তবে বিজয় দিবস উদযাপনে প্রথম যে বিষয়টি এ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলোÑ পোশাক। জাতীয় চেতনাভিত্তিক পোশাক পরে বাঙালি দেশের প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে। স্বদেশপ্রেমের এ চেতনা থেকে ফ্যাশন ডিজাইনাররাও ফ্যাশনে নিয়ে আসেন বিজয় ও দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ ঘটায় এমন পোশাক।
ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে দেখা গেল বিজয় দিবসের বিশাল কালেকশন এসেছে বিজয়ের চেতনাকে উজ্জীবিত করার প্রয়াস হিসেবে। রঙ হিসেবে জাতীয় পতাকার লাল-সবুজই প্রাধান্য পেয়েছে। তবে পাশাপাশি লাল ও সবুজের বিভিন্ন শেড, কমলা, হলুদÑ এসব রঙের ব্যবহারও দেখা গেছে। ফ্যাশন হাউজ সাদাকালো তাদের রঙের থিমকে প্রাধান্য দিয়ে সাদাকালোর মাধ্যমেই বিজয় দিবসের চেতনাকে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস পেয়েছে।
কাপড় হিসেবে সুতি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে পাশাপাশি খাদি, তাঁত, টাঙ্গাইলের তাঁত, মোটা কটন, এনডিÑ এসব কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ও পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাকে। শীতকালকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে নানা ধরনের শাল। এসব শালেও সবুজ ও লাল রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি থাকছে চেতনাভিত্তিক নানা মোটিভ। অর্থাৎ ফ্যাশন ডিজাইনাররা এ সব পোশাকের মাধ্যমে আমাদের অহঙ্কার, আমাদের বিজয় দিবসের চেতনাকে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন।
পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব উইভিংয়ে করা ডিজাইন, টাই অ্যান্ড ডাই, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, অ্যাপলিক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম। কারোর পোশাকে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মানচিত্র, কারোর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় পতাকা, কোনোটায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা ছবি, লেখা, কবিতার লাইন ও জাতীয় ফুল। অর্থাৎ বিজয় উৎসবের বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে বিজয় দিবসের পোশাকগুলো।
ফ্যাশন হাউজ অঞ্জন’স -এর ফ্যাশন ডিজাইনার শাহীন আহমেদ তাদের বিজয় দিবসের আয়োজন প্রসঙ্গে বলেন, দিবসভিত্তিক এসব আয়োজন করতে খুবই ভালো লাগে। মনে হয়, দেশের সব শ্রেণীর মানুষের কাছে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বার্তা। এ ধরনের কাজ আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করে। রঙ হিসেবে লাল-সবুজ প্রাধান্য পেয়েছে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সব বয়সী মানুষের দিকে লক্ষ রেখে পোশাক তৈরি করা হয়েছে, যেন সবাই বিজয় দিবসে নিজেদের রাঙিয়ে নিতে পারেন স্বদেশপ্রেমের চেতনায়।
ফ্যাশন ডিজাইনারদের এই প্রচেষ্টায় সাড়া দিতে ভোলেন না সচেতন মানুষ। মহান বিজয় দিবস পালনে নতুনভাবে সাজেন বাঙালি। সাজিয়ে তোলেন বাংলাদেশ। সারা দেশ ছেয়ে যায় লাল-সবুজ পতাকায়। আর একই অনুভূতি বুকে ধারণ করে পোশাকের মাধ্যমে বিজয়ের গৌরব তুলে ধরেন বাঙালি।
রঙ বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম শীর্ষ হাউজ রঙ বাংলাদেশ বিজয়ের উদযাপনকে অন্য মাত্রা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস। স্বাধীনতার গান ও বাংলাদেশের পতাকার বিষয়কে এবার ধরা হয়েছে কাপড়ের ক্যানভাসে। কেবল বড়দের নয়, প্রতিটি উপলক্ষে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে বলেই শিশুদের সংগ্রহও হয় বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।
পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। এর মধ্যে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, এমব্র্রয়ডারি, হাতের কাজ, গ্লাসওয়ার্ক ইত্যাদি।
মেয়েদের পোশাকে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, সিঙ্গেল কামিজ, কুর্তি, ওড়না, ব্লাউজ, আনস্টিচড থ্রি-পিস। ছেলেদের পোশাকে রয়েছে পাঞ্জাবি, কাতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট। এ ছাড়া ছোটদের জন্য সিঙ্গেল কামিজ, ফ্রক, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, কাতুয়া এবং কাপল ও ফ্যামিলি ড্রেস পাবেন।
ফ্যাশন হাউজে বিজয় দিবসের আয়োজন
দেশীদশ
দেশীদশের বিজয় দিবস উদযাপনের প্রতিপাদ্য লাল-সবুজে দেশীদশ। তাই প্রতিবারের মতো এবারের বিজয় দিবসেও দেশীদশ সেজেছে জ্বলজ্বলে লাল-সবুজে। যেন সবুজের বুকে লাল সূর্যটা ঝলমল উচ্ছল প্রাণের বন্যা।
সমকালীন ফ্যাশন চলমানতাকে সামনে রেখে দেশীদশে একাধারে নিপুন, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জনস, রঙবাংলাদেশ, বাংলারমেলা, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, নগরদোলা, সৃষ্টিসহ ১০টি ফ্যাশন হাউজ সেজেছে লাল-সূর্যের সবুজ ছায়ায়।
মেঘ
ফ্যাশন হাউজ মেঘ বিজয় দিবস উপলক্ষে এনেছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, মেয়েদের কামিজ, শিশুদের ফতুয়া, ফ্রক ও টি-শার্ট। লাল-সবুজ রঙে আরামদায়ক কাপড়ে এসব পোশাকের নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আমেজ।


আরো সংবাদ



premium cement