২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সোনামণির ঈদ : রঙের ঝলক

-

ঈদের খুশি পূর্ণতা পায় যেন শিশুদের অনাবিল আনন্দের মধ্য দিয়ে। প্রতিটি শিশুই চায় নতুন পোশাক। ঈদ আসার বেশ আগে থেকেই ঈদের পোশাক ঘিরে থাকে শিশুদের নানান জল্পনাকল্পনা। আর তাই প্রত্যেক অভিভাবকও চান তার সন্তানকে সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুন্দর পোশাকটি কিনে দিতে। বড়দের পোশাক কেনা হোক বা না হোক, ছোটদের পোশাক কেনা চাই-ই চাই।
প্রতি বছর ঈদের সময় ছোটদের পোশাকের কথা মাথায় রেখেই ফ্যাশন হাউজগুলোর ঈদ আয়োজনে থাকে ভিন্নতা। এই ঈদে দেশী ফ্যাশন হাউজগুলো ছোটদের জন্য এনেছে রঙ-বেরঙের নতুন ডিজাইনের বাহারি পোশাক। চলতি বছর বড়দের পোশাকের ট্রেন্ডেই চলছে ছোটদের ফ্যাশন। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আবহাওয়া। এ মওসুমে এই রোদ তো এই বৃষ্টি। আর সাথে গরম। তাই শিশুদের পোশাক হতে হবে অবশ্যই আরামদায়ক। রঙের খেলা, নকশা আর জমকালো ভাবের পাশাপাশি পোশাকগুলো গরমের উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে সুতি, তাঁত, মসলিন ও খাদির প্রাধান্য। আজকাল বড়দের পোশাকের মতো শিশুদের পোশাকেও বিভিন্ন মাধ্যমে নকশা করা হচ্ছে। সাধারণভাবেই শিশুদের পছন্দ উজ্জ্বল রঙ। এবার উৎসবনির্ভর পোশাকে রঙ দিয়ে কল্পনার বাহার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া একক রঙও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যেমনÑ লালের ওপর সাদা সুতার কাজ, সাদার ওপর সাদা সুতার কাজ ইত্যাদি। হালকা ও গাঢ় রঙের সুতা ব্যবহার করে নকশা করা হয়েছে। সব কিছুর সাথেই উজ্জ্বল রঙের ট্রেন্ড বা ধারা বজায় রয়েছে। পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নকশা। স্প্রে, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্টÑ এগুলো মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। এ ছাড়া, রয়েছে এপলিক, এমব্রয়ডারি, কারচুপি ও হাতের কাজ। আরামের কথা মাথায় রেখে শিশুদের পোশাক তৈরিতে বেছে নেয়া হয়েছে টাঙ্গাইল, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ, মিরপুর ও কুমিল্লার তাঁতের কাপড়। বুননেও আনা হয়েছে নতুনত্ব।
মেয়েদের আনারকলি, একটু ঘের দেয়া লম্বা কামিজ যেমন চলবে, তেমনি ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে এ লাইন কাটের ব্যবহার বেশি এবার। শিশুরা সারা দিন জমকালো পোশাক পরে থাকতে পারে না। সে জন্য সুতি, ডেনিম বা জিনসের প্যান্ট, খাটো হাতার শার্ট, ফতুয়া ও টপস অনায়াসে পরতে পারে। নবজাতক থেকে শুরু করে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের পোশাকও এনেছে ফ্যাশন হাউজগুলো। মেয়েশিশুদের জন্য পার্টি ফ্রক, ঘাগরা, চোলি, টিউনিক ক্যাপ্রি ও লেগিংস। পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজও। কাতান, টিসু, মসলিন ও সার্টিনের ব্যবহার ভালো লাগবে পার্টি পোশাকে। এ ছাড়া, সুতির কাপড় তো রয়েছেই। আর এ লাইন কাটের চল রয়েছে এবার। নকশায় প্রাধান্য পাবে কারচুপি, এমব্রয়ডারিসহ হাতের কাজ। ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য রয়েছে থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট।
এ বছরে শিশুদের ঈদের ফ্যাশন ট্রেন্ড নিয়ে অঞ্জন’স-এর কর্ণধার শাহীন আহমেদ বলেন, এবারের ঈদে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক পোশাক। এ জন্য বেশির ভাগ পোশাক সুতির। এ ছাড়া লিনেন, সিল্ক, ভয়েল, বেক্সি ভয়েল ও জর্জেটের কালেকশনও রয়েছে। আসলে ছোটরা সব সময় বড়দের সাজসজ্জা লক্ষ করে এবং মা-বাবার পোশাকের সাথে মিলিয়ে তারাও পোশাক পরতে চায়। তাই পরিবারের সবার জন্য একই থিম বা ডিজাইনের পোশাকও তৈরি করা হয়েছে। আবার রঙের ক্ষেত্রেও একই রঙের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার সৌমিক দাস বলেন, ছোটদের ঈদের পোশাকে যেমন উৎসবের ছোঁয়া চাই, তেমনি চাই আরামও। এ বছর ঈদের সময় বৃষ্টি ও গরম আবহাওয়া থাকবে। তাই অতিরিক্ত আর্দ্রতার কথা মাথায় রেখে শিশুদের পোশাকের কাটিং, প্যাটার্ন ও ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবি ও মেয়েদের থ্রিপিসে হাতা ছোট-বড়, একটু ঢিলেঢালা ধরনের পোশাক তৈরি করা হয়েছে। এক কথায় বলা যায়, এবারের ঈদে শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক পোশাক। মেয়েশিশুদের জন্য এবার ঈদ ফ্যাশনে রয়েছে গাউন, ফ্লোর টাচ, কটি, স্কার্ট, টপস, লং কামিজ, ঘাগরা, চোলি, থ্রিপিস, প্রিন্সেস ফ্রকসহ বিভিন্ন পোশাক। মেয়েশিশুদের পোশাকের মধ্যে থ্রিপিসই বেশি। ছেলেশিশুদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি-পায়জামা, শর্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, শার্ট এবং ফতুয়ার সাথে যোগ হয়েছে ভিন্ন কাটের কটি। পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে সাদার চেয়ে রঙিন পাঞ্জাবি বেশি পছন্দ ছোটদের। ব্লক ও টাইডাই করা পাঞ্জাবির পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের এমব্রয়ডারি করা পাঞ্জাবি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement