২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মাটির কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে মানুষ

মাটির কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে মানুষ - সংগৃহীত

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ মাটিতে গর্ত খুঁড়েছে, পানি তুলেছে, এমনকি ভূগর্ভস্থ শহরও নির্মাণ করেছে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠের ঠিক কতটা নীচে নামতে পেরেছে মানুষ? জানলে চমকে যাবেন।

প্যারিসের ক্যাটাকম্ব সংগ্রহশালাটি মূল শহরের মাটির তলায় একটি সুড়ঙ্গের আকারে গড়ে তোলা। প্রায় ষাট লক্ষ মানব কঙ্কাল দিয়ে এটি গড়ে তোলা হয়েছে মাটির ৬৫ ফুট গভীরে। তুরস্কের প্রাচীন শহর দেরিনকুইউ মাটি থেকে ২৭৯ ফুট গভীরে অবস্থিত।

পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রিনব্রায়ার ব্যাঙ্কার মাটি থেকে প্রায় ৭২০ ফুট গভীরে অবস্থিত। আপৎকালীন সময়ে কংগ্রেসকে সুরক্ষিত রাখতেই এটি তৈরি।

উডিংডিন ওয়েল প্রায় ১হাজার ২৮৫ ফুট গভীরে অবস্থিত। এটি হ্যান্ড-মেড ওয়েল। ইংল্যান্ডের ব্রাইটনে ১৮৫৮-১৮৬২ সালের মধ্যে কোনও রকম আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই এটি খনন করা হয়েছিল। একটা গোটা আইফেল টাওয়ার প্রবেশ করতে পারবে এর মধ্যে।

চিলির সান খোসের স্বর্ণখনি। আস্ত বুর্জ খলিফা ধরে যাবে এই খনির মধ্যে। প্রায় ২ হাজার ৭২২ ফুট গভীর এই খনি। ২০১০ সালে এই সোনার খনির দুর্ঘটনায় ৩৩ জন কর্মী ৬৯ দিন পর্যন্ত আটকা পড়েছিলেন এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাদের সফল ভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে এটি মানুষের খনন করা গভীরতম খনি নয়।

বিশ্বের গভীরতম প্রাকৃতিক গুহা জর্জিয়ার ভেরিওভকিনা গুহা, জর্জিয়ার ক্রুবেরা গুহা দ্বিতীয় গভীরতম গুহা। ভেরিওভকিনা গুহা প্রায় ৭ হাজার ২৩০ ফুট আর ক্রুবেরা ৭ হাজার ২০৮ ফুট গভীরে অবস্থিত। আধুনিক কোনও যন্ত্রপাতি ছাড়াই ভেরিওভকিনায় নামা সম্ভব বলে দাবি করেছেন একাধিক অভিযাত্রী।

সুইজারল্যান্ডের গোথার্ড বেস টানেল সবচেয়ে গভীর রেলওয়ে সুড়ঙ্গ। মাটি থেকে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে অবস্থিত এটি।

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে গভীরতার নিরিখ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার পোনেং সোনার খনিটি সবচেয়ে গভীর খনি। মাটির প্রায় ৪ কিলোমিটার অর্থাত্ প্রায় ১৩ হাজার ফুট নীচে রয়েছে এটি।

সবচেয়ে গভীর তৈল খনি জেড-৪৪ চায়ভো ওয়েল। বর্তমানে এটির গভীরতা প্রায় ৪০ হাজার ফুট। পূর্ব রাশিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় এটি অবস্থিত।

সোভিয়েত ইউনিয়নের কোলা সুপারডিপ বোরহোল প্রকল্প। ১৯৭০ সাল থেকে খনন করা হচ্ছে এটি। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভূ-পৃষ্ঠের উপরের ত্বক তথা ক্রাস্ট ভেদ করে দ্বিতীয় স্তর ম্যান্টল পর্যন্ত পৌঁছানো। বর্তমানে এটিই পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে মানুষের তৈরি সবচেয়ে গভীর গর্ত। ৪০ হাজার ২৩০ ফুট গভীর পর্যন্ত এখনও প্রবেশ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।

আরো পড়ুন : হ্যাকিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে তুরস্ক
ডেইলি সাবাহ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:০৮
হ্যাকিং জিনিসটাকে সাধারণত নেতিবাচক বিষয় হিসেবেই দেখা হয়। অনুমতি ছাড়া অন্যের ওয়েবসাইট বা সাইবার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে তথ্য চুরি বা কোন অসুবিধা সৃষ্টি করাই সাধারণত হ্যাকিং হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই হ্যাকিংয়ের ওপরই এবার একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছে তুরস্ক। যেখানে হ্যাকাররা অংশ নিয়ে তুলে ধরবে তাদের দক্ষতা, জিতে নেবে বড় অংকের অর্থ পুরস্কার।

১৩০টির বেশি দেশের হ্যাকাররা মিলিত হবে ইস্তাম্বুলে, অংশ নেবে দক্ষতার প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায়। তুরস্ক প্রথমবারের মতো আয়োজন করতে যাচ্ছে মহাকাশ ও প্রযুক্তি বিষয়ক একটি উৎসবের। উৎসবটির নাম দেয়া হয়েছে ‘টেকনোফেস্ট ইস্তাম্বুল’। তুরস্কের ঐতিহাসিক নগরীর নতুন বিমানবন্দরে এ মাসের ২০-২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে উৎসবটি। এই উৎসবেরই একটি অংশ হবে ‘দ্য হ্যাকইস্তাম্বুল ২০১৮ ক্যাপচার দ্য ফ্ল্যাগ’ নামের একটি প্রতিযোগিতা, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর।


আয়োজকদের ওয়েবসাইটে জানা গেছে, ১৩২টি দেশের হাজারেরও বেশি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে তারা আশা করছেন। এছাড়া বিখ্যাত বিশেষজ্ঞরা বক্তৃতা করবেন প্রতিযোগীদের উদ্দেশ্যে। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের নামকরা বিশেষজ্ঞদের নিদের্শনায় সাইবার অ্যাটাক বিষয়ে হ্যাকারদের দক্ষতা উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে এই প্রতিযোগীতা।’ এছাড়া ইউরোপীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা(ইসিএসও) ও রোমানিয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কাছ থেকে তদারকি করবে প্রতিযোগীতার উপর।

প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হ্যাকার পাবেন ১৫ হাজার মার্কিন ডলার নগদ অর্থ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান প্রাপ্তদের জন্য যথাক্রমে থাকবে ১০ হাজার ও ৫ হাজার মার্কিন ডলার। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।

তুরস্কের টেকনোলজি টিম ফাউন্ডেশন ও ইস্তাম্বুল পৌরসভা যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য তুরস্কের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বিশ্বের সাথে তুলে ধরা।

উৎসবে মহাকাশ বিদ্যার বিভিন্ন কলাকৌশল প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া বিশ্বের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হবে সেমিনার, থাকবে প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের মিলনমেলা।

উৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিযোগিতা। মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে হবে এই প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের সর্বাধুনিক প্রযক্তিগত দক্ষতা ও আবিষ্কার তুলে ধরবে। বিভিন্ন বয়সের আগ্রহী লোকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষার্থ থেকে যে কোন বয়সের আগ্রহীরা অংশ নিতে পারবে।

আরো পড়ুন : ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে বিকিরণের ঝুঁকি বেশি?

স্মার্টফোন যত শক্তিশালী হয়ে উঠছে, বিকিরণের ক্ষতিকর প্রভাবের আশঙ্কাও তত বাড়ছে৷ ভবিষ্যতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিতে পারে৷ তবে বিজ্ঞানীরা এখনো বিকিরণের প্রভাব নিয়ে অকাট্য প্রমাণ পাননি৷

মোবাইল প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের আরও শক্তিশালী ফাইভ-জি অ্যান্টেনা৷ বর্তমান টাওয়ারেই তা বসানো সম্ভব৷ কিন্তু সেই অ্যান্টেনার কাছে থাকলে মানুষ আরো বিকিরণের শিকার হতে পারে৷ মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরো বাড়ছে৷ কেউ এমন বড় অ্যান্টেনার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছেন, কেউ ক্যান্সারের আশঙ্কা করছেন৷ অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে এখনো এ নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি৷ ফলে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে৷


উন্নত এই মোবাইল নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের আরো শক্তিশালী ইন্টারনেট সংযোগ দেবে, যা বর্তমানের তুলনায় ১০০ গুণ দ্রুত৷ দ্রুত সংযোগের কল্যাণে চালকহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে৷ শিল্প ক্ষেত্রে অনেক কাজ সহজ করতে বিশাল পরিমাণ তথ্যের আদানপ্রদান সম্ভব হবে৷ সেই লক্ষ্যে মোবাইল কোম্পানিগুলি টাওয়ারে বিকিরণের ঊর্দ্ধসীমা শিথিল করতে চায়৷

কিন্তু এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়ছে৷ সুইজারল্যান্ডের চিকিৎসক সংগঠনও রুখে দাঁড়িয়েছে৷ পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য কার্লস কিন্টো এত দ্রুত নিয়ম শিথিল করার বিপক্ষে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি, বিকিরণের প্রভাব রয়েছে৷ কিছু মানুষের উপর তার জৈব ও মানসিক প্রভাব পড়ে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে তা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না৷ শুধু কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ বিশাল মাত্রায় পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে৷''

বর্তমানে টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে ৭৯০ থেকে ২ দশমিক ৬ মেগাহার্তস পর্যন্ত ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগনাল প্রেরণ করা হয়৷ ভবিষ্যতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক যাতে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশাল পরিমাণ তথ্য প্রেরণ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে আরও উচ্চমাত্রার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করতে হবে৷ চলতি বছরের শেষে ৩ দশমিক ৬ মেগাহার্তস এবং পরে ৬ থেকে ১০০ মেগাহার্তস ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হবে৷

কিন্তু ৬ গিগাহার্তস ফ্রিকোয়েন্সির মাত্রা পেরিয়ে গেলে তরঙ্গ এত সঙ্কুচিত হয়ে যায়, যে তার প্রসারের মানের অবনতি ঘটে৷ বাড়িঘর, গাছপালা আরো বড় বাধা হয়ে ওঠে৷ তাই অ্যান্টেনার বিকিরণ বাড়াতে হবে৷

মার্টিন ব়্যোসলি মোবাইল সিগন্যালের বিকিরণ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টা৷ তার দফতরের একটি সেমিনারের ঘর মোবাইল টাওয়ারের খুব কাছেই অবস্থিত৷ ভবিষ্যতে সেই টাওয়ারও আরো বেশি মাত্রায় বিকিরণ করতে চলেছে৷ মার্টিন বলেন, ‘‘বর্তমানে যেটুকু জানা আছে, সেই অনুযায়ী স্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকি নেই৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কারণে একটা বলয় মেনে চলা হয়৷''

মোবাইল অ্যান্টেনা কতটা বিপজ্জনক এবং সেগুলি কি আমাদের রোগের জন্য দায়ী? এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা শুধু কিছু ইঙ্গিত পেয়েছেন৷ তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক মস্তিষ্কে টিউমারের কারণ হতে পারে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি৷ ফাইভ-জি নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে৷ কারণ আরও উচ্চ মাত্রার ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষেত্রে তরঙ্গ আরও ছোট হয়ে যায়৷ ফলে ত্বকই তা শুষে নেয়৷ অন্যদিকে বর্তমান তরঙ্গ শরীরে মধ্যে প্রবেশ করে৷ কার্লস কিন্টো বলেন, ‘‘ত্বক সেটি অন্যভাবে শুষে নেয়৷ ফলে অন্য ধরনের ক্ষতি হতে পারে৷ ত্বকের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকলেও এখনো নিশ্চিতভাবে তা বলা যায় না৷''

মোবাইল বিকিরণ বিশেষজ্ঞ মার্টিন ব়্যোসলি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে এখনো কোনো ভালো গবেষণা হয়নি৷ তাই দুশ্চিন্তার পক্ষে বা বিপক্ষে নানা কারণ রয়েছে৷ আরও ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে৷

মার্টিন মনে করেন, অ্যান্টেনা নয় – বরং আমাদের স্মার্টফোনই সবচেয়ে বড় ঝুঁকি৷ নিজের দপ্তরে তিনি ভালো সিগনাল থাকলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টেলিফোন করেন৷ তাঁর পরিমাপ অনুযায়ী বিকিরণের মাত্রা কম৷ অন্যদিকে যে ফোনে সিগন্যাল খারাপ, তা অনেক বেশি বিকিরণ করে৷ তিনি বলেন, ‘‘খারাপ সিগনাল থাকলে বিকিরণের মাত্রা সর্বোচ্চ হয়ে ওঠে৷ সাধারণত আমাদের আশপাশের ডিভাইসই ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বিকিরণের জন্য দায়ী৷''

অর্থাৎ কেউ যদি বিকিরণ প্রতিরোধ করতে চায়, তার হাতেই সেই উপায় রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement