১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

আজানের মধুর আওয়াজ শুনতে ভিড় অমুসলিমদের

আজানের মধুর আওয়াজ শুনতে ভিড় অমুসলিমদের - ছবি : সংগৃহীত

ইউরোপিয়ান দেশ নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডমের নিউ ওয়েস্ট জেলায় অবস্থিত ব্লু-মস্ক বা নীল মসজিদ। ৮ নভেম্বর থেকে এই মসজিদে লাউডস্পিকারে আজান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিচালনা কমিটি। কিন্তু মুসলিম-বিদ্বেষীরা এটা জানতে পেরে মাইকে আজান বন্ধ করতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তাই আগের মতোই আরো কয়েক দিন মুখে আজান দেয়া হচ্ছিল। মুসলিমরা কিন্তু পালটা কোনো পদক্ষেপ করেনি। তবে তারা স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানান। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গত শুক্রবার পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামত করে লাউডস্পিকারে জুম্মার আজান দেয়া হয়। এ দিনই প্রথম এই মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি বহুদূর পর্যন্ত পৌঁছয়।

আজান বা নামাযের জন্য মোয়াজ্জেনের আহ্বান কেমন লাগে, তা শুনতে এ দিন মসজিদের কাছে অনেক অমুসলিম জড়ো হন। অনেকেই মোবাইলে আযানের অডিও রেকর্ড করেন। কেমন লাগল আজান? জবাবে তারা বলেন, সত্যিই এক অনন্য অনুভূতি। এই আবেগময় মুহূর্ত সারাজীবন মনে থাকবে। কেউবা বলেন, মাঝেমধ্যে মোবাইলে রেকর্ড করা আযান শুনব।

মসজিদের প্রধান মাতাওয়াল্লি নূরুদ্দিন ওয়াইল্ডম্যান বলেন, মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে কিছু দুষ্কৃতিকারী। স্থানীয় অমুসলিমদের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক। তারা এ জঘন্য কাজ করতে পারেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস। তাই তো তারা আজ জুমার আজান শুনতে সব কাজ ফেলে এখানে এসেছেন। এজন্য তাদেরকে মসজিদ পরিচালনা কমিটি এবং মুসলিমদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

উল্লেখ্য, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটিতে প্রায় ৫০০ মসজিদ রয়েছে। অধিকাংশতেই বিনা মাইকে আজান হয়। কিন্তু রাজধানী শহর আমস্টারডমে অবস্থিত এই দৃষ্টিনন্দন ও গুরুত্বপূর্ণ মসজিদের একটা প্রভাব রয়েছে। সে দিকটা বিবেচনা করেই এখানে লাউডস্পিকারে আজান চালু হয়। ১৯৮০ সালে সংবিধান সংশোধন করে সে দেশের সরকার সব মানুষকে নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্ম পালনের অধিকার দেয়। সংবিধানে এও বলা হয়েছে, ক্ষেত্রবিশেষে প্রকৃত কারণ থাকলে আজানের ডেসিবেল কমাতে পারে পৌরসভা। কিন্তু মাইকে আজান পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না।

নীল মসজিদের ইমাম ইয়াসিন এলফোরকানি বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাই আমরা কোনো প্ররোচনায়
পা দিইনি।

তবে কট্টর ইসলাম-বিদ্বেষী ফ্রিডম পার্টির নেতা গ্রিট উইল্ডার্স ট্যুইট করেন, দেশের রাজধানী শহরের মসজিদে মাইকে আজান চলবে না। এটা সৌদি আরব নয়। এ দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে ইসলাম খাপ খায় না। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমস্টারডমের মেয়র ফেমকে হলসেমা বলেন, আমিও নীতিগতভাবে মাইকে আজানের বিরুদ্ধে। কিন্তু যেহেতু বিষয়টা আইনসিদ্ধ, তাই এক্ষেত্রে আপাতত আমার করণীয় কিছু নেই।
সূত্র : পূবের কলম

 


আরো সংবাদ



premium cement