সরকারিভাবে যাওয়া হাজীদের খাবার ম্যানুতে ‘মুলার ঝোল’
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১৯ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৫৯
হজের সময়ে মক্কায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির হাজীদের জন্য সরবরাহকৃত খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। প্রতিদিন দুপুরে একবেলা খাবারের জন্য হাজীদের সৌদী ১৪ রিয়াল (বাংলাদেশী টাকায় ৩১৫ টাকা) গুনতে হলেও চাহিদামতো খাবার পাননি কোন হাজী। খাবারের মান নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সোমবার ঢাকায় ফেরত হাজীদের প্রায় প্রত্যেকেই খাবার মান নিয়ে এই প্রতিবেদকের কাছে তাদের অভিযোগের কথা তুলে ধরেন।
কয়েকজন হাজী অভিযোগ করেন, মক্কায় বেশ কয়েক দিন দুপুরে ভাতের সাথে এমন সব তরকারি দেয়া হয়েছে যেগুলো মুখ দেয়ার মতোই ছিল না। মূলার ঝোল আর অর্ধসিদ্ধ করল্লার তরকারি দিয়েই খাবার খেতে দেয়া হয়েছে।
আবার অনেক দিন মসলা ছাড়া ব্রয়লার মুরগী দেয়া হয়েছে। আর যেদিন দুম্বা বা গরুর গোসত দেয়া হয়েছে সেদিন আমরা একমুঠো খাবারও খেতে পারি নাই। কেননা ভাতের সাথে দেয়া এই গোস্ত কতদিনের যে পুরনো তা আল্লাহই ভাল জানেন। দুর্গন্ধযুক্ত গোসত খেয়ে অনেক হাজী অসুস্থও হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ঢাকা এসেছে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩৫০৬ নং ফ্লাইটটি। এই ফ্লাইটে আসা বেশিরভাগ যাত্রীই ছিলেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির হাজী।
রংপুরের আশরাফ হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, অন্যসব সেবার কথা নিয়ে কোন মন্তব্য করবো না। তবে আমাদের এ’ ক্যাটাগরির অথ্যাৎ সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমরা যারা এ বছর হজে গিয়েছি তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে দুপুরের একবেলা খাবারের জন্য ১৪ রিয়াল করে জমা নিয়েছে। বাংলাদেশে থাকাকালেই আমরা এই টাকা পরিশোধ করেছি। কিন্তু মক্কায় হজে সময়টাতে আমাদের যে খাবার পরিবেশন করা হয়েছে সেটা মুখে দেয়ার মতো ছিল না। অনেকে ঐ খাবার না খেয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেয়েছেন। আবার অনেকে এই খাবার খেয়ে অসুস্থও হয়েছেন।
ঠাকুরগাঁয়ের ইমরান হোসের ক্ষোভের সাথে এই প্রতিবেদককে বলেন, মূলার ঝোল আর অর্ধসিদ্ধ করল্লা কোনো জনমেই খাইনি। অথচ হজে গিয়ে আমাদের এই খাবারই খেতে দেয়া হয়েছে। গোস্ত দেয়া হয়েছে অনেক দিনের পুরনো। দুর্গন্ধযুক্ত গোস্ত খেয়ে অনেকে অসুস্থও হয়েছেন।
উল্লেখ্য, এবছর হজে যাওয়ার আগেই সরকারি ব্যবস্থাপনার প্রত্যেক হাজীর কাছ থেকে দুপুরের খাবার বাবদ ৯ হাজার ৪৫০ টাকা জমা নেয়া হয়। শর্ত মোতাবেক হজের সময়ে মক্কায় অবস্থানকালে ৩০ দিনের জন্য শুধু দুপুরে খাবার পাচ্ছেন হাজীরা। হজের সময়ে মক্কায় অবস্থানকালে ৩০ দিন সৌদী সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে বাংলাদেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হাজীরা খাবারের এই সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সকাল ও রাতের খাবার তাদের সরবরাহ করা হয় না। এই দুই বেলার খাবার নিজেদের কিনে খেতে হচ্ছে।
এদিকে মক্কায় হাজীদের সরবরাহকৃত খাবারের নিম্নমান নিয়ে কথা বলতে চাইলে ঢাকাস্থ হজ অফিসের দায়িত্বশীল কাউকেই পাওয়া যায়নি। বেশির ভাগ কর্মকর্তা এখন হজ পালনের জন্য সৌদী আরবে অবস্থান করছেন।
তবে সৌদী আবর থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, হাজীদের খাবার সৌদী সরকার নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি ক্যাটারিং কোম্পানী চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করছে। হাজীদের অভিযোগের বিষয়টি আমরা আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখছি। এর সত্যতা পেলে আগামীতে আমরা লিখিতভাবে বিষয়টি সৌদী হজ মন্ত্রণালয়কে জানাবো। প্রয়োজনে ক্যাটারিং কোম্পানী পরিবর্তন করতে সুপারিশ করবো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা