২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হজ অফিসের ভুল বার্তায় ভোগান্তিতে হজযাত্রীরা

আশকোন হজক্যাম্প - ছবি : নয়া দিগন্ত

মোবাইল ফোনে পাঠানো হজ অফিসের দুটি ভুল বার্তায়(এসএমএস) ভোগান্তিতে পড়েছেন ৪১৯ জন হজযাত্রী। ভুল এসএমএসের সূত্রধরে সোমবার দুপুরের পর থেকেই বিভ্রান্তিতে পড়েন রাত সাড়ে ৯ টার বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩২৪৯ নং ফ্লাইটের ৪১৯ জন হজযাত্রী।

এই হজযাত্রীদের প্রত্যেকের মোবাইল ফোনে সোমবার সকাল ৬টা ২ মিনিটে একটি এসএমএস পাঠিয়ে বলা হয়, ২২ জুলাই সোমবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটের বিমানের বিজি ৩২৪৯ নং ফ্লাইটির যাত্রীদের সৌদী আরবের জেদ্দা এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই সম্পাদিত হবে। এই ফ্লাইটের ৪১৯ জন হজযাত্রীকেই ফ্লাইট ছাড়ার ৮ ঘন্টা আগে হজক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে ইমিগ্রেশনের সমুদয় কার্যক্রম সম্পাদনের তাগিদ দেয়া হয়।

হজযাত্রীদের কাছে পাঠানো হজ অফিসের এসএমএস

 

এই এসএমএস পাওয়ার পর হজযাত্রীরা নিজ নিজ এজেন্সির তত্ত্বাবধানে সোমবার খুব ভোরো চলে আসেন আশকোনাস্থ হজক্যাম্পে। এরপর বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে ঢাকা হজ অফিস থেকে তাদের মোবাইল ফোনে পুনরায় আরেকটি এসএমএস পাঠিয়ে বলা হয়, হজ এজেন্সি এখনো আপনার ভিসা বা আবাসন কার্যক্রম শুরুই করেনি। তাই ত্বরিৎ সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির সাথে হজযাত্রীদের যোগাযোগ করে ভিসা ও হজযাত্রা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। আর এতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়নে হজযাত্রীরা।

সকালের হজ অফিসের এসএমএস পেয়ে যেসব হজযাত্রী দ্রুত গতিতে হজক্যাম্পে চলে এসেছিলেন তারা বেলা ১১ টা ৩৪ মিনিটে দ্বিতীয় এসএমএস পাওয়ার পর পড়ে যান বিরাট বিভ্রান্তিতে। অনেকে ভিসা না হওয়ার এই এসএমএস পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকে নানা পন্থায় এজেন্সির সাথে যোগাযোগও শুরু করেন। কারণ সব প্রস্তুতি নেয়ার পরও ভিসা না হয়ে থাকলেও হজেই যেতে পারবেন না।

যদিও পরে অবশ্য জানা গেল এই হজযাত্রীদের প্রত্যেকেরই ভিসা ২১ জুলাই তারিখেই প্রিন্ট নেয়া হয়েছে। এম আর ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস নামের একটি এজেন্সির ৪৮ জন হজযাত্রী প্রত্যেকেই এই ভুল এসএমএস পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তারা হজ ক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে বারবার এজেন্সির লোকজনকে ফোন করে জানতে চান কেন এখনো তাদের ভিসা হয়নি। এজেন্সির এক কর্মকর্তা হজযাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ভিসা তারা হাতে পেয়েছেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সবার হাতে ভিসা ও পাসপোর্ট দেয়া হবে; কিন্তু তারপরেও অনেক হজযাত্রী ঐ কর্মকর্তার কথায় বা আশ্বস্ত হতে পারেননি।

তারা অনেকে হজ অফিসারের রুমে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। ভিসা না হওয়ার বিষয়টি মোবাইল ফোনে এসএমএন পেয়ে হজ ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে খোঁজ খজর নিতে দেখা গেলে এম আর এজেন্সির বেশ কিছু হজযাত্রীকেও। এদের মধ্যে টাঙ্গাইলের মধুপরের হায়দায় আলী, ইউসুফ আলী, আদব আলী, খোরশেদ আলী, নূর মোহাম্মদ বলেন, এজেন্সির লোকজনকে বলেছি ভিসা আমাদের হাতে দেয়ার জন্য; কিন্তু তারা এখনো ভিসা-পাসপোর্ট আমাদের হাতে দেয়নি। এখন মাইকে আমাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ইমিগ্রেশনের জন ডাকা হচ্ছে।

অবশেষে দুপুর দুইটায় প্রত্যেক হজযাত্রীর হাতে তাদের ভিসার কপি ও পাসপোর্ট হাতে দেয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। প্রত্যেক হজযাত্রী ইমিগ্রেশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

যেখানে একদিন আগেই হজযাত্রীদের ভিসা প্রিন্ট নেয়া হয়েছে সেখানে কেন এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্যের এসএমএস পাঠিয়ে ৪১৯ জন হজযাত্রীকে দুশ্চিন্তা আর দুর্ভোগে ফেলা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকার আশকোনাস্থ হজ অফিসের আইটি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়া দিগন্তকে জানান, এটি একটি কারিগরি ত্রুটি। কেননা হজ অফিসের আইটি শাখা সময় সময় হজ যাত্রীদের সর্বশেষ তথ্য দিয়ে আপডেট রাখে। হয়তো এই এসএমএস দু’দিন আগেই বিমানের ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা হবার পর প্রসেস করে রাখা হয়েছিল। সেন্ড করা হয়েছিল আরো আগেই; কিন্তু এই এসএমএসটি রিসিভার গ্রাহকের ফোনে রিসিভ দেখানো হয়েছে এক বা দুদিন পরে। আর যেহেতু প্রত্যেক হজযাত্রীর ভিসা ইতোমধ্যে প্রিন্ট হয়ে হাতে চলে এসেছে কাজেই এখনতো আর কোন বিভ্রান্তির সুযোগই নেই।


আরো সংবাদ



premium cement