অদম্য হজযাত্রী আবদুল বারেক
- শাহেদ মতিউর রহমান
- ১৩ জুলাই ২০১৯, ১৫:৪৩
বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছেন না আবদুল বারেক। বসা অবস্থা থেকে দাঁড়ালে পুরো শরীরই তার কাঁপে। মাথা ঝিমঝিম করে, চোখে ঝাঁপসা দেখেন। তবু এই অসুস্থ শরীর নিয়েই এবার হজ করতে যাচ্ছেন টাঙ্গাইলের আব্দুল বারেক। শরীর ঠিক মতো না চললেও আল্লাহর মেহমান হওয়ার অদম্য ইচ্ছাই তাকে নিচ্ছে কাবার পথে। সঙ্গী হিসেবে আছেন স্ত্রী হাজেরা খাতুন ও ছেলে হাফিজুল ইসলাম। শনিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে হজ্জে যাচ্ছেন তারা তিন জন।
শনিবার দুপুরে আশকোনা হজ ক্যাম্পে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় হজযাত্রী আবদুল বারেকের। ৭২ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ জানালেন কেন তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েই এবার হজ্জে যাচ্ছেন। আবদুল বারেক বলেন, একমাস আগেও আমি এমন অসুস্থ ছিলাম না। চার-পাঁচ মাস আগে যখন হজের প্রাক নিবন্ধন করি তখন অনেকটাই সুস্থ ছিলাম ; কিন্তু গত প্রায় মাস খানেক ধরেই শরীরটা বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, নিয়্ত যখন করেছি তখন আর দেরি করতে মন চাইছে না। বলা তো যায় না, আগামী বছর বাঁচি না মরি।
বাবার সাথে হজ্জে যাচ্ছেন আবদুল বারেকের ছেলে হাফিজুল ইসলাম। এ বছর ঢাকা কলেজ থেকে এমএ পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। হাফিজুল বলেন, তার বাবা সারা জীবন কৃষি কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ভাইবোনদের লেখাপড়া করার খরচ কৃষি থেকেই যোগান দিয়েছেন। দু’বছর আগে কয়েক শতাংশ জমি বিক্রি করে হজের জন্য টাকাও জমিয়েছেন।
হাফিজুল বলেন, শুরু থেকেই তার বাবার ইচ্ছা ছিল স্ত্রীকে নিয়েই হজ করবেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়াতে তাকেও সঙ্গে যেতে হচ্ছে। তিন জনের জন্য হজের খরচ বাবদ ব্যয় হচ্ছে আট লাখেরও কিছু বেশি টাকা। সব টাকা তার জমি বিক্রি থেকেই এসেছে।
হাফিজুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানালেন, হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা অনেক কষ্টের হয়। বাবা ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। এছাড়া আমার মায়েরও বয়স হয়েছে। একা একা হাঁটাচলা করতে পারলেও আমার মাও হজে ভিড়ের মধ্যে সব কাজ নিজে নিজে একা করার সাহস পাচ্ছেন না। তাই আমিও মা-বাবার সাথে যাচ্ছি। এতে প্রথমত আমার বৃদ্ধ বাবা মা অনেকটাই সাহস পাচ্ছেন আর দ্বিতীয়ত আমার হজটাও হয়ে গেল।
শনিবার সন্ধা সোয়া সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তারা তিনজনেই সরাসরি মক্কা যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা