২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘গরমে কষ্ট হয়, তবুও রোজা ছাড়ি না’ (ভিডিও)

রিক্সাচালক সেলিম মিয়া - ছবি : নয়া দিগন্ত

তপ্ত দুপুর। সূর্যের প্রখর রোদে ক্লান্ত শরীর। অবিরাম ঝড়ছে নোনা ঘাম; কিন্তু আল্লাহর ভয়ে রোজা রাখা থেকে একদিনের জন্যও বিরত থাকেননি রিক্সা চালক সেলিম মিয়া। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলায়। এত কষ্টের মধ্যেও রাজধানীর এই পিচ ঢালা কালো রাস্তায় রিক্সার চাকা ঘোরাতে হয় তাকে। কারণ একদিন রিক্সার চাকা বন্ধ থাকলে সংসারের চাকাও যে থেমে যাবে!

তাই সকাল থেকে ইফতারের আগ পর্যন্তই রিক্সা নিয়ে সেলিম মিয়াকে থাকতে হয়ে রাজপথে।

দৈনিক একশ’ টাকা জমার ভিত্তিতে মালিকের কাছ থেকে রিক্সা নিয়ে রোজ সকালে রেড়িয়ে পড়েন তিনি। সংসারের প্রয়োজনে রোজা রেখেই রিক্সা চালাতে হয় তাকে।

আরামবাগে নটরডেম কলেজ গেটের উত্তর পাশে যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন সেলিম মিয়া। সেখানেই কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। জানালেন, বাড়ি তার ভোলা জেলার সদর উপজেলায়। দুই ছেলে আর এক মেয়ে তার। তিন সন্তানই দাদা-দাদীর সাথে থাকেন ভোলাতেই। সেলিম মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন নতুন বাজার এলাকায় নূরের চালায় ভাড়া বাড়িতে। মাসিক তিন হাজার টাকা ভাড়ায় টিনশেড একটি ঘরে থাকেন স্বামী-স্ত্রী।

ষাটোর্ধ সেলিম মিয়া আরো জানালেন, প্রতি মাসেই তাকে সন্তানদের পড়াশোনার জন্য গ্রামের বাড়িতে পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতে হয়। স্ত্রী আর নিজের জন্য মাসে খরচ হয় সাত থেকে আট হাজার টাকা। যে করেই হোক সব মিলিয়ে তাকে প্রতি মাসে পনেরো হাজার টাকা আয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। তা না হলে যে তার সংসার চলেই না।

সেলিম মিয়ার দুই ছেলেই কলেজে পড়ে। তারা নিজেরাও টিউশনি করে নিজেদের পড়াশোনার ব্যয়ের কিছুটা সংস্থান করে। তাই সেলিম মিয়ার উপর আগের তুলনায় চাপ কিছুটা কমেছে। তবে গ্রামের বাড়িতে থাকা মেয়ের পড়াশোনা আর বিয়ের খরচের জন্য এখন থেকেই ভাবতে হচ্ছে তাকে।

মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন কিনা জানতে চাইলে সেলিম মিয়া লুঙ্গির কোমরের গিঁট খুঁলে পলিথিনে মোড়ানো মোবাইল ফোন বের করে দিয়ে বললেন, ‘নাম্বারতো জানি না’ বাবা। রাস্তায় কোন বিপদ মুসিবত হলে যাতে ছেলেদের সংবাদ দিতে পারি তাই ছেলেরাই এই মোবাইলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তবে স্ত্রী আর ছেলেদের মোবাইলে নাম্বার ছাড়া আর কোন নাম্বারে ফোনও করতে পারেননা তিনি।

ভিডিও দেখুন:


আরো সংবাদ



premium cement