২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান - ছবি : এএফপি

‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাক’- অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার, তোমার কোনো শরিক নেই- এই ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান। পুরুষেরা শ্বেতশুভ্র সেলাইবিহীন ইহরামের দুই খণ্ড কাপড় পরে আর নারীরা স্বাভাবিক কাপড়ে তালবিয়া পাঠ করে এবং পাপমুক্তি ও আখেরাতের চিরশান্তির আকুল বাসনায় মহান আল্লাহর কাছে হৃদয় উজাড় করে সব আবেগ ও আবেদন পেশ করছেন।
আজ অবশ্য ধূলিঝড় ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে তা কেটে গেলে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয় আবার।

লাখ লাখ হাজী আজ মক্কা নগরীর মিনা তাঁবু থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়েছেন। ৯ জিলহজ দ্বিপ্রহর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই নিয়ম। কিন্তু লাখ লাখ হাজীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য আগের রাত থেকেই তাদের নেয়া শুরু হয়।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৮৮টির বেশি দেশ থেকে এবার প্রায় ২৩ লাখ হাজী হজ আদায় করছেন। বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৭ জন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার এবং বাকিরা গেছেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
রোববার মিনায় হাজীদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। স্থানীয় তারিখ অনুযায়ী ৮ জিলহজ মিনায় উপস্থিত হওয়ার নিয়ম হলেও ভিড় এড়াতে গত শনিবার বিকেল থেকে মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তারা।

মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফাতের ময়দান। আজ আরাফাতের ময়দানে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতির খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন হাজীরা। তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে পরে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। আজ রাতে সেখানে খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। এ সময় তারা সেখানে প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন শয়তানের (প্রতীকী) প্রতি নিক্ষেপের জন্য।
আগামীকাল মঙ্গলবার মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজীরা মিনায় যাবেন। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর নিক্ষেপের পর পশু কোরবানি দিয়ে পুরুষেরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। ইহরাম বদল করে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ (তাওয়াফে জিয়ারত)করবেন। এটি হজের আরেক ফরজ। তারপর তারা কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ (দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় তাঁবুতে ফিরে যাবেন। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবার জামারায় নির্দিষ্ট সময়ে যথাক্রমে বড়, মধ্যম শয়তান ও ছোট শয়তানকে উদ্দেশ করে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। মিনার কাজ শেষে আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর নিজ নিজ দেশে ফিরবেন হাজিরা। তবে যারা হজের আগে মদিনায় যাননি, তারা মদিনায় যাবেন। এভাবে সম্পন্ন হবে হজের পুরো আনুষ্ঠানিকতা।

 


আরো সংবাদ



premium cement