২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

চুরি যাওয়া সাইকেল খুঁজতে গিয়ে লাশ হলো সোহেল

নিহত সোহেলের বাবা-মা - ছবি নয়া দিগন্ত

নিজের বাড়ির সামনে থেকে চুরি যাওয়া ফনিক্স বাই সাইকেল খুঁজতে গিয়ে লাশ হতে হলো সোহেল নামে তারকাটা ফ্যাক্টরির এক শ্রমিককে। সাইকেল চোর চক্র তাকে ক্রিকেট উইকেট, রড আর দেশীয় ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। ঘটনাটি ঘটেছে ৬ নভেম্বর বুধবার সন্ধা ৭ টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত শ্রমিক সোহেলের বন্ধু সনু জানায়, বুধবার বিকালে সোহেল সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর তারকাটা ফ্যাক্টরী থেকে কাজ শেষে শহরের পুরাতন বাবুপাড়াস্থ বাড়িতে ফিরে। বাড়ির সামনে তার ব্যবহৃত ফনিক্স ব্রান্ডের বাই সাইকেলটি রেখে ভিতরে যায়। কিছুক্ষণ পর বের হয়েই দেখে সাইকেলটি নেই। অনেক খোঁজাখুজির পর জানতে পারে সাইকেলটি পার্শ্ববর্তী মুন্সিপাড়া তেজপাতা গাছ এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কাল্লুর ছেলে রকি চুরি করেছে।

সে অনুযায়ী সোহেলসহ আমি দ্রুত ছুটে যাই রকির বাড়িতে। সেখানে পৌছে রকি কে চুরি যাওয়া বাই সাইকেলের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই মুহুর্তে রকিসহ তার ভাই ফয়সাল, সনু ও তার পিতা কাল্লু সোহেলের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় ক্রিকেট উইকেট, লোহার রড বেধরক মারপিট করতে থাকে। এরই মধ্যে রকি বাড়ি থেকে দেশীয় ছুরি নিয়ে এসে এলোপাথারীভাবে কোপাতে থাকে। এতে সোহেল চরমভাবে জখম হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে তারা আমার উপরও চড়াও হয় এবং বেপরোয়াভাবে মারপিট করে। ফলে মাথায় ও চোখে আঘাত লাগে। প্রচন্ড আঘাতের ফলে আত্মচিৎকার করতে থাকলে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সোহেলের অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিক দায়িত্বরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে সোহেল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।

নিহত সোহেল পুরাতন বাবুপাড়ার রং মিস্ত্রি শহিদুল ইসলামের ছেলে। তার স্ত্রী ও দেড় বছর বয়সের একটি ছেলে রয়েছে।

এ ঘটনায় সোহেলের বাবা বাদি হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নিহত সোহেলের পিতা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার নির্দোষ ছেলেকে কাল্লুর ও তার ছেলে রকি, ফয়সাল ও সনু নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এজন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তপ কামনা করছি।

ঘটনার পর থেকে কাল্লু ও তার ছেলেরা পলাতক রয়েছে। এদিকে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল অপতরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সোহেলের পরিবার। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে মামলা থেকে বিরত থাকার জন্য বার বার বলছে।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পাশা জানান, অভিযোগ অনুযায়ী হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আসামীদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 


আরো সংবাদ



premium cement