২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছেলের অনাদরে গোয়াল ঘরে বাস করা সেই মায়ের পাশে ইউএনও

ছেলের অনাদরে গোয়াল ঘরে বাস করা সেই মায়ের পাশে ইউএনও - নয়া দিগন্ত

‘ছেলের অনাদরে মা থাকেন গোয়াল ঘরে’ শিরোনামে গত ৮ অক্টোবর দৈনিক নয়া দিগন্তের অনলাইন বিভাগে সংবাদ প্রকাশের পর নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার সেই ভুক্তভোগী বিধবা মা বুলবুলি বেওয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সোমবার সকালে তিনি বিধবা বুলবুলি বেওয়ার হাতে বিধবা ভাতা বই তুলে দেন।

এর আগে গত ৮ অক্টোবর “ছেলের অনাদরে থাকেন মা গোয়াল ঘরে” শিরোনামে নয়া দিগন্ত অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। খবরটি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে চাঁদখানা ইউনিয়নের সরঞ্জাবাড়ী গ্রামে বুলবুলি বেওয়ার বাড়িতে যায় উপজেলা সমাজসেবা কতৃপক্ষ। সরেজমিন পরির্দশনের পর সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা আবুল কালাম আজাদ বুলবুলি বেওয়ার হতে একটি বিধবা ভাতা বই তুলে দেন।

এদিকে বিধবা ভাতা বই হাতে পাওয়ার পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বুলবুলি বেওয়া। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যানের পিছনে ঘুরেও বিধবা ভাতা বই পাইনি।

 

ছেলের অনাদরে থাকেন গোয়াল ঘরে

স্বামীর মৃত্যুর ১৫ বছর হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিধবা ভাতা হয়নি বুলবুলি বেওয়ার (৬০)। চেয়ারম্যান মেম্বারের পিছনে এজন্য অনেক ধর্ণা দিয়েছে তিনি। কেউ তাকে একটা বিধবা ভাতা কার্ড করে দেয়নি। এমন কি তিনি ভিজিএফ চালের একটি স্লিপও পাননি। বৃদ্ধ বয়সে তিনি এখন অন্যের বাড়ীতে ঝিঁয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের মরহুম আজিজার রহমান বানারের স্ত্রী তিনি।

গত রোববার চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের দুয়ারে বসে কাঁদছেন বুলবুলি বেওয়া। কাঁদার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ৫ ছেলে-মেয়ের মা তিনি। কিন্তু ৪ ছেলের কোন ছেলেই তার দিকে ফিরে তাকায়না। অনেকদিন থেকে তার কোমড়ে ব্যাথা। ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায় আজকে তিনি কাজে যেতে পারেননি। তাছাড়া দিনরাত ছেলে এবং বউয়ে কটুক্তি তাকে বিষিয়ে তুলেছে।

বুলবুলি বেওয়া বলেন, একটি বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য চেয়ারম্যান মেম্বার পিছনে অনেকদিন ঘুরেছি। তারা ৫ হাজার টাকা চায়। কিন্তু টাকা কোথায় পাবো। এ বয়সে এসে অন্যের বাড়ীতে থালা বাসন মেজে এখন পেটে ভাত দিতে হচ্ছে। তারা যে ভাত দেয় সেটা খেয়ে রাতের জন্য নিয়ে আসি। রাতে এসে থাকতে হয় ছেলের গোয়াল ঘরে। মশারী নেই সারারাত মশার সাথে যুদ্ধ করে রাত কাটাতে হয়।

বুলবুলি বেওয়া কাঁদত কাঁদতে বলেন, ‘স্বামী মরার ১৫ বছর হইছে। ৪ ব্যাটা ১ বেটিকে খুব কষ্ট করি বড় করছু। কিন্তু এ্যলা ওমরা বড় হয়া মোর প্যাকে দেখেনা।’


আরো সংবাদ



premium cement