২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কারাগারে হাজতির মৃত্যু, বিচারে দাবিতে বিক্ষোভ 

নিহত হেকমত আলী - নয়া দিগন্ত

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হেকমত আলী (৩৫) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন । সমাবেশ শেষে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর হাজতির মৃত্যুও সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করে স্বারকলিপি দিয়েছেন।

স্বারক লিপিতে দাবী করা হয়েছে,অটোচালক হেকমতকে মিথ্যা মামলায় ধরে নিয়ে মারধর করে। তার কারণে হেকমত মারা যায়। এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেছেন নিহতের বড় ভাই হাফিজুর রহমান।

হাফিজুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন,গত ০৭ জুলাই রাত আনুমানিক ১টা ১০ মিনিটে বাড়ী থেকে আমার ছোট ভাই হেকমতকে পীরগাছা থানা পুলিশ এস,আই, প্রলয় এর নেতৃত্বে ধরে নিয়ে যায় এবং পরের দিন সকালে বাসা থেকে পুলিশ হেকমতের অটোটি নিয়ে আসে। এসময় হেকমতকে খুব মারপিট করে আমার কাছে টাকা দাবি করে এবং টাকা প্রদান করি। আমার ভাইকে ছেড়ে দেয়ার জন্য।এর পরেও আমার ভাইকে এমন মার মেরেছে যে শেষ পর্যন্ত জেল হাজতে মারা গেছেন, এক প্রশ্নের জবাবে হেকমতের বড় ভাই বলেন, জেলার তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাকে মেরেছে কিনা ,তিনি রিমান্ডে নেয়ার ভয়ে বলেছিল আমাক মারে নাই।

হেকমতের স্ত্রী তানজিনা নয়া দিগন্তকে বলেন, আমার স্বামী যদি অপরাধীদ হয়েও থাকে তাহলে তার বিচার আছে,আর আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আমার স্বামী কোন অপরাধ করেন নাই, আমার স্বামীকে মেরে ফেলা হলো , এখন দুধের শিশু দুইটি কে দেখবে বলেন, কে তাদেরকে খিলাইবে বলেন?

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ জেসমিন প্রধান নয়া দিগন্তকে বলেন, বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্মকর্তাতে জানানো হয়েছে, তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এব্যাপারে পীরগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রেজাউল করিম নয়া দিগন্তকে বলেন, হত্যার কোন প্রশ্নেই আসে না, আমরা নিয়মমত মত আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

জানাগেছে,রোববার বিকাল ৫টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে তার পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ৯ জুলাই পীরগাছা থানা পুলিশ অজ্ঞান পার্টির সক্রীয় সদস্য হিসেবে একটি চুরির মামলায় তাকে গ্রেফতার করে জেলা হাজতে পাঠায়। সে উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়নের কামদেব গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন ডন জানান, রোববার বিকাল ৩টার দিকে হেকমতের স্বজনেরা তার সাথে দেখা করে। এর কিছুক্ষণ পরেই সে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে কারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকি]সা দেয়া হয়। এসময় তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের ফুফাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, ভাই হেকমতের সঙ্গে বিকাল ৩টার দিকে জেলহাজতে দেখা করে তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে বাড়িতে চলে আসি। রাত ১০টার দিকে পীরগাছা থানার ওসির মাধ্যমে জানতে পারি সে মারা গেছে।

মোঃ মাসুদ মিয়া বলেন, আমার ভাতিজা হেকমত কে যেখন দেখতে গিয়েছিলাম ,তখন হেকমত আমাদেরকে জানিয়েছেন, তাকে প্রচন্ড মারা হয়েছে, কারেন্ট ছট দেওয়া হয়েছে।মোঃ আইয়ুব আলী নয়া দিগন্তকে বলেন, থানায় আমাদেরকে দেখতে দেওয়া হয় নাই।


আরো সংবাদ



premium cement