১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তীব্র শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতের মধ্যে মাঠে শিক্ষার্থীরা!

তীব্র শিলাবৃষ্টির মধ্যেই স্কুল মাঠে দৌঁড়াদৌঁড়িতে মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা - নয়া দিগন্ত

তীব্র শীলাবৃষ্টি আর বাতাসের মধ্যে ভিজতে ভিজতে স্কুল মাঠে শিলা কুড়ানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা। কেউ কেউ আবার মেতে উঠে বৃষ্টির পানি ছিটাছিটিতে। প্রবল বাতাসের সাথে ঠান্ডা বৃষ্টির তোড়ে শীতে কাতর হয়ে অনেককে ভোঁ-দৌড় দিয়ে পালাতে দেখা যায়। এর মধ্যে প্রচন্ড শব্দে বিদ্যুৎ চমকের সাথে বজ্রপাত হয়। আঁতকে উঠে শিশুরা। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক ধরণের দুর্ঘটনা।

অথচ এ সময় টিচার্স রুমে অবলীলায় গল্পে মশগুল ছিলেন শিক্ষকেরা। তারা কেউ ভ্রুক্ষেপই করেননি যে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার দুপুর ৩ টার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট এলাকায়। বৃষ্টিতে আটকে পড়া লোকজন রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকান ও স্থাপনায় আশ্রয় নিয়ে দূর থেকে এ দৃশ্য দেখেন আর স্কুল কর্তৃপক্ষের এহেন অবহেলা ও কান্ডজ্ঞানহীন কাজের জন্য বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে বৃষ্টি শেষে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু বাশার মোঃ মহিউদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বৃষ্টিতে ভিজলে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজছে না কি করছে তাতে আপনার সমস্যা কী?

বজ্রপাত বা ঠান্ডা লেগে শিশুরা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এরকম কোনো অসুবিধা তো হয়নি। হলে বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তখন দেখা যেতো। যেহেতু কিছু হয়নি তাই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করাই ভালো। আমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যাথা কেন?

এ ব্যাপারে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার রুহুল আমিনের সাথে। তিনি জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আতঙ্কের। তাই এ ব্যাপারটি তদন্ত করে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন : মাত্র ১৫ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষেত বিরাণভূমি!

এদিকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৫ মিনিটের প্রবল শিলাবৃষ্টিতে আম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে শুরু হওয়া এই শিলাবৃষ্টির ফলে আম গাছের গুটি আম সম্পূর্ণরুপে ঝড়ে পড়েছে। এতে গাছগুলো এখন একেবারে আমশুন্য দেখাচ্ছে।

একইসাথে শাক-সবজিসহ ফসলের ক্ষেতগুলোতেও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ধান, গম ও ঢেড়সের জমিতে যেন ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত এখন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে।

সৈয়দপুর কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় এই শিলাবৃষ্টির প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ এ মূহুর্তে নিরুপণ করা সম্ভব না হলেও তা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

এদিকে বড় বড় আকারের শিলাখন্ড পড়ায় অনেকস্থানে কাঁচা ঘরবাড়ি, টিনের চাল, মৃৎশিল্পীদের তৈরীকৃত বিভিন্ন মাটির জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি ইটভাটাগুলোতে তৈরী করে রাখা ইট বৃষ্টিতে ভিজে আর শিলার আঘাতে চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে পড়েছে। যা আবারো তৈরী করা ছাড়া পোড়ানোর অযোগ্য হয়ে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement