১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিমানবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধীতা করে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

কম মূল্যে জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন - নয়া দিগন্ত

‘রক্ত দিবো, জীবন দিবো, তবুও বসতভিটা ও জমি দিবো না’- এই শ্লোগানে মুখরিত হয়ে সৈয়দপুর বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়া এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। সোমবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বিমানবন্দরের পশ্চিম পার্শ্বের ১১টি গ্রামের প্রায় ২ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় তারা বিমানবন্দরের জন্য জমি দিতে গিয়ে নিজেরাই চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, ইতোপূর্বে ১৯৪২ সালে রেলওয়ে, ১৯৬২ সালে হাউজিং (ক্যান্টনমেন্ট), ১৯৭২ সালে বিমানবন্দর, ২০০৬ সালে সেনানিবাস এবং আবার ২০১৯ সালে বিমানবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে সরকার। এভাবে বার বার জমি নেয়ায় বিমানবন্দর সংলগ্ন বাড়ি ঘরের অধিবাসীরা বার বার ভাঙ্গণের মুখে পড়ছে।

তাছাড়া জমি দিয়ে তারা প্রকৃত দাম পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করা হয়। ফলে জমি বিক্রির টাকা দিয়ে অন্যত্র গিয়ে নতুন করে বাড়ি করা বা বসবাসের আশ্রয় তৈরী করতে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেননা অধিগ্রহণকৃত জমির বাজার মূল্যের প্রায় অর্ধেক দামে জমি নিচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ কারণে তারা এবার আর জমি দিবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করার মত পদক্ষেপও নিয়েছে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন বিমানবন্দর মুন্সিপাড়ার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, রেলওয়ে, ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করেছে তা আমাদেরই বাবা-দাদাদের দেয়া। অর্থাৎ ওইসব জমি আমাদের পৌত্রিক সম্পত্তি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই জমিতে প্রতিষ্ঠিত স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের যোগ্যতা থাকা সত্বেও কোনো সুযোগ সুবিধা দেয় না।

তিনি আরো বলেন, এমনকি কোনোভাবে চাকরি সংগ্রহ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে তাদের নিজস্ব লোক নিয়ে আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে। এমনকি বাংলাদেশ বিমানসহ অন্যান্য কোম্পানীতেও আমাদের কোনো চাকরি দেয়া হয়নি। তাহলে কেন আমরা বার বার শুধু জমি দিয়েই যাবো।

একই অভিযোগ করেন আলাউদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাকে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ জমিদাতা হিসেবে চাকরি দিলেও কিছুদিন পর ডিস্ট্রিক ম্যানেজার আমার নিয়োগ বাতিল করে দেন।

তিনি আরো বলেন, বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীরের সাথে লাগা জমিগুলো বর্তমানে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা শতক দামে বিক্রি হলেও জমি অধিগ্রহণ করে দেয়া টাকায় দেখা যাচ্ছে ওইসব জমিগুলো মাত্র ১ থেকে দেড় লাখ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে আমরা একদিকে জমি দিয়ে বাসা-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছি, অন্যদিকে জমির মূল্য কম পাচ্ছি। অর্থাৎ দুই দিক থেকেই আমরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। তাহলে আমরা কি শুধু দিয়েই যাবো, পাওয়ার কোনো প্রত্যাশা থাকবে না?

এমনভাবেই মানববন্ধনে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন অভিযোগ করেন। মানববন্ধনে এসময় বক্তব্য রাখেন- নুর ইসলাম, অতুল মেম্বার, মোস্তফা, রানী দাস প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement