২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ভ্যানচালকের ঝুলন্ত লাশ ঘিরে রহস্য

ভ্যানচালকের ঝুলন্ত লাশ ঘিরে রহস্য
ভ্যানচালকের ঝুলন্ত লাশ ঘিরে রহস্য - ছবি : নয়া দিগন্ত

দিনাজপুরের বিরামপুরে গাছের সাথে গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় হবিবর রহমান (৪৫) নামে এক ভ্যানচালকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার সকালে উপজেলার কাটলা ইউপির দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের পার্শ্বের ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে হতে লাশটি উদ্ধার করা হয়। হবিবর রহমান ওই গ্রামের মৃত কাফাজ উদ্দিনের পুত্র বলে জানা গেছে।

খবর পেয়ে বিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং ভ্যানচালক হবিবর আত্নহত্যাই করেছেন বলে তিনি জানান।

স্থানীয়রা বলছেন, রাতের কোনো এক সময় তিনি আত্নহত্যা করে থাকতে পারেন। এর আগেও তিনি দুই বার বিষ খেয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মুঠোফোনে নয়া দিগন্তকে জানান, এটি আত্নহত্যা নয় বরং হত্যা বলে মনে হচ্ছে। কারণ আমি ঘটনাস্থলে লাশটির পা মাটির সাথে লেগে থাকতে দেখেছি। যেহেতু স্বজনরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ না করে বিষয়টিকে আত্নহত্যা বলেই চালিয়ে দিচ্ছে সেহেতু আমার আর কিছু বলা নেই।

তবে হত্যা নাকি আত্নহত্যা এ রহস্যের সমাধান না হলেও লাশটির দাফন সম্পন্ন করাও হয়েছে।

 

আরো দেখুন : স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
মোঃ জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী); ০৩ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫১

নবম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী সুমি রাণী। ক্লাসের যে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ালেখাকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিল, সুমি রাণী তাদের অন্যতম। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। সম্প্রতি এক বখাটের কুনজর পড়ে সুমির (১৪) উপর। নিজের বাড়ি ও স্কুলে যাওয়া আসার রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে সুমিকে উত্যক্ত করতো এই বখাটে যুবকের। অভিযুক্ত বখাটের নাম সূর্য রায় (৩৫)।

সর্বশেষ শনিবার সুমিকে বাড়ির গোসলখানায় একা পেয়ে ধর্ষণ চেষ্টা করে লম্পট সূর্য। একপর্যায়ে সুমির ভাই এসে লম্পটের হাত থেকে তাকে রক্ষা করলেও পরে লজ্জায় ও আতঙ্কে গলায় আত্মহত্যা করে সে। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে। নিহত সুমি ওই ইউনিয়নের ভুজারীপাড়ার দিনমজুর হরেন চন্দ্র রায়ের কন্যা। সে বাঙ্গালীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

এদিকে অভিযুক্ত বখাটে সূর্য রায় একই গ্রামের বাসিন্দা। সে দুই সন্তানের জনক এবং পেশায় একজন ইজিবাইক চালক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ২ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিহত স্কুলছাত্রী সুমির মা ময়না রাণী বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত স্কুলছাত্রী সুমির পরিবারের সদস্যরা জানায়, শনিবার বিকেলে বাড়ি এসে গোসলখানায় গোসল করতে যায় সুমি। এসময় তাকে বাড়িতে একা পেয়ে গোসলখানায় সুমিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বখাটে সূর্য। একপর্যায়ে সুমির পালিত ভাই বকুল চন্দ্র বাড়িতে এলে বখাটে সূর্য রায় পালিয়ে যায়।

এসময় সূর্যকে আটক করার জন্য সুমির ভাই বকুল চন্দ্র বাড়ির বাইরে আসে। এরই ফাঁকে লজ্জা ও আতঙ্কে সুমি নিজ শোয়ার ঘরে গিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।

নিহত সুমির মা ময়না রাণী জানান, দীর্ঘদিন থেকে তার মেয়ে সুমিকে উত্যক্ত করতো বখাটে সূর্য। এ উত্যক্ত করার ঘটনা ইতোপূর্বে সূর্য ও তার পরিবারকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি।

প্রতিবেশী শিল্পী রাণী ও সুমীর পিসি জোসনা রাণী জানান, বখাটে ও লম্পট চরিত্রের সূর্য অনেক দিন থেকেই সুমিকে উত্যক্ত করে আসছে। স্কুলে যাওয়ার পথে প্রায়ই সে সুমির হাত ধরে টানা হেচড়া করতো। আমরাও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা দেখেছি। কিন্তু সূর্যকে তার পরিবারের লোকজন বাধা না দেয়ায় সে আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠে।

তারা আরো বলেন, একারণেই শনিবার বিকেলে সুমিকে একা পেয়ে স্নানের (গোসলের) সময় জাপটে ধরে শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণের চেষ্টা করে সূর্য। বখাটে সূর্যের কারণে একজন মেধাবী ছাত্রী অকালে ঝরে গেলো। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

এদিকে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেয়ার জন্য সুমির পরিবারের সদস্যদের ওপর বখাটে সূর্য রায়ের লোকজন চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ওয়ার্ড মেম্বার বজু নিহত সুমির বাবাকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনা আপস-মীমাংসা করার জন্যও চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল বলেন, হত্যার মামলায় ৩০৬ ধারায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করার জোর চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে আসামী একজন লম্পট চরিত্রের বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement