২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চিকিৎসাসেবাই বন্ধ করে দেয়া হলো

চিকিৎসাসেবাই বন্ধ করে দেয়া হলো - ছবি : সংগৃহীত

আঙ্গুলের ছাপ প্রদান করে কর্মস্থলে উপস্থিতি নিবন্ধন সম্পন্ন না করার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান ও পরিসংখ্যানবিদের সাথে বিতন্ডার জের ধরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি এবং মানববন্ধন করেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দেড় টা পর্যন্ত হাসপাতালের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে ডাঃ এ.কে.এম খাইরুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করা হয়। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। ঘটনা জানতে পেরে দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল করিম হাসপাতালে গিয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করলে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন প্রত্যাহার করা হয়।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ এ.কে.এম খাইরুজ্জামান চৌধুরী দাবি করেন, ‘আঙ্গুলের ছাপ প্রদান করে কর্মস্থলে উপস্থিতি নিবন্ধন সম্পন্ন না করার কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। মূলত পরিসংখ্যানবিদ হামিদার রহমান চিকিৎসকদের সাথে দুর্ব্যবহার, প্রাণ নাশের হুমকি ও রোগীর লোক কর্তৃক লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে অবিলম্বে হামিদার রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বদলির জন্য কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করা হয়। আমরা আগেও একাধিকবার সিভিল সার্জন বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি। কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ হামিদার রহমান বলেন, ‘ডাঃ এ.কে.এম খাইরুজ্জামান চৌধুরী ছাড়া কেউ এ ধরণের অভিযোগ আনবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সকল স্তরের হাসপাতালসমূহে বায়োমেট্রিক বা আঙ্গুলের ছাপ প্রদান পদ্ধতি চালু করার নিদের্শনা প্রদান করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র ও চিঠির প্রেক্ষিতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ এ.কে.এম খাইরুজ্জামানকে বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন না করার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ভাতাদি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।

কিন্তু ডাঃ এ.কে.এম খাইরুজ্জামান চৌধুরী আমার যোগসাজসে নাকি নোটিশ করা হয়েছে ইত্যাদি বলে প্রধান সহকারীর কক্ষে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে, মারতে আসে। অথচ উল্টো তিনি আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি করলেন। অহেতুক দোষারোপের ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ হাসনাত ইউসুফ জাকি বলেন, ‘ধর্মঘটের বিষয়টি আমি শুনেছি। হামিদার রহমানের যোগসাজসে নোটিশ করা হয়নি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ চিকিৎসকদের উপস্থিতি তদারকি করেন। অনলাইনে চিকিৎসকদের উপস্থিতি না পেয়ে আমাকে ব্যবস্থা নিতে বলায় আমি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। বর্তমানে আমি ছুটিতে ঢাকায় আছি।’
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘আমি ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কর্মবিরতি ও মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী ও পরিসংখ্যানবিদের সাথে কথা বলে জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত না করার অনুরোধ জানালে ওনারা মানববন্ধন ও কর্মবিরতি তুলে নেন।’

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ মো. কাশেম আলী জানান, ‘মানববন্ধন ও কর্মবিরতি কেন হয়েছে আমি এটি বিস্তারিত জানতে চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছি।’


আরো সংবাদ



premium cement