স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে ছুরিকাঘাত, স্ত্রী নিহত
- শেখ সাবীর আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৩৬
অভিমান আর কিছুটা কলহ ছাড়া নাকি দাম্পত্য জীবনটা পরিপূর্ণ হয় না। পূর্ণতা পায়না মনের আবেগ আর ভালোবাসাও। কিন্তু একটি নিছক দাম্পত্য বা পারিবারিক কলহের ফলাফল কতটা মারাত্মক হতে পারে? স্বামী সাজু মিয়া (২২) আর স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের (১৮) সংসারে চলছিল পারিবারিক কলহ। এক কথায়; দুই কথায়; কলহ চরমে পৌছালে স্বামী ছুরিকাঘাত করেন স্ত্রী শাহনাজকে এবং স্ত্রীও ছুরিকাঘাত করেন স্বামী সাজুকে।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন স্ত্রী শাহনাজ পারভীন। অপরদিকে স্ত্রীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন স্বামী সাজু মিয়া। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের কৃষ্ণপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ শাহানাজ পারভীন (১৮) উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের সাজু মিয়ার স্ত্রী ও পার্বতীপুর উপজেলার বৈগ্রামের সাহিদুল সরদারের মেয়ে। গুরুতর আহত স্বামী সাজু মিয়া (২২) কৃষ্ণপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধূ শাহানাজ পারভীনের পিতা সাহিদুল সরদার বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফুলবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রামবাসী ও ফুলবাড়ী থানার ওসি শেখ নাসিম হাবিব বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সাজু মিয়া ও স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের মধ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। একে-অপরের ছুরিকাঘাতে স্বামী সাজু মিয়া ও স্ত্রী শাহানাজ পারভীন উভয়েই গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রেজাউল করিম গৃহবধূ শাহানাজ পারভীনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন, গৃহবধূ শাহানাজ পারভীনের মৃত্যুর খবর শুনে, স্বামী সাজু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ নিহত শাহানাজ পারভীনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং গুরুতর আহত স্বামী সাজু মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
দামুড়হুদায় স্ত্রীর হাতে স্বামী ও মির্জাপুরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
নয়া দিগন্ত ডেস্ক, (০৮ জুলাই ২০১৮)
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় স্ত্রীর হাতে স্বামী ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) সংবাদদাতা জানান, দর্শনায় স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে উপজেলার দর্শনা পৌরসভার মোহাম্মদপুর গ্রামের মোটরসাইকেল মিস্ত্রি জাকির হোসেন (২৫) অন্যান্য দিনের মতো গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজের বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরদিন শুক্রবার সকাল ৮টায় তার স্ত্রী চিৎকার করে বলতে থাকে তার স্বামী ঘরের ফ্যানের সাথে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন।
এলাকাবাসী ছুটে এসে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার গলায় দাগ দেখতে পান এবং তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি দামুড়হুদা মডেল থানায় জানালে পুলিশ স্ত্রী বর্ষা খাতুনকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি শুকুমার বিশ্বাস জানান, তার স্ত্রীর কথায় সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর স্বামী পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে নিহতের স্বামী প্রাণকৃষ্ণ ও তার ভায়রা রনজিৎ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত শুক্রবার ভোর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসংলগ্ন উপজেলার গোড়াই গন্ধব্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত সলমলিকা (৩০) বাবার নাম নরেন্দ্র, শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার বীরবান্দা গ্রামের নরেন্দ্রের মেয়ে সলমলিকা ও তার ছোট বোন মিলে সন্তানসহ উপজেলার গোড়াই গন্ধব্যপাড়া গ্রামের গৌর ভিলায় ভাড়া থাকতেন।
সলমলিকার বোন স্বপ্না জানান, তার বোন-জামাই প্রাণকৃষ্ণ ও তার স্বামী রনজিৎ নাছির গ্রুপে শ্রমিকরে কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার সলমলিকা ও তার স্বামীর মধ্যে পারিবারিক কলহ হয়। এই কলহের জের ধরে তার স্বামী রনজিৎ ও বোন-জামাই প্রাণকৃষ্ণ ভোর রাতে বড় বোন সলমলিকাকে গলা কেটে হত্যার পর তারা পালিয়ে যায়। মির্জাপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে গলাকাটা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি মিজানুল হক মিজান বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরেই স্বামী প্রাণকৃষ্ণ ও তার বোন-জামাই রনজিৎ সলমলিকার গলা কেটে হত্যার পর পালিয়ে গেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।