২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এসএম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরের অভিযোগ

লাঙ্গলে ভোট দিলে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার হুমকি!

-

আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এসএম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর বলেছেন, এই আসনে কোনো ধরনের লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। লাঙ্গলের কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের গ্রেফতার, হয়রানি করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে পুলিশ ও নৌকার প্রতীকের লোকজন। তারা লাঙ্গলে ভোট দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার এবং তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার, হয়রানী বন্ধ না করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্টদের দায়ী থাকতে হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মিঠাপুকুরের বলদিপুকুরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম, হাফিজুর রহমান, মেজবাহুল ইসলাম মিলন, মোফাজ্জল হোসেন মধু, মোতলেব উদ্দিন, আমজাদ হোসেন, ফারাজ উদ্দিন, আযম খান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর অভিযোগ করে বলেন, এ আসনে মহাজোটের কোনো একক প্রার্থী নেই। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতিকের প্রার্থী বর্তমান এমপি এইচ এন আশিকুর রহমান, তার কর্মী সমর্থক এবং পুলিশ ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা এক হয়ে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। আমার বিজয় ঠেকাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্ডার আলোকে আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী ও উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক মোসলেম উদ্দিন বানিয়াকে গ্রেফতার করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার আতংক ছড়িয়ে দিয়েছে। আমার প্রথম সারির, উপজেলা ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির নেতাদের গ্রেফতারের জন্য বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে পুলিশ। আতংকে তারা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। তারপরেও রাতে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের স্ত্রী সন্তানদের হয়রানী করছে পুলিশ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আরো অভিযোগ করেন, নৌকার লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। তারা ভোটারদের হুমকি দিয়ে বলছে, যে কেন্দ্রে লাঙ্গল ফার্স্ট হবে- সেই কেন্দ্রের আশেপাশের সকল বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। আমার বিভিন্ন পয়েন্টে সাটানো পোস্টার তারা ছিঁড়ে ফেলেছে। আর আমার নেতা বানিয়াকে পোস্টার ছেড়া মামলায় চালান করেছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার পরিবার-পরিজন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের পুলিশ পাহারায় প্রতিটি এলাকায় ক্যাম্পিং করছে। আর আমার নেতাকর্মীদের পুলিশ ক্যাম্পেইন করতে দিচ্ছে না, হয়রানি করছে। এসব কারণে এখানে আমার কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গত ১১ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া প্রিজাইটিং অফিসার, সহকারী রিটার্র্নিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের বাতিল করে দল নিরপেক্ষ অথবা সকল দলের লোকদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং সহকারি প্রিজাইটিং অফিসার ও মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পিএস হিসিবে নিয়োগ পাওয়া মামুনুর রশিদের প্রত্যাহার চেয়ে লিখিত আবেদন করি। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত এ ব্যপারে কোনো ধরনের উদ্যোগ না নেয়ায় এখানে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। বরং এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, তার কর্মী-সমর্থক এবং পুলিশ ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা এক হয়ে আমার লাঙ্গলের বিজয় কেড়ে নেয়ার জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার, লাঙ্গলের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার, হয়রানি বন্ধ এবং সকল প্রার্থীকে সমান সুযোগ দিয়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোটের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহবান জানান। তা নাহলে লাঙ্গলের কর্মী-সমর্থকরা যদি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজনের আরপিও বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়- তাতে যেকোন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের দায়ী থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা এনামুল হাবীব জানান, যে কোনো অভিযোগ পাওয়ামাত্রই সেটি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

প্রসঙ্গত, এ আসনে আদালতের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী নির্বাচনে থাকতে পারছেন না। এখানে এখন মূলত মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টির এসএম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর এবং অপর অংশীদার আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকের এইচ এন আশিকুর রহমানের মধ্যে হবে মূল লড়াই। সেক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা যে দিকে ঝুঁকবেন-বিজয়ও সে দিকে ঝুঁকবে বলে মনে করেন ভোটাররা।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল