২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাবু সোনা হত্যা : স্ত্রী ও প্রেমিককে অভিযুক্ত করে চার্জশিট

পরকীয়া, পারিবারিক অশান্তি ও বিদ্বেষ - ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামীলীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা (৫৮) হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমীন মুক্তার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন রংপুর জেলা কোতোয়ালি থানার এসআই আল-আমিন। গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, মূলত পরকীয়া, পারিবারিক অশান্তি ও বিদ্বেষ থেকেই বাবু সোনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার স্ত্রী তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্নিগ্ধা সরকার দীপা এবং তার প্রেমিক একই স্কুলের শিক্ষক কামরুল ইসলাম। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে দুইজনেই হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেছেন। এছাড়া হত্যাকান্ডে দুই কিশোর সবুজ ও রোকনের সম্পৃক্ততা না থাকায় এবং মিলন মোহন্ত মারা যাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও বাবু সোনাকে খাওয়ানো ঘুমের ওষুধের দোকান সনাক্ত, তার মরদেহ বহনের কাজে ব্যবহৃত ভ্যান ও আলমিরাসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভাত ও দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবু সোনাকে খাওয়ান স্ত্রী দীপা। ঘটনার দুই ঘন্টা আগে থেকেই বাবু সোনার শোয়ার ঘরের পাশে অবস্থান নিয়ে ছিলেন কামরুল ইসলাম। ওষুধ খাওয়ানোর পর বাবু সোনা অচেতন হয়ে পড়লে কামরুল ঘরে ঢুকে দীপাসহ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাবু সোনাকে হত্যা করেন।

বাবু সোনা নিখোঁজের পর ৩১ মার্চ (শনিবার) কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও পরের দিন রোববার থানায় মামলা দায়ের করেন তার ছোটভাই সুশান্ত ভৌমিক সুভল। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বাবু সোনার স্ত্রী দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব আটক করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি এ হক্যাকা-ের কথা স্বীকার করেন এবং মরদেহের অবস্থান সম্পর্কে জানান।

ওইদিন রাত ২টার দিকে বাবু সোনার নিজ বাড়ি তাজহাট বাবুপাড়া থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া থেকে শিক্ষক কামরুল ইসলামের ঢাকায় বসবাসরত বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মাটি খুঁড়ে বাবু সোনার লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। এসময় গর্ত খোঁড়ার কাজে সহায়তা করার কারণে ওই এলাকার দুই কিশোর সবুজ ও রোকনকে আটক করা হয়। এর আগে পুলিশের হাতে আটক হন শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও বাবু সোনার ব্যক্তিগত সহকারী মিলন মোহন্ত। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান মিলন মোহন্ত এবং দীপা ও কামরুল কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

আরো পড়ুন :

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান অপহরণের অভিযোগ
লাকসাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা

লাকসামে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান কে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শাশুড়ী বকুল বেগম বাদী হয়ে মেয়ের জামাতা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ির বগাদিয়া গ্রামের মৃত.সুরুজ মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন সহ ৫জন কে অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার উপজেলার গোবিন্দপুর ইউপির ভাটবাড়ীয়া হাজী বাড়ীতে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ওই দিন রাতে মেয়ের জামাতা আলমগীর হোসেন, মাতা খোদেজা বেগম, বোন ছালেহা বেগম, সহপাঠি আবদুল মান্নান ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম একটি কালো রংয়ের হাইচ মাক্রোবাস নিয়ে স্ত্রী পিংকি আক্তার ও মেয়ে সাবেকুন নাহার আইমন (৬) কে জোরপুর্বক তুলে নেয়। তাদের চিৎকার শুনে শাশুড়ি বকুল বেগম গতিরোধ করার চেষ্টা চালায়। এসময় মেয়ের জামাতা ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদেরকে নিয়ে পালিয়ে যায়। অস্ত্রের আঘাতে শাশুড়ি বকুল বেগম (৫৫), স্ত্রীর ভাই মাইন উদ্দিন, চাচাত ভাই সাহাব উদ্দিন ও সেতারা বেগম গুরুতর আহত হয়।


আহতদের কে লাকসাম হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় শাশুড়ি বকুল বেগম বাদী হয়ে লাকসাম থানায় মেয়ের জামাতাসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করে।

শাশুড়ি বকুল বেগম আরো জানায়, গত ২০১২সালে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বগাদিয়া গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনের সাথে বিয়ে হয় মেয়ে পিংকি আক্তারের। বিয়ের পর তাদের সংসারে সাবেকুন নাহার আইমন (৫) ও তানহা আক্তার আইভি (২) নামে দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের পর স্বামী আলমগীর ভরণ-পোষণ দেয়া বন্ধ করে দিয়ে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকে।

স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে সোনাইমুড়ি থানায় গত দুইমাস পুর্বে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগের পর নির্যাতন আরো বেড়ে যাওয়ায় স্বামীর সংসার ছেড়ে দুই কন্যা সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। গত দেড় মাস পর্বে স্ত্রী পিংকি আক্তার তার স্বামীকে তালাক দিয়ে পত্র পাঠিয়ে দেয়।

লাকসাম থানা পুলিশের ওসি মনোজ কুমার দে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। স্ত্রী ও সন্তান উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement