২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘২৪ ঘন্টার মধ্যেই বর্জ্য অপসারণ’

সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা শাপলা চত্বরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন - ছবি: নয়া দিগন্ত

২৪ ঘন্টার মধ্যেই কোরবানীর পশুর বর্জ্য ও রক্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করায় খুশি রংপুর মহানগরবাসি। খোদ সিটি করপোরেশনের মেয়র নিজেই পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোন গড়িমসি হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার দুপুর ২ টায় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা শাপলা চত্বরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এসময় প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু, কাউন্সিলর মাহাবুবার রহমান মঞ্জু, মেয়রের একান্ত সচিব জাহিদ হোসেন লুসিড, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান শাহিনুর রহমান শাহিনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

বর্জ্য পরিস্কার প্রসঙ্গে নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডের কামারপাড়ার গৃহবধূ কহিনুর বেগম জানান, এবার কোরবানীর পশুর বর্জ্য ও রক্ত সাথে সাথেই পরিস্কার করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। ফলে এবার কোন দুর্গন্ধ হয়নি। কারণ অন্যান্য বছর অনেক বলার পরে বর্জ্য পরিস্কার করা হয়েছিল।

নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের দেওডোবা ডাঙ্গিরপাড়া এলাকার হারুন অর রশিদ জানান, এবার আমরা পশু কোরবানী করার আগেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আমাদের কাছে এসে বসেছিল। পশু জবেহ করার সাথে সাথেই তারা ভিনাইল ও ব্লিচিং পাউডার বর্জ্য পরিস্কার করে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। এতে আমরা খুব স্বাচ্ছন্ধবোধ করেছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এবার কোরবানীর পশু জবেহ করার জন্য সিটি করপোরেশন থেকে ৩৩ টি ওয়ার্ডের ১১৭টি স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সঠিক নিয়ম মেনে উত্তম পদ্ধতিতে পশু জবেহ করেন ১১৭ জন মৌলভী। এছাড়াও ১১৭ জন কসাই গরু ও ছাগলের গোশত প্রক্রিয়াজাত করেন। নির্ধারিত স্থান ছাড়াও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় মৌলভী দিয়ে পশু জবাই ও কসাই দিয়ে গোশত প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

এদিকে বেলা ১১ টার পর পরই পুরো নগরীতে বর্জ্য ও রক্ত পরিস্কারের জন্য ৫ জন ইন্সপেক্টর, ৪০ জন সুপারভাইজারের নেতৃত্বে ৫০৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নির্দিস্ট স্থান ও যেসব বাসাবাড়িতে পশু জবেহ হয়েছে সেখানে গিয়ে স্ট্যান্ডবাই থাকেন। তারা ভিনাইল স্প্রে ও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে সাথে সাথেই স্থানটি পরিস্কার করে দেন। এছাড়াও বর্জ্য ও রক্ত পরিবহনের জন্য ৪০ টি স্থানে ৪০ টি ট্রাক স্ট্যান্ডবাই ছিল। ২ টি পানির গাড়ি মোবাইল ভাবে চলাফেরা করেছে।

নির্দিষ্ট স্থান ছাড়াও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে যদি কেউ পশু জবেহ করে সেগুলো ট্রলি ভ্যান দিয়ে বড় ট্রাকের কাছে নিয়ে আসা হয়। লিকুইড বর্জ্যরে জন্য বেলচা ব্যবহার করা হয়। ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কোরবারীর বর্জ্য ও রক্ত পরিস্কার করা সম্ভব হয়।

রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান শাহিনুর রহমান শাহিন নয়া দিগন্তকে জানান, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কোরবানীর পশুর বর্জ্য পরিস্কার করার জন্য আমরা একটি মডেল তৈরি করেছিলাম। মেয়র স্যার নিজেই নামাজের পর থেকে নগরীর পুরো বর্জ্য পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেকারণেই কর্মীরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। কোন ঝামেলা ছাড়াই বর্জ্য দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।

রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা নয়া দিগন্তকে জানান, ৪০টি পিকাপভ্যান, ২ টি পানি গাড়িসহ তিন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ৩৩টি ওয়ার্ডকে ৪ টি জোনে বিভক্ত হয়ে বর্জ্য অপসারণে কাজ করেছে। যেখানে ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য ছিল সেখানেই আমাদের গাড়ি ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পৌঁছে গেছে।

মেয়র বলেন ফলে ঈদের নামাজের পর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা কোরবারী বর্জ্য ও রক্ত পরিস্কার করতে পেরেছি। পরের দিন বৃহস্পতিবার যারা কোরবানী দিয়েছেন। সেগুলোকেও একই নিয়মে পরিস্কার করা হয়েছে। এবার অনুমানিক ৫০ মেট্রিক টন বর্জ্য সংগ্রহ করে নগরীর নাচনিয়া ও শরেয়ারতল এলাকায় ডাম্পিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি এই কার্যক্রমে নগরবাসির স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহন করায় কৃতজ্ঞতা জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement