২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ড্রেনের ময়লা দিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হলো

-

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার দীর্ঘ দিনের বকেয়া প্রায় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকার বিল পরিশোধের জন্য নোটিশ দেয়ায় ড্রেনের ময়লা দিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিলেন সৈয়দপুর পৌর মেয়র। এতে বিদ্যুৎ অফিসের জরুরি গাড়িসহ লোকজন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এবং দূর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনায় এলাকার পরিবেশ নোংরা হয়ে পড়েছে। পরে প্রশাসনিক চাপে প্রায় ৬ ঘন্টা পর পৌরসভা কর্মচারীরা ওই ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করে দেয় বলে বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়। এসময় পর্যন্ত অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে অনেক জায়গা থেকে বিদ্যুতের সমস্যার কল পেয়েও তা ঠিক করার জন্য বিদ্যুৎ কর্মীরা যেতে পারেনি।

নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো) সৈয়দপুর বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী স্পন্ধন বসাক জানান, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের নোটিশ দেয়ায় পৌর মেয়র আক্রোশবশত এমন জঘন্য কাজ করেছেন। তিনি ইতিপূর্বে গত ২০ আগস্টও নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকেও মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। বোনের মৃত্যুর কারণে নির্বাহী প্রকৌশলীর পরিবর্তে আমি দায়িত্বে থাকায় অফিসিয়াল মোবাইলটি (০১৭৫৫৫৮৪৮৯৬ নাম্বার) আমার কাছে ছিল। সে সুবাদে মেয়রের ০১৮৩৯৯৩৩২৭০ নাম্বার থেকে কল করে বলা অকথ্য ভাষার গালিগালাজ ও হুমকি ধামকি আমি নিজেই শুনেছি।

তিনি জানান, সৈয়দপুর পৌরসভার প্রতিমাসে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল হয়। তারা সে বিল নিয়মিত পরিশোধ করেন না। প্রতি অর্থবছরের শেষে সৈয়দপুর বিদ্যুৎ বিভাগের পৌর কর বাবদ আমরা প্রায় ৩৯ লাখ ৪ হাজার ৫ শত টাকা পরিশোধ করি এসময় পৌরসভার বিদ্যুৎ বিলের সাথে সমন্বয় করে বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য বার বার বলা হলেও পৌর মেয়র তা না করায় দীর্ঘ দিনে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। এ বিল দেয়ার জন্য গত সপ্তাহে নোটিশ প্রদান করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার কর্মচারীদের দিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের প্রধান ফটকে ২১ আগস্ট মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে ড্রেনের নোংরা ময়লা আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দেয়। এতে অফিসে প্রবেশে আমরা চরম সমস্যায় পড়ি, সেসাথে জরুরি প্রয়োজনে আমাদের গাড়ি বাইরে যেতে না পারায় গ্রাহকদের ডাকে সারা দেয়ার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি হয়। এমনকি ফজরের নামাজের সময় মুসল্লিরা অফিস ক্যাম্পাসের মসজিদে প্রবেশ করতে পারেনি।

পরে বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার ঘটনাস্থলে সকাল ১০টায় উপস্থিত হয়ে বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন এবং ইউএনও স্যারকে জানান। তারপরই পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করে দেয়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার মুঠোফোনে জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে বিষয়টি স্যারকে অবগত করেছি। স্যার এ ব্যাপারে পৌর মেয়রের সাথে কথা বলেছেন কি না আমার জানা নেই।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: বজলুর রশীদ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিদ্যুৎ অফিস থেকে জানানো হয় তাদের অফিসের সামনে কে বা কারা ময়লা ফেলেছে। আমি ময়লাগুলো অপসারণে মেয়রকে অনুরোধ করায় তিনি তা অপসারণের ব্যবস্থা করেন।
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের মুঠোফোন নাম্বার ০১৮১৮০৪৩৬২১ ও ০১৭৫৮৬৬৩৬০৬ এ যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement