২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্ঘটনার কারণ জানালেন শ্রমিক নেতা

প্রতীকী ছবি। - সংগৃহীত

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের রংপুর বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক এমএ মজিদ বলেছেন, বাইরের দেশে একটি নতুন গাড়ি চলে ২৫ বছর। সেই গাড়ি আমাদের মালিকরা বাংলাদেশে কিনে এনে ৭০ বছর চালায়। এসব ফিটনেসবিহীন ও ভলকা গাড়ির কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা সতর্কভাবে গাড়ি চালাতে চাই।

রোববার দুপুরে রংপুর মহানগরীর ঢাকা কোচস্ট্যান্ডে সড়ক পরিবহন আইন ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সচেতনামূলক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। ইউনিয়নের জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম হারুনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোনাচুর রহমান মিন্টু, কোষাধ্যক্ষ শাহরিয়ার বিটুল, জাকির হোসেন চৌধুরী কাঞ্চন প্রমুখ।

এসময় শ্রমিক নেতা এমএ মজিদ বলেন, আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরা একমত। আমাদেরও ভুল আছে। আমরা ভুল শোধরাতে চাই। আমরা কাজ করতে চাই। যাতে আর সড়কে প্রাণ ঝড়ে না যায়। 

আমরা গাড়ির চালকদের নির্দেশনা দিয়েছি, চালকরা যেন ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের না করে। ভলকা গাড়ি যেন রাস্তায় বের না করে। লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালকরা যেন গাড়ি না চালায়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে শ্রমিক নেতা এম এ মজিদ বলেন, আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। সেজন্য যে জিনিসগুলো দরকার তা আমাদের করে দিতে হবে। আমরাও চাই রাস্তায় যেন আর কোন প্রাণ না ঝড়ে। তবে ছোট ছেলে মেয়েদের আন্দোলন নিয়ে কেউ যেন রাজনীতি করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, নতুন যে আইন হচ্ছে, সেটা যেন আমাদের জন্য সহনীয় হয়। আমাদের বিপক্ষে ওই আইন গেলে, আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো।

গণপরিবহন চলাচল বন্ধের ব্যপারে শ্রমিক নেতা মজিদ বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে আমাদের করার কিছুই নেই। বরং বাস চলাচল বন্ধের কারণে আমাদের শ্রমিকরা না খেয়ে মরছে। তবে কবে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে সে ব্যপারে কিছুই বলেন নি তিনি।

 

 

আরো দেখুন: এখনো চলছে ফিটনেস বিহীন গাড়ী

মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পর্যাপ্ত যানবাহননা থাকায় যাত্রীদের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এ সুযোগে কিছু অসাধূ পরিবহন ব্যবসায়ীরা যাত্রীদের থেকে দ্বিগুন টাকা ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীদের অভিযোগ আগে পাটুরিয়া থেকে গাবতলী পর্যন্ত ৭০ টাকা ভাড়া নেওয়া হত। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের কারনে পরিবহন কম যাতায়াত করার সুযোগে ভাড়া নিচ্ছে ১৫০ টাকা করে। এতে চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।এদিকে সারা দেশ যখন নিরাপদ সড়ক নিয়ে আন্দোলন করছে এসময়ে জেলার ফিটনেস বিহিন গাড়ী ও লাইসেন্সবিহিন চালকদের দেখা গেছে। নিরাপদ সড়কের বাস্তবায়ন করতে জেলা পুলিশের সদস্যরা জেলার বিভিন্ন চেকপোষ্টে বসালেও তাদের চোখ ফাকি দিয়ে ফিটনেস বিহিন গাড়ী চলাচল করছে।
অপর দিকে সকালে শহরে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের দাবী আদায়ের জন্যে মিছিল করেছে।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা এতে অংশগ্রহন করে।
সরেজমিনে শনিবার সকালে দেশের ২৪ টি জেলার যোগাযোগের মাধ্যম মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে,যোগাযোগ পরিবহন, যাত্রীসেবা পরিবহনের কিছুসংখ্যক ঢাকা মুখি বাস যাতায়াত করছে। এসব পরিবহন নবীনগর ও আমিনবাজার পর্যন্ত চলাচল করছে। এ সকল বাস পাটুরিয়া ঘাট থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছে ১৫০ টাকা, এবং নবীনগর পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা। কিন্তু সাধারণত পাটুরিয়া ঘাট থেকে গাবতলী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত যাত্রীদের ভাড়া মাত্র ৭০ টাকা। পরিবহন স্টাফরা দ্বিগুন ভাড়া নিলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।অতিরিক্ত ভাড়া ও যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় অনেক যাত্রীই তাদের গন্তব্যে না গিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। 
এ দিকে যাত্রীদের চাপ কম থাকায় লোকসান গুনছে পাটুরিয়া নৌ-রুটের লঞ্চ ঘাটের লঞ্চ মালিকেরা। কথা হয় শাপলা পরিবণ নামে একটি লঞ্চ চালক আবুল হোসেনের সাথে । তিনি জানান, ছাত্র আন্দোলনের আগে তারা দিনে ৪ থেকে ৬ টিপ দিতো। কিন্তু এখন যাত্রী না থাকার কারণে তারা এখন সারা দিনে একটি থেকে দুইটি টিপ দিতে পারছে না। এতে তাদের প্রতিদিনই লোকসান হচ্ছে বসে বসে সময় কাটাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, এ ভাবে আর কত দিন চলবে আল্লাহ জানেন এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
কথা হয় ঢাকা গামী বেশ কয়েকজন সাধারণ যাত্রীর সাথে। এসময় হানিফ মিয়ানামের এক যাত্রী জানান, আমি ঢাকায় রিক্সা চালাই। কয়েকদিন ধরে ছাত্রদের মারামারির কারণে আমি আমার দেশের বাড়ী রাজবাড়ীতে গিয়ে ছিলাম। আজকে ঢাকায় উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। কিন্তু পাটুরিয়া ঘাটে এসে শুনলাম গাবতলী পর্যন্ত বাসে ভাড়া ১৫০ টাকা আর নবীনগর পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা তাই আমি আর ঢাকায় যাবো না। আমি আমার বাড়িতে ফিরে যাবো ছাত্রদের আন্দোলন শেষ হলে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবো।
যোগাযোগ পরিবহন বাস চালক মহসিন জানান তার নিজের বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। তার কাছে বৈধ লাইসেন্স দেখতে চাইলে তিনি জানান, পুলিশের এক সার্জেন্ট তার কাগজপত্র নিয়ে গেছে। বাস ছাড়ার আগে তার কাগজ তাকে দিয়ে দেওয়া হবে।
পরিবহনে দ্বিগুন ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে পাটুরিয়া ঘাট এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক রাসেল আরাফাতের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পাটুরিয়া ঘাটে পরিবহনে দ্বিগুন ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে আমরা কোন অভিযোগ পায়নি। যদি এরকম কোন অভিযোগ পাই আমরা ব্যবস্থা নেব। এছাড়া তিনি বলেন ছাত্র আন্দোলনের জন্য দুর-পাল্লার কোন বাস এখন যাতায়াত করছে না, স্থানীয় কিছু বাস নবীনগর ও আমিন বাজার পর্যন্ত যাতায়াত করছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মহিউদ্দিন জানান,অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়াটা আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement