২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছাত্রীনিবাসে ধর্ষণ : বান্ধবীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

ছাত্রীনিবাসে ধর্ষণ : বান্ধবীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন - ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের একটি ছাত্রীনিবাসে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক তাজকির হোসেন ও সহযোগী বান্ধবী দুলালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক যাবিদ হাসান এই আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রোজিনা আখতার রোজি নগরীর লালবাগ বঙ্গভুমি ছাত্রীনিবাসে থাকতেন। একই এলাকার পূর্ব পরিচিত রংপুর সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী দুলালী বেগমও ওই ছাত্রীনিবাসে থাকতেন। ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর দুপুরে দুলালী বেগম তার জন্ম দিন উপলক্ষে কেককাটা অনুষ্ঠানের জন্য নিজের রুমে রোজিনা আখতারকে ডেকে নিয়ে যান। রোজিনা দুলালীর রুমে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বোরকা পরে চোখে চশমা লাগানো তাজকির হোসেন প্রবেশ করেন দুলালীর রুমে। কিছুক্ষণ পর দুলালী বেগম রুম থেকে বের হয়ে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ করে দেন। রুমে বোরখা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তাজকিরকে চিনতে পারেন রোজিনা।

এ সময় তাজকির হোসেন অস্ত্রের মুখে তাকে দুই দফায় ধর্ষণ করেন। পরে দুলালী বেগম দরজা খুলে দিলে তাজকির হোসেন বোরকা পরে রুম থেকে বের হয়ে যায়। এ ঘটনায় রোজিনা কোতয়ালী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করার পর পুলিশ আসামি তাজকির হোসেন ও দুলালী বেগমের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১২ জন সাক্ষ্য ও জেরা শেষে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক যাবিদ হাসান বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। আদেশে ২৫ হাজার হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে যাবজ্জীবন ছাড়াও ছয় মাসের কারাদণ্ডদেশ দেন।

রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি রফিক হাসনাইন এ্যাডভোকেট জানান, রায়ে বাদি পক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।

আরো পড়ুন :

পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা

সাতক্ষীরায় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে রানা সরদার (৩৫) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। একই মামলায় অপহরণের দায়ে তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ দণ্ডাদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামী রানা সরদার নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিলগঞ্জ গ্রামের মৃত পাচু সরদারের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামী রানা সরদারের বাড়ি নড়াইল জেলায় হলেও সে কলারোয়া উপজেলার খোরদো বাজার এলাকায় থাকতো। রানা সরদার ২০০৫ সালের ৮ জুলাই কলারোয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের খোরদো ব্র্যাক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৪) ও তার বান্ধবীকে (১২) অপহরণ করে যশোরের একটি হোটেলে নিয়ে স্ত্রী ও শালিকা পরিচয়ে রাখে এবং পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করে। এদিকে ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরায় খোঁঁজখবর নেওয়া শুরু করে। পরদিন মনিরামপুরের চাকলা খেয়াঘাটে এলাকাবাসী রানা সরদারকে আটক করে মারধর করে ওই দুই ছাত্রীর বাড়িতে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন গিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং ৯ জুলাই থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামীকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড এবং অপহরণের দায়ে তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড দেন।

সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু জানান, আসামি পলাতক রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement