২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৈয়দপুরে ঘাম আর পামওয়েলে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই

-

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। শ্রমিকের গায়ের ঘাম আর নিম্নমানের পামওয়েলের মিশ্রণে তৈরি এসব লাচ্ছা একশ্রেণির অসাধু ও মৌসুমী ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বাজারজাত হচ্ছে গোটা দেশে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য সচেতন মহল।

একটি সূত্র জানায়, সেমাই তৈরীর কারখানায় অবাধ আলো-বাতাস প্রবেশসহ উন্নত ব্যবস্থাপনা, কারিগরদের এ্যাপ্রোন ও বিশেষ ধরনের হাতমোজা পরা বাধ্যতামূলক। লাচ্ছার উপকরণ হিসেবে উন্নত ময়দা, ভেজিটেবল ফ্যাট ওয়েল, ডিম, ঘি, ডালডা ব্যবহার করার কথা। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না। তারা অল্প পুঁজিতে বেশি লাভের আশায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করছেন লাচ্ছা সেমাই। এসব ব্যবসায়ীর পাশাপাশি অনুমোদিত ফ্যাক্টরি মালিকরাও সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন। তাদের কারখানায়ও ভেজাল লাচ্ছা উৎপাদন করা হচ্ছে।

সরেজমিন শহরের মজা, সোনালী, শাহি, বাঁধন, ভাই-ভাই, রুচিতা, গাউসিয়া, মদিনা লাচ্ছা সেমাই কারখানায় ভেজাল লাচ্ছা তৈরির চিত্র পাওয়া গেছে। এসব কারখানার মেজে কাচা, শ্রমিকদের শরীরে এ্যাপ্রোন নেই। বরং খোলা ও ঘর্মাক্ত শরীরে কাজ করছে শ্রমিকরা। কারখানা ঘরের ভেতরে আলো-বাতাসের ব্যবস্থা নেই। মেজেতে ছড়ানো পামওয়েলের ড্রামের উপরই নিম্নমানের ময়দায় সেমাইর খামির করা হচ্ছে। অনেকে রুটি তৈরীর ট্রেতে শানছে ময়দা। মেশিনের পাশাপাশি পা দিয়েও খামির তৈরি করতে দেখা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, সাবান তৈরির এ্যানিমেল ফ্যাট, নিম্নমানের ময়দা, পামওয়েল এবং ঘি এর কৃত্রিম সুগন্ধি ছিটিয়ে এসব লাচ্ছা ভাজার পর নামি-দামি কোম্পানির নকল মোড়কে আবার খোলা দেয়া হচ্ছে বাজারে। প্যাকেটের গায়ে উৎপাদনের তারিখ, কোম্পানির নাম, মেয়াদ, উপকরণের নাম নেই। আবার অনেকে প্যাকেট ছাড়াই অনেকটা খোলা অবস্থায় করছে বাজারজাত। নিয়মনীতিকে অনেকটা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উৎপাদকরা পাইকারি ও খুচরা দরে এসব লাচ্ছা নীলফামারীসহ দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রংপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারসহ গোটা দেশে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।

সৈয়দপুর উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের ইনচার্জ ডা: মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, এসব ভেজাল লাচ্ছা খেলে মানুষের পেটের পীড়া, উদরাময়, লিভার সিরোসিস হতে পারে। বিশেষ করে এসব লাচ্ছা খাওয়ার ফলে শিশুদের সমস্যা বেশি হতে পারে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট এন্ড কনফেকশনারী প্রস্তুতকারক সমিতির নীলফামারী জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব জোবায়ের আলম বলেন, অবৈধ মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কারণে আমাদের লাচ্ছার বিক্রি কমে গেছে। পাশাপাশি সুনামও নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে সৈয়দপুরের সকল বৈধ ব্যবসায়ীরা ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সৈয়দপুর উপজেলার স্যানিটারি পরিদর্শক মো: আলতাফ হোসেন জানান, পচা ডিম, অ্যানিমেল ফ্যাট এবং কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধি মিশ্রিত ভেজাল লাচ্ছা সেমাই তৈরী যাতে না হয় কারখানাগুলোতে নজরদারি রাখা হয়েছে।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকলে অফিসার (আরএমও) আরিফুল হক সোহেল জানান, এসব লাচ্ছা সেমাই খেয়ে পেটে পীড়া, ডায়রিয়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব অস্বাস্থাকর খাবার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের

সকল