২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১২ বছর ধরে দঁড়ি বাধা সুজন মন্ডল

১২ বছর ধরে দঁড়ি বাধা সুজন মন্ডল - ছবি: নয়া দিগন্ত

পঁচিশ বছরের যুবক সুজন মন্ডল। বয়সের অর্ধেক সময় ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে দঁড়িতে বাধা অবস্থায় বাড়ির বারান্দায় কাটাতে হচ্ছে তাকে। সুজনকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সামর্থ হারিয়েছেন এমন দাবী করে স্বজনরা জানায়, উন্নত চিকিৎসা পেলে সে সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।

স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রাম মন্ডল পাড়া গ্রামের মৃত লিতব আলী মন্ডলের ছেলে সুজন মন্ডল। নয় ভাই-বোনের মধ্যে সুজন ৬ নম্বর। জন্মের পর থেকে সুজনের মাঝে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ ধরা পড়তো। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এ আচরণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওর বাবা বেঁচে থাকতে জমি-জমা বিক্রয় করে সাধ্যমতো চিকিৎসা করার চেষ্টা করেছে। তখন পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুজন কোনদিন ভালো হবে না বলে কিছু ওষুধ প্রদান করে সেখানকার চিকিৎসকরা। সেই ওষুধগুলো খাওয়ার পর সুজনের আচরণের আরো অবনতি হলে আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ১০ বছর আগে ওর বাবার মৃত্যুর পর সুজনের ভাগ্যে অর্থের অভাবে আর কোন উন্নত মানের চিকিৎসা জোটেনি। ঘরের বারান্দা সুজনের আশ্রয়স্থল হয়ে পড়ে।

সুজনের মা রিজিয়া বেওয়া বেগম বলেন, সুজনের বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা আলাদা বসবাস শুরু করেন। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় সুজন রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের উপর চড়াওসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটায় সুজন। তাই তাকে দঁড়িতে বেধে রাখা হয়েছে।

সুজনের বড় ভাই আজিজুল ইসলাম মন্ডল বলেন, সম্প্রতি সুজন প্রতিবন্ধি ভাতার আওতায় এসে কিছু টাকা ভাতা হিসেবে পেলেও তা ওর চিকিৎসার জন্য তা যথেষ্ট নয়। সরকারিভাবে যদি কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে সুজনের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হতো।

কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল বলেন, সুজনের বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানতাম না। তবে আমি বর্তমানে সুজনের উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার পরিষদ ও নিজের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। এছাড়াও আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে সুজনের বিষয়টি জানাবো। আশা করি তারাও সুজনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ইতিমধ্যে আমরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার কয়েকজন এরকম মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তেমনি ভাবে দ্রুত আমি নিজে সুজনের বাড়িতে গিয়ে তার সর্বশেষ অবস্থা জেনে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুজনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবো।


আরো সংবাদ



premium cement