২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

তুমি সুতোয় বেঁধেছ শাপলার ফুল, নাকি তোমার মন...

যদি শাপলার এই লালগালিচা দেখতে চান তাহলে যেতে হবে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিকিবিল হাওরে - ছবি : নয়া দিগন্ত

পূব আকাশে সূর্যের আলোকেও হার মানায় বিকিবিলে শতসহস্র রক্তিম লাল শাপলা। প্রথম দেখায় মুখ থেকে অস্ফুটে বেরিয়ে আসবে সুন্দর! যেন ফুলে ফুলে সাজানো হাওরের লালগালিচা। মনের অজান্তেই গুনগুনিয়ে উঠবেন, 'তুমি সুতোয় বেঁধেছ শাপলার ফুল, নাকি তোমার মন...'।

শীতের আগমন না ঘটলেও ষড়ঋতুর বাংলাদেশ সেজেছে লাল শাপলায়। এর সাথে রয়েছে দেশীয় নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির। মনে হয় যেন প্রকৃতি তার রূপের সাথে নিজে বাদ্যযন্ত্রে সুরের ঝরনাধারা ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিকভাবেই এই হাওরে ফুটছে আর্কষণীয় লাল শাপলা। যা হাওরের আশপাশের পরিবেশ আর গ্রামগুলোকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। ব্যাপারটা স্বপ্নের মতো।

যদি শাপলার এই লালগালিচা দেখতে চান তাহলে যেতে হবে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে বিকিবিল হাওরে। এই গ্রামটি শুধু লাল শাপলার উৎস নয়, এটি লাল শাপলার গ্রাম। লাল শাপলার বিলে ছুটে আসে স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা। তবে এখনো টাংগুয়ার হাওর, বারেকটিলা, যাদুকাটা, শহীদ সিরাজ লেকসহ সীমান্তের কয়েকটির ছড়ার মত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে এতোটা পরিচিতি পায়নি।

বর্ষাকালে হাওরটি পানিতে নিমজ্জিত থাকে। আর বাকি ছয় মাস এখানে চাষ হয় এক ফসলী বোরো জমি। মাত্র কয়েক মাসের জন্য এখানে শাপলা ফুটে। সূযের্র উপস্থিতির সাথে সাথে শাপলা তার আপন সৌন্দর্যকে গুটিয়ে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে গুটিয়ে পড়ে। সূর্যোদয় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাল শাপলার সৌন্দর্য দৃশ্যমান থাকে।

জানা যায়, বিকিবিল হাওরের এক 'শত কিয়ারের অধিক (৩০শতাংশে এক কিয়ায়) জমি নিয়ে এই শাপলার গালিচা। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাপলার উপস্থিতি দেখা যায় এ হাওরে। এখানে জন্মে লাল শাপলার পাশাপাশি সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলাও। তবে এর মধ্যে নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল শাপলার প্রতি আকর্ষণ সবার চেয়ে বেশী। সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলা মূলত লাল শাপলার তুলনায় অপ্রতুল। অনেকে স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার লোকজন শাপলা তুলে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকেন।

হাওরের পাশের গ্রামের বাসিন্দা সমাজের সেবক মাসুক মিয়াসহ অনেকেই জানান, কোনো প্রকার চাষ ছাড়াই জন্মেছে লাল শাপলা। গোটা এলাকাজুড়ে এখন লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়। বর্ষার শুরুতে শাপলা জন্ম হলেও হেমন্তের শিশির ভেজা রোদ মাখা সকালের জলাশয়ে চোখ পড়লে রঙ-বেরঙের শাপলার বাহারী রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনে হয় কোনো এক সাজানো ফুল বাগানের মধ্যে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছি। এ দৃশ্য চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না।

আশরাফুল আলম আকাশসহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তারা জানান, এই হাওরে আমারও জমি আছে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ ফুল ফোটা শুরু হয়ে প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত বিল ঝিল জলাশয় ও নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় লাল শাপলা। রান্নাবান্নার তরকারি হিসেবে ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সংগ্রহের কারণে সাদা শাপলার সংখ্যা দিন দিন সংকীর্ণ হচ্ছে। এই লাল-সাদা সব ধরনের শাপলা ফুলের গন্ধে গোটা হাওর মুখরিত হয়ে ছড়িয়ে পরে আশপাশের গ্রামগুলোতে। ছোটদের পাশাপাশি বড়দের কাছেও লাল শাপলা খুব প্রিয়।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে বাড়তি জনগণের চাপে আবাদি জমি ভরাট করে বাড়ি, পুকুর মাছের ঘের বানানো এবং অপরিকল্পিতভাবে জমিতে সার প্রয়োগের ফলে এর পরিমান যেমন কমেছে, তেমনি শাপলা জন্মানোর জায়গা ও কমে আসছে।


আরো সংবাদ



premium cement
অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান

সকল