২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২৮ বছর পর মেয়ের সাথে এইচএসসি পাস করলেন মা

২৮ বছর পর মেয়ের সাথে এইচএসসি পাস করলেন মা - সংগৃহীত

১৯৯৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষার আগেই তার বিয়ে হয়ে যায়। নতুন সংসারে গিয়ে তার আর সে বছর পরীক্ষায় বসা হয়নি। কিন্তু তাই বলে তিনি থেমে যাননি মাসুমা খাতুন। মেয়ের সাথেই সাফল্যের সাথে এসএসসি পাস করেন তিনি। আবার এবছর মেয়ের সাথে ভালো পয়েন্ট নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাসুমা খাতুন চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি পেয়েছেন জিপিএ-৪.১৩ পয়েন্ট। আর তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

মাসুমা খাতুন বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজের সেক্রেটারিয়েল সায়েন্স ট্রেডের ছাত্রী ছিলেন।

এর আগে মাসুমা খাতুন মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৭ সালে মেয়ের সাথে এসএসসি পাস করেন। এবার সেই মেয়ের সাথে একইসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলেন।

মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। বিয়ে হয় বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে। স্বামী আব্দুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহী (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। তার কর্মস্থল গাজীপুরে। মাসুমা খাতুনের দুই সন্তান। বড় ছেলে বনি আমিন বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র।

মাসুমা খাতুন বলেন, বিয়ের ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে। পরপর দুই ছেলে-মেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করি।

তিনি বলেন, সমাজে আর দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করা।

মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ জানান, তার জন্য একটু কষ্ট হলেও তিনি স্ত্রীর ইচ্ছাটার মর্যাদা দিয়েছেন। সে যতদূর পড়াশোনা করতে চাইবে তিনি তা চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement