২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গাকে উপজেলা করার দাবিতে মানববন্ধন

-

বৃটিশ বিরোধ আন্দোলনের সূতিকাগার ‘রক্তাক্ত সলঙ্গা’ খ্যাত সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানাকে উপজেলা করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সলঙ্গা সোসাইটি, ঢাকা। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশের স্মৃতিবিজরিত ঐতিহাসিক সলঙ্গাকে উপজেলা করার দাবি জানান। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের কাছে জোড় দাবি জানান। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্যদের কার্যকর ভূমিকা রাখারও অনুরোধ জানান।

সলঙ্গা সোসাইটি ঢাকা’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সলঙ্গার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট চক্ষু বিশেজ্ঞ অধ্যাপক উৎপল কুমার কুন্ডু, সাবেক ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী আব্দুল হাই সিদ্দিকী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক ও ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজাউল করিম সোহেল, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের রিপোর্টার ও ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য সোহেল রানা বক্তৃতা করেন।

ছাত্রনেতা ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সলঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক জহরুল ইসলাম খোকন, ব্যাংকার তৌহিদুর রহমান রাঙা, বার্তা২৪ ডটকমের স্টাফ রিপোর্টার শিহাবুল ইসলাম সোহাগ, ছাত্রনেতা রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মোহাম্মদ নাসিমসহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সলঙ্গাকে উপজেলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সর্বশেষ সদ্য বিদায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও সিরাজগঞ্জে সফরে গিয়ে হাজার হাজার মানুষের সামনে সলঙ্গাকে উপজেলা ও পৌরসভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন। গত ২৬ জুন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ সলঙ্গাকে উপজেলা করার দাবি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন। এর আগেও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন মিলন সলঙ্গাকে উপজেলা করার দাবি জাতীয় সংসদে তুলেছিলেন।

মানববন্ধনে জানানো হয়, রায়গঞ্জ উপজেলার ৩ ইউনিয়ন-ঘুড়কা, নলকা ও ধুবিল এবং উল্লাপাড়া উপজেলার ৩ ইউনিয়ন সলঙ্গা, হাটিকুমরুল ও রামকৃষ্ণপুর নিয়ে ২০০১ সালে সলঙ্গাকে প্রশাসনিক থানা ঘোষণা করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এই ৬ ইউনিয়নে জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। ভৌগলকিভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সলঙ্গা উত্তরঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। সলঙ্গা থানার দুই দিক দিয়ে মহাসড়ক চলে গেছে। যেগুলো রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা এবং খুলনা বিভাগের ৩-৪ টি জেলার মানুষ যাতায়াত করেন।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সূতিকাগার সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা। যা ‘রক্তাক্ত সলঙ্গা’ বা ‘সলঙ্গা বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত। ১৯২২ সালে মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশের নেতৃত্বে বৃটিশ পণ্য বর্জনের কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের গুলিতে সরকারি হিসাবেই সাড়ে ৪ হাজার মানুষ নিহত হন। ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও বরাবরই এই সলঙ্গা অবহেলিতই রয়ে গেছে। ২০-৩০ কিলোমিটার অতিক্রম করে উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জে গিয়ে প্রশাসনিকসহ নানা কার্যক্রম চালাতে হয় এ অঞ্চলের মানুষের। এতে প্রতিনিয়ত জনগণকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।


আরো সংবাদ



premium cement