২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঘুষ না দেয়ায় ৩ লাখ টাকার ডিম রাস্তায় ফেলে নষ্ট!

ঘুষ না দেয়ায় রাস্তায় ফেলে নষ্ট করা ডিম - নয়া দিগন্ত

নাটোরের বড়াইগ্রামে ঘুষ না দেয়ায় রশি কেটে পিকআপে থাকা পৌনে তিন লাখ টাকার ডিম রাস্তায় ফেলে দিয়েছে বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ। এতে প্রায় সব ডিম ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের আগ্রান সুতিরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অঅর এই ঘটনায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে ডিমের মালিক ব্যবসায়ী বিপ্লব কুমার সাহার।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী বিপ্লব কুমার সাহা ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ন-১৭-৩৭৮০) তে করে ৩৫ হাজার ১০০টি ডিম নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থেকে নাটোর যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী বিপ্লব। পথে বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রান সুতিরপাড় এলাকায় পিক-আপটি চাকা পাংচার হয়ে গেলে সেটি পাশের ফিডার রোডে নেমে যায়।

খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পিক-আপ উদ্ধারের জন্য রেকার ভাড়াসহ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। কিন্তু চালক এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যরা পিক-আপে ডিমের খাঁচি বাধার রশি চাকু দিয়ে কেটে দেয়। এতে ডিমের খাঁচি রাস্তায় পড়ে অধিকাংশই ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় মহিলারা রাস্তায় পড়ে থাকা ভাঙ্গাচোরা ডিম কুড়িয়ে নিচ্ছেন। রাস্তা জুড়ে ভাঙ্গা ডিমের হলুদ কুসুম ছড়িয়ে রয়েছে। ট্রাকের চালক-হেলপার ভাঙ্গা ডিম ফেলে প্লাষ্টিকের খাঁচিগুলো সংগ্রহ করছেন। রাস্তায় যত্রতত্র কেটে ফেলা রশিগুলো পড়ে রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় পুকুরের পাহারাদার শহীদুল ইসলাম ও আতাহার আলী জানান, চালক-হেলপার বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও পুলিশ পিকআপের রশিগুলো কেটে দিয়েছে। রশি না কাটলে ডিমগুলো নষ্ট হতো না। পুলিশ ডিমসহ পিকআপটি রেকারে করে থানায় নিয়ে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো?

পিকআপের চালক সিরাজগঞ্জ সদরের মজনু মিয়া জানান, আমার গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে ফিডার রাস্তায় নেমে গেলেও কোনো ডিম পড়েনি বা নষ্ট হয়নি। কিন্তু পুলিশের দাবিকৃত ঘুষ না দেয়ায় তারা রাগে ডিম বেধে রাখা রশি কেটে দেয়ায় সব ডিম রাস্তায় পড়ে গেছে।

নষ্ট হয়ে যাওয়া ডিমের মালিক সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের মেসার্স প্রীতিমণি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আমি চালকের মোবাইল দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সে সময় ডিম বেধে রাখা রশিগুলো না কাটার জন্য পুলিশের হাতেপায়ে ধরে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শুনেনি।

এ বিষয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আলিম হোসেন শিকদার রশি কেটে ডিম ফেলে দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে জানান, পিকআপটি ‘কাত হয়ে’ ডিম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ সময় রশিগুলোর কাটা টুকরো রাস্তায় পড়ে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলো রেকারের লোকেরা কাটতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement