২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএনপির প্রার্থী কে

নাটোর-১ আসনে ভোটাররা জানে না  - ছবি : সংগৃহীত

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে চার দিন ধরে থেমে গেছে ধানের শীষের প্রচারণা। সাধারণ কর্মী-সমর্থক ও ভোটাররা বুঝতে পারছেন না এখানে ধানের শীষের প্রার্থী কে। নির্বাচনের আর মাত্র ছয় দিন বাকি। তবুও ধানের শীষের প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে দুই প্রার্থী রয়েছেন ঢাকার আদালতপাড়ায়। ফলে চূড়ান্ত প্রার্থী নিয়ে অনিশ্চয়তায় ধানের শীষের সমর্থকেরা। ভোটারদের মুখে মুখে এখন শুধু একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছেÑ শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন ধানের শীষের কাণ্ডারি, বিমল নাকি শিরিন? 

সাধারণ ভোটার ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুরু থেকেই এ আসনটিতে বড় দুই দলের মধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ে ছিল বেশ নাটকীয়তা। শুরুতে মনোনয়ন যুদ্ধে বড় দুই দলসহ দুই ডজনেরও অধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে নেমেছিলেন। সে সময় বিএনপি থেকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিণী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিন এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। অন্য দিকে আওয়ামী লীগ থেকে দলের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুলকে প্রথমে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলেও দুই দিন পরই দলটি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল রমজান আলী সরকারকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়। ফলে এখানেও ঘটে দলীয় প্রার্থী বিভ্রাট। শেষ দিনে বকুলকে চূড়ান্ত মনোনয়নের দাবিতে তার সমর্থকেরা কাফনের কাপড় পরে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

পরদিনই বকুলকে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপর প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচারণা শুরু করে মাঠ গরম করে বেড়াচ্ছেন নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকেরা। 

অন্য দিকে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি পাওয়া দু’জনের মধ্যে শেষ দিনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনকে। কিন্তু প্রত্যাহারের শেষ দিনের শেষ মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মুনজুরুল ইসলাম বিমলকে ধানের শীষ প্রতীকে বরাদ্দ দেয়া হয়। সে সময় লালপুর-ঈশ্বরদী মহাসড়ক অবরোধ করেন বিএনপির শিরিন সমর্থক নেতাকর্মীরা। এরপর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় নামে ঐক্যফ্রন্টের মুনজুরুল ইসলাম বিমল। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক ৯ দিন আগে বিএনপি প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার শিরিনকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ হলে মুনজুরুল ইসলাম বিমল ছুটে যান ঢাকায়। হাইকোর্টের দেয়া এ নির্দেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে তিনিও এ বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার ঘোষণা দেন। এখন ধানের শীষের দুই প্রার্থী আদালতপাড়ায় আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকায় কে হচ্ছেন ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থী এ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে থমকে গেছে দলটির নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম।

এ আসনের বিএনপির একাধিক নেতা জানান, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটিতে বিএনপির প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করে দল ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আবার জোটগত কারণে বিএনপির এ সিদ্ধান্তকে অমান্য করে আদালতে গিয়ে কামরুন্নাহার শিরিনও ঠিক করেননি। আইনি লড়াইয়ের কারণে দুই প্রার্থীর এলাকায় অনুপস্থিতি সমর্থকদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করায় কর্মীরা ভোট প্রার্থনা থেকে বিরত আছেন।

এ ব্যাপারে কামরুন্নাহার শিরিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট তার পক্ষে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদেশনামা হাতে পেলে তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাবেন। সেখান থেকে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে তিনি মাঠে নামবেন। অন্য দিকে মুনজুরুল ইসলাম বিমল বলেন, ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন। তিনিই আবার ধানের শীষের প্রতীক বরাদ্দ পাবেন এমনটিই আশা প্রকাশ করেন। নির্বাচনের মাঠে তার সমর্থকদের তিনি প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেছেন বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement