২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ছিনতাইয়ে বাধা দেয়ায় যুবককে রাবি ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাত

অভিযুক্ত রাবি ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ ও আহত তারেক - নয়া দিগন্ত

ছিনতাইয়ে বাধা দেয়ায় এক যুবককে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগ নেতার ছুরি হামলায় আহত যুবকের নাম তারেক (২৬)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একটি হাড়ি পাতিলের দোকানে কাজ করেন। আহত তারেক রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার ধরমপুর এলাকার মোঃ আসলামের ছেলে। ছুরি হামলায় আহত তারেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী তারেকের বরাত দিয়ে তার বড়ভাই হুমায়ুন কবির জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠের উত্তর পাশে যাওয়ার সময় ইমতিয়াজসহ দুজন তারেকের পথরোধ করে এবং সাথে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে বলে।

তারেক অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজসহ দুজনের সাথে তারেকের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ইমতিয়াজ পেছন থেকে তারেকের পিঠের নিচের অংশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

পরে আহত অবস্থায় টহলরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত তারেকের পিঠে ১০টি সেলাই দেয়া হয়েছে বলে জানান হুমায়ুন।

এদিকে ছিনতাই চেষ্টা ও হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, ঘটনার সময় তারেক দুজনের কাছ থেকে ছিনতাই করছিলো। বিষয়টি টের পেয়ে আমি একাই ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় তারেক আমার গলায় ছুরি ধরে। একপর্যায়ে তারেক নিজের ছুরিকাঘাতেই আহত হয়।

ইমতিয়াজ আরো জানায়, তারেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফাঁড়ির পুলিশের কাছে ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

তবে ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, আহত তারেককে কেউ ছুরি মেরেছে। আর সে ছিনতাই করতে এসেছে এমন কোনো স্বীকারোক্তিও দেয়নি। তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। সুস্থ্য হওয়ার পর তার কাছ থেকে আসল ঘটনা জানা যাবে।

এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে তুচ্ছ ঘটনায় মারপিটসহ অতীতে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও নিজ সংগঠন বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এর আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মার্কেটের মাজদার রহমানের দোকানে কম্পিউটার ছিনতাইয়ের লক্ষ্যে দোকানে কর্মরত কর্মচারীদের মারধর করার অভিযোগ উঠে ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে। পরে শরীর চর্চা বিভাগের প্রহরী শফিকুল ইসলাম হৈ চৈ শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে সে। একপর্যায়ে লোকজন জড়ো হলে মোটরবাইকে পালিয়ে যায় ইমতিয়াজ।

এ ঘটনায় শরীর চর্চা বিভাগের প্রহরী ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজের শাস্তি ও ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানান। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে তুচ্ছ কারণে বেশ কয়েকবার রিক্সা চালকদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ছিনতাইকালে ইমতিয়াজ তারেককে ধরেছিলো। এ সময় হয়তো তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি বা মারধরের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি জানি না।


আরো সংবাদ



premium cement