২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নওগাঁ-৬ : দূরত্ব ঘুচল দুই ভাইয়ের, চাঙ্গা হলো বিএনপি

আলমগীর কবির ও আনোয়ার হোসেন বুলু - ছবি : সংগ্রহ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দুই ভাইয়ের মধ্যে চলে আসা এক যুগের বৈরি সম্পর্ক দূর হয়েছে, আর এতেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই ) আসনে বিএনপির নির্বাচনের মাঠ। দলের স্বার্থে বৈরীতা ভুলে আবার এক হয়েছেন দুই ভাই। স্থানীয়রা বলছেন, যে রাজনীতি আপন দুই ভাইয়ের মাঝে বৈরি সম্পকের পাহাড় তৈরি করেছিলো আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সেই রাজনীতিই আবার ওই ভ্রাতৃত্ববোধের সু-সম্পর্ক ফিরিয়ে আনলো। এই দুই ভাই হলেন নওগাঁ-৬ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত ৩ বারের সংসদ সদস্য ও জোট সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো: আলমগীর কবির ও তারই ছোট ভাই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: আনোয়ার হোসেন বুলু।

বিএনপি সরকারের সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে আবার এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তার ছোট ভাই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বুলু এই দুই উপজেলার বিএনপির হাল ধরেন। নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনে বিএনপির সংকটময় সময়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে দলকে চাঙ্গা রাখেন আনোয়ার হোসেন বুলু। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির টিকেটে তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য মো: ইসরাফিল আলমের কাছে পরাজিত হন।

তারপরও আনোয়ার হোসেন বুলু এই আসনে ধানের শীষের হাল ধরে রেখেছেন প্রায় ১ যুগ ধরে। এবারও তাকেই মনোনয়ন দেওয়ার দাবি ছিলো এই আসনের বিএনপির নেতা-কর্মীদের; কিন্তু হঠাৎ করেই নাটকীয়ভাবে তার বড় ভাই আলমগীর কবীর দীর্ঘ প্রায় ১২বছর পর পুনরায় বিএনপিতে ফিরে আসেন। এতবছর পর রাজনীতিতে আলমগীর কবিরের ফিরে আসা নিয়ে বিএনপি নেতা ও এলাকাবাসীদের মাঝে শুরু হয় নতুন হিসাব-নিকাশের। শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি থেকে ধানের শীষের মনোনিত প্রার্থী করা হয় তাকেই।

এতে দুই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, হতাশা, চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের দেখা দিয়েছিলো। অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কেউ রাজনীতি করবে না, এমনকি ধানের শীষে ভোটও দিবে না বলেও বলতে শোনা গেছে। অপরদিকে গত ২২ নভেম্বরে নওগাঁ-৬ আসনের বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতারা আলমগীর কবীরকে অবাঞ্চিতও ঘোষণা করে।

কিন্তু হঠাৎ করেই দুই ভাইয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক ফিরে আসে। বর্তমানে দুই ভাই এক হয়ে নওগাঁ-৬ আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করার লক্ষে্য একই মঞ্চে ধানের শীষের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন। দুই ভাই এক সঙ্গে নির্বাচনী গণসংযোগ, উঠান বৈঠন, মতবিনিময় সভাসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী দুই ভাইয়ের ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। শুধু তাই নয় এই বিষয়টি এই আসনে বিভক্ত বিএনপিকে জোড়া লাগিয়ে দেওয়ার কারণে বিএনপি দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এখন চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। আবারো তাই আসনটি উদ্ধারে আশাবাদী তারা।

রাণীনগর থানা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএস আল ফারুক জেমস বলেন, নওগাঁ-৬ আসনে বিএনপি বলতে এই দুই ভাইকে বোঝায়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দুই ভাইয়ের সাথে বিএনপির রাজনীতি করে আসছি। দুই ভাই এক হওয়ার কারণে আমরাও নতুন করে রাজনীতি করার অনুপ্রেরণা পেলাম যা কিছুদিন আগেও ছিল না। দুই ভাইয়ের মিলন অবশ্যই আমাদের জন্য ইতিবাচক। কারণ দুই মেরুর মানুষ এখন একত্রিত। আগামী নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। কারণ আমাদের মাঝে আর কোন দলীয় কোন্দল নেই। এখন আমরা সবাই হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে কাজ করবো।


আরো সংবাদ



premium cement