২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে তিন লাখ টাকা লুট

-

নওগাঁর রাণীনগরে গৃহবধূকে অস্ত্রের মূখে পণবন্দী করে প্রায় তিন লক্ষ টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। টাকা লুটের ঘটনা চেপে রাখতে গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সালিস বৈঠক করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউপি’র নারায়ন পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মহসিন আলী (১৭) গত ১ জুলাই সকাল সাড়ে ৯ টায় স্থানীয় একটি বাড়িতে প্রবেশ করে। এর পর ওই বাড়ির গৃহবধূকে একা পেয়ে ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে তাকে পণবন্দী করে আলমারি থেকে থেকে দুই লক্ষ আশি হাজার টাকা লুট করে নেয়।

টাকা লুটের ঘটনা চাপা রাখতে ধারালো অস্ত্রের মূখে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে রাখে। ঘটনা কাউকে জানালে এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপর গৃহবধূর কাছে তার স্বর্ণালঙ্কার চায়।

এসময় গৃহবধূ মহসিনকে ওই ঘরে রেখে অন্য ঘর থেকে চাবি নিয়ে আসার কথা বলে কৌশলে বাড়ির বাহিরে যায়। এরপর প্রতিবেশি কয়েকজন মহিলাকে ডেকে আনে। মহিলারা মহসিনকে হাতে-নাতে আটক করলেও দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান , নারায়ন পাড়া গ্রামের তমেজ উদ্দীনের ছেলে শহিদুল ইসলামের (৩৫) সহায়তায় মহসিন ওই গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে। গৃহবধু তার স্বামীকে জানালে ওই দিন বিকেলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মহসিনকে আবাদপুকুর এলাকা থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

গৃহকর্তা অভিযোগ করেন , মোবাইল ফোনে ধারনকৃত ভিডিওর মেমোরি মহসিনের কাছ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম নিয়ে নেন। তার কাছ থেকে ভিডিওর মেমোরি চাইলে তাকে না দিয়ে চেয়ারম্যান ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলেন।

এছাড়া ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের কথা বলে মহসিনকে ছেড়ে দেয়া হয়। এর পর ওই রাতেই নারায়ন পাড়া গ্রামে একটি সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কোন সমাধান না আসায় ৯ জুলাই আবারো সালিস বৈঠকে বসেন। সে দিনও কোন সমাধান করতে না পেরে গত শুক্রবার রাতে পুনরায় সালিস ডাকা হয় ।

ওই সালিসে এলাকার মাছ চুরির ঘটনাকে প্রাধান্য দিয়ে মূলঘটনাকে ধামা-চাপা দিতে লাগলে সালিসে হট্টগোল বেঁধে যায়। সালিস সমাপ্ত না করেই সবাই সেখান থেকে চলে যায় ।

এঘটনায় সালিসী বৈঠকের সভাপতি মুনছুর আলী জানান, লোকজনের হট্রগোলে কারণে  চেয়ারম্যান রাগ করে সালিস স্থগিত করেছেন। ফলে বিষয়টি ফয়সালা করা সম্ভব হয়নি।

চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম জানান, মোবাইলে ভিডিও করার ঘটনা আমার জানা নেই। তাছাড়া অভিযুক্ত মহসিন নাবালক, তাই তার সঠিক বিচার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ঘটনার দিনই মহসিনের অভিভাবকরা তাকে শাসন করেছে। ঘটনা সেখানেই মীমাংসা হয়েছে।

এব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, এরকম ঘটনা আমার জানা নেই বা কেউ জানায়নি। এবিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement