২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নওগাঁয় এক প্রসূতির ৬টি মৃত সন্তান প্রসব

নওগাঁয় এক প্রসূতির ৬টি মৃত সন্তান প্রসব - ছবি : নয়া দিগন্ত

নওগাঁ সদর হাসপাতালে মৌসুমী আখতার নামের এক প্রসুতি ৬টি মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি নওগাঁ সদর হাসপাতালে মৃত সন্তান প্রসব করেন। গর্ভবতী হওয়ার ৪মাসের মধ্যেই এই প্রসবের ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মুনির আলী আকন্দ।

মৌসুমীর স্বামী শহরের খাস নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, ২০১০ সালে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ভরট্র কাঠের ডাঙ্গা গ্রামের ফজের আলীর মেয়ে মৌসুমীর সাথে তার বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কোন সন্তান হয়নি। গত এপ্রিল মাসে তাঁর স্ত্রীর গর্ভে সন্তান আসে।

স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে নওগাঁ একটি ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে আলট্রাসোনোগ্রাম করার পর জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীর পেটে ৬টি সন্তান রয়েছে। এরপর থেকে গাইনী ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন মৌসুমী। হঠাৎ করে গত শুক্রবার বিকেলে তাঁর স্ত্রী মৌসুমী অসুস্থ হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে নওগাঁ শহরের খাস নওগাঁয় স্বামী রানার বাসায় একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন । এরপরই মৌসুমীকে রাত ৮টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন শনিবার সকালে প্রসব করেন আরো ৫ মৃত সন্তান।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মুনির আলী আকন্দ জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আরো ৫টি মৃত সন্তান প্রসব করেন মৌসুমী। সন্তানদের বয়স প্রায় ৪মাস । ওই ৬ সন্তান মারা গেলেও মৌসুমী সুস্থ রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুন : 

‘কাফনের কাপড় পর্যন্ত লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা’
নড়াইল সংবাদদাতা
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামে একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বাদীপক্ষের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে একটি পরিবার অসহায় জীবনযাপন করছে। বাদীপক্ষের দুর্বৃত্তরা যাদবপুর গ্রামের দুলাল মোল্যার (৬৫) বাড়িতে হামলা চালিয়ে তিনটি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া স্বর্ণালংকার, টাকা, পুকুরের মাছ, টিউবওয়েল, জমির ধান, আসবাবপত্র এবং হজের সময় সৌদিআরব থেকে আনা কাফনের কাপড় পর্যন্ত লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

দুলাল মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের পান দোকানি সাঈদ ভূঁইয়া (৬০) হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আমার বাড়িতে দু’দফা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে বাদীপক্ষের লোকজন। আমার পরিবারের কেউ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নয়। এমনকি আমরা এ মামলার আসামিও নই। তবুও বাদীপক্ষের অব্যাহত অত্যাচারে বাড়িঘরে থাকতে পারছি না।

তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে তিন মাসে দুই বার বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এরই মধ্যে গত ১২ জুলাই বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আমার বাড়িতে ভাংচুর করে চিহিৃত দুর্বৃত্তরা। তিনটি ঘরের জানালা, দরজাসহ আসবাবপত্র কুপিয়ে ও ভাংচুর করে সবকিছু তছনছ করে।

দুলাল মোল্লা অভিযোগ করেন, যাবদপুর গ্রামের কিবরিয়া গাজীর নেতৃত্বে হুমাউন শেখ, জুবা শেখ, রমজান শেখ, রাসেল গাজী, জাকির গাজী, হাদিউর সরদার, হাসিকুল সরদার, সেলিম ভূঁইয়া ও মহব্বত ভূঁইয়াসহ বেশ কয়েকজন বাড়িঘরে হামলা চালায়। হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করতে গেলে দৌঁড়ে পালাই। আমাদের পরিবার আওয়ামী লীগ সমর্থক হলেও দুইবার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। আর সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে আমাদের বাড়ি প্রায় এক কিলোমিটার দুরে হলেও আমাদের ওপর অত্যাচার চলছে।

দুলাল মোল্লার স্ত্রী জানান, দুলাল মোল্যা বাড়িতে এসেছেন এমন খবর শুনে কিবরিয়া গাজীর নেতৃত্বে তার লোকজন গত ১২ জুলাই বিকেলে আমার স্বামীকে খুন করতে যায়। আতচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, এর আগে আমাদের বাড়ি থেকে চিহিৃত দুর্বৃত্তরা প্রায় আট ভরি স্বর্ণালংকার, প্রায় ৩০ হাজার টাকা, খাটসহ বিভিন্ন আসবাপত্র লুট করে। এমনকি ২০১৪ সালে হজ পালন করে সৌদিআরব থেকে আনা আমাদের দু’জনের (স্বামী-স্ত্রী) কাফনের কাপড় পর্যন্ত লুট করে নিয়ে গেছে তারা।

তিনি জানান, পুকুরের প্রায় ১০ মণ মাছও লুট করেছে। এমনকি টিউবওয়েল পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। প্রায় ১৮০ শতক জমির বোরো ধান কেটে নিয়ে গেছে। রোযার ঈদ আমরা বাড়িতে করতে পারিনি। আমাদের পরিবারের ১৩ সদস্য বাড়িঘর ছাড়া। ছেলেরা কর্মস্থল থেকে ছুটি পেলেও বাড়িতে আসতে পারছে না। আমি এবং আমার স্বামী দিনেরবেলা মাঝে-মধ্যে বাড়িতে আসলেও দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। আমাদের সামনেই বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাংচুর চালায়। ভয়ে কিছু বলতে পারি না। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।

প্রতিবেশিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুলাল মোল্যার পরিবারের সদস্যরা নিরীহ ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ। অথচ বাদীপক্ষের লোকজনের ভয়ে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাদবপুর গ্রামের আরো ৩০টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে কিবরিয়া গাজীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে কিবরিয়া গাজীর সমর্থক হাদিউর সরদার বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। দুলাল মোল্যার ওপর দু’টি ছেলে হামলা করতে গেলে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।

কালিয়া থানার ওসি শেখ শমসের আলী বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ৩১ মার্চ যাদবপুর গ্রামের পান দোকানি সাঈদ ভূঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই গ্রামের কিবরিয়া গাজীর সঙ্গে হেমায়েত মুন্সির দীঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। নিহত সাঈদ ভূঁইয়া কিবরিয়া গাজীর সমর্থক।


আরো সংবাদ



premium cement