২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পুকুরে বস্তাবন্দী নারী : অবশেষে জীবিত উদ্ধার

-

নওগাঁর রাণীনগরে চামেলি আক্তার চায়না (৩৬) নামের এক গৃহবধূকে হাত-পা বাধা বস্তাবন্দী অবস্থায় পুকুর থেকে  উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। তাকে মূমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এমন ঘটনা তার গর্ভের কথিত সন্তানকে কেন্দ্র করে ঘটেছে নাকি অর্থ-সম্পদই তার জীবনে কাল হয়েছে তা নিয়ে চলছে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে উপজেলার পারইল ইউনিয়নের রাতলাই গ্রামে।


স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, ওই গ্রামের মৃত দলিল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ গত ৯ বছর আগে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার উজ্জলতা গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে গত ৯ বছরেও সন্তান জন্ম দিতে পারেনি চামেলী।


এমতাবস্থায় চলতি মাসের ১ তারিখে আবুল কালাম আজাদ মারা যান। এর মাত্র ৮ দিনের মাথায় আজাদের বাবা দলিল উদ্দীনও মারা যান। বাবা-ছেলের আত্মার মাগফেরাদ কামনায় গত বৃহস্পতিবার মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করে পরিবারের রোকজন।
পরিবারের লোকজন জানান,গত ৯ বছরেও চামেলি কোনো সন্তান জন্ম দিতে না পারলেও আজাদ মারা যাবার দিনে দাফন-কাফন শেষে হঠাৎ করেই চামেলি জানান, তার গর্ভে দু’মাসের সন্তান রয়েছে । বিষয়টি সবার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলে গত বৃহস্পতিবার মিলাদ শেষে চামেলির স্বামীর পরিবার থেকে তার গর্ভে আদৌ সন্তান রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার দাবি জানানো হয়।

এতে চামেলির বাবার পরিবারের লোকজন বসে আলোচনা সাপেক্ষে শনিবার আদমদীঘি গিয়ে গর্ভে সন্তান থাকা না থাকার বিষয়টি পরীক্ষা করার দিন নির্ধারণ করেন। এরই মধ্যে ওই বাড়িতে মিলাদ মাহফিলে অংশ নিতে আসা আত্মীয় স্বজনসহ সবাই শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

শনিবার খুব সকালে মসজিদ থেকে নামাজ শেষে মুসল্লিরা বাড়ি ফেরার সময় বাড়ির পাশে পুকুরে চামেলির বস্তার মধ্যে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। সাথে সাথে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখে নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুপুর নাগাদ বগুড়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চামেলির হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বস্তায় ভরা থাকলেও গলা থেকে মুখ-মন্ডল বস্তার বাহিরে ছিল। তবে কারা কেন এঘটনা ঘটিয়েছে তা স্পষ্ট করে কেউ বলতে না পারলেও গর্ভে কথিত সন্তান এবং কালামের অর্থ-সম্পদের কারনেই এই পরিনতি হতে পারে বলে এলাকায় আলোচনা চলছে।

এব্যাপারে চামেলির দেবর আলীম উদ্দীন জানান, চামেলির গর্ভে সন্তান রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য শনিবার দিন নির্ধারণ করা ছিল । রাতে খাবার খেয়ে আত্মীয় স্বজন নিয়ে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। খুব সকালে জানতে পেরেছি চামেলিকে বস্তা বন্দি অবস্থায় পুকুর থেকে লোকজন উদ্ধার করেছে। সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি দাবি করে জানান, হাসপাতালে তার বোনসহ স্বজনদের মারপিট করেছে চামেলির স্বজনরা। তবে ওই রাতে চামেলি ও তার মা এক রুমে ঘুমিয়ে ছিল। কেন কি কারনে এমনটা ঘটল তা বলতে পারছেন না তিনি।

এ ব্যাপারে চামেলির বাবা আব্দুল হামিদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কিছইু বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান,খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আলামত হিসেবে বস্তা,দড়ি এবং পায়ের স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়েছে । কারা কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বা কারা জড়িত রয়েছে তা গুরুত্বের সাথে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পড়ুন :

নড়াইলে গণধর্ষণ মামলার দুই আসামি গ্রেফতার
ফরহাদ খান, নড়াইল

নড়াইল সদরের হবখালী ইউনিয়নের সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পলিশ। শনিবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 
এরা হলো-সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামের হালিম মিনার ছেলে শাহজালাল মিনা (২৩) এবং একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে এনামুল (২৭)। 

এনামুলকে সুবুদ্ধিডাঙ্গা থেকে এবং শাহজালালকে মাগুরার শালিখা উপজেলার খাটোরসুইতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সদর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, এ মামলার এজাহারভূক্ত আসামিদের পাশাপাশি এনামুলের সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া রফিকুল মিনা (৩০) ও মাসুম মিনাকে (২৫) গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জানাযায়, গত ১৯ জুন রাতে নড়াইলের সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরেরদিন তিনজনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের করে ভূক্তভোগী মেয়েটি। নড়াইল সদরের ডাঙ্গাসিঙ্গীয়া গ্রামের ভূক্তভোগী মেয়েটিকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।


ঘটনার দিন স্কুল পড়ুয়া মেয়েটি প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে যশোর থেকে নড়াইলে আসছিলো। নড়াইলের হবখালী আদর্শ কলেজ এলাকায় পৌঁছালে অটোবাইকটি রাত ৯টার দিকে তাদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই এলাকার মাসুমের দোকানের কাছে পৌঁছালে ৮-৯ জন লোক তাদের (প্রেমিক-প্রেমিকা) পথরোধ করে। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত রফিকুল মিনা, শাহজালাল মিনা ও মাসুম মিনা হবখালী কলেজ এলাকায় প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে পাটক্ষেতে নিয়ে প্রেমিকা গণধর্ষণ করে এবং বুক, মুখ ও হাতের বিভিন্ন অংশে জখম করে। 

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণের পর মেয়েটি অসুস্থ হলে পড়লে অভিযুক্ত যুবকেরা তাকে (মেয়েটি) ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়। রাত ১২টার দিকে প্রেমিকসহ স্থানীয় তিনজন ভূক্তভোগী মেয়েটিকে উদ্ধার করে সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে শাকিলের বাড়িতে নিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলেন। পরে পুলিশ এসে প্রেমিক-প্রেমিকা উদ্ধার করে নড়াইল সদর থানায় নিয়ে আসে এবং হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করে।


আরো সংবাদ



premium cement