২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানুষ বেচাকেনার হাট

কাজের আশায় এভাবেই কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া হাটে অপেক্ষা করছেন শ্রমিকরা - নয়া দিগন্ত

যেকোনো হাটেরই সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো টাকার বিনিময়ে পণ্য বেচাকেনা। তবে এই সাধারণ নিয়মের বাইরে এমন হাটও আছে যেখানে টাকার বিনিময়ে শুধু পণ্য নয় মানুষ ও বিক্রি হয় । কারণ সে হাটে মানুষ নিজেরাই পণ্য। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া তেমনই একটি হাট।

এই হাটে নির্ধারিত একটি সময়ের জন্য একজন শ্রমিক আরেকজনের কাছে বিক্রি হয়ে যান। আর যারা বিক্রি হন তারা সবাই বাদাম, কাউন, তিল, ধান ও মাটি কাটার শ্রমিক। মৌসুমি ফসল কাটার জন্য নাটুয়ারপাড়া, আলমপুর, কুমারিয়াবাড়ী, পানাগাড়ী, রতনকান্দি ও সোনামুখী এলাকায় শ্রমিকদের ব্যাপক চাহিদা। আর এখানেই আশে-পাশের জেলা থেকে নিয়মিত শ্রমিকরা এসে থাকে। আর এসকল শ্রমিকরাই অন্যের কাছে বিক্রি হয়ে থাকেন সাময়িক সময়ের জন্য।

এর মধ্যে নাটুয়ারপাড়া হচ্ছে অন্যতম। প্রতি হাটের দিন এই হাট বেশ জমে ওঠে। এই সময় কাজিপুরের মাঠে মাঠে বাদাম, কাউন ও তিলের সমারোহ থাকে। শ্রমিকের দামও থাকে বেশ চড়া।

বুধবার নাটুয়ারপাড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, কারো হাতে বাঁশের তৈরি বাইং, কারো হাতে ব্যাগ। ব্যাগে হালকা কাপড়-চোপর আর কাঁচি। কেউ বসে আছে, কেই দাঁড়িয়ে।

হাটের ভেতরে ঢুকতেই এক শ্রমিক হ্যান্ডশেইকের জন্য হাত বাড়িয়ে বললেন, ‘মামা কামলা লাগবো? কত দিবেন?’ বাড়ানো হাত ধরেই সাংবাদিক পরিচয়ে কথা হয় তার সাথে। তার নাম আব্দুর রশিদ (৪৮)। বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরীল গ্রামে। তিনিসহ সাতজনের একটি দল ওইদিনই নাটুয়ারপাড়া আসেন। অন্য ছয়জন ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছেন। তিনি আরো বেশি দামে বিক্রি হওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে আসেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এখন কোনো কাজ নেই। বইসা থাইকা কি করব? তাই এখানে বাদাম, তিল ও মাটি কাটার জন্য আইছি। কিছু টাকা জমিয়ে চলা (চলে)যামু।’

রংপুর থেকে এসেছেন দুদু মিয়া (৪৬)। এ দলেও সদস্য ৯ জন । দুদু মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এখন কোনো কাজ নাই। বইসা থাকার চেয়ে বেগার খাটা ভালো। ১০/১৫ দিন বাদাম, তিল ও মাটি কাইটে চইল্লা যামু।’ প্রতি বছরই তিনি এই এলাকায় বাদাম তোলা, তিল ও কাউন কাটতে আসনে বলে জানান।

আক্ষেপ করে দুদু জানান, তার ৮ বিঘা জমি ছিল। ১৬ বছর আগে রাক্ষেষে নদী তা কেড়ে নিয়েছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে এখন অন্যের জায়গায় থাকেন। এজন্য তাকে ভাড়া দিতে হয়। তার দলে রাশেদ নামে নবম শ্রেণীর একজন ছাত্রও আছে। রাশেদ বলেন, ‘এখন ইসকুল (স্কুল) বন্ধ আছে। তাই আব্বার সাথে বাদাম তোলা ও কাউন কাটবার আইছি’।

বগুড়ার ধুটের বাঁশপাতা গ্রাম থেকে আসা একটি দলের প্রধান হলেন ফললুল হক (৪৫)। এ দলের সদস্য ৮ জন। ফললুল হক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এখন কোনো কাজ নেই। মোকলেছুর রহমান, কুদ্দুস, সোহারাফ হোসেন, গোলাম হোসেন, সাইদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, জহুরুল ইসলাম নন।
উত্তরবঙ্গের রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন


আরো সংবাদ



premium cement
চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলার শিরোপা বাঘা শরীফের হাতে ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি করা জটিল হলেও সম্ভব : রাষ্ট্রদূত ফার্নান্দো শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি তামাকের ব্যবহার রোধে কর বাড়ানোর আহ্বান ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণসভা টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ, আদেশ ২৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্য আফতাব হোসেনের ইন্তেকাল শনিবার থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রস্তুত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হলেন সাব্বির আহমেদ ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধানবিরোধী নয় গাজীপুরে জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করার নিন্দা

সকল