২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রযুক্তি দুনিয়ার ক্ষমতাধর জুটি

মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস -

প্রযুক্তি দুনিয়াকে আলোকিত করে চলছে বিশ্বের নানান প্রান্তের মানুষ। এক্ষেত্রে সফলতার অন্যতম ধারক হিসেবে কাজ করছে কিছু জুটি। প্রেম-ভালোবাসা অতঃপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন প্রযুক্তি খাতের এমন ক্ষমতাধর জুটিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার। এসব দম্পতি বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে থেকে প্রযুক্তি বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতের ক্ষমতাধর ১০ জুটিকে নিয়ে আজকের আয়োজন।
মার্ক জাকারবার্গ ও প্রিসিলা চ্যান
বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। ২০০৩ সালে জাকারবার্গ যখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। এর পরেও তাদের যোগাযোগ ছিল। ২০১২ সালে ফেসবুক পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়ার পরদিন আকস্মিক বিয়ে করেন এ জুটি। এ দম্পতির দুই মেয়ে রয়েছে। বিজ্ঞান ও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রিসিলা চ্যান-জাকারবার্গ দম্পতি ‘চ্যান জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ’ নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস
মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিল গেটস। তার আরো একটি পরিচয় হলো তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। মাইক্রোসফটের এক পিকনিকে মেলিন্ডা গেটসকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিল গেটস।
বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে সাত বছর প্রেম করেন এ জুটি। ২০০০ সালে মেলিন্ডা গেটস স্বামীর সহায়তায় ‘দ্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে মেলিন্ডা গেটস মাইক্রোসফটে পণ্য ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন।
ইভান স্পাইজেল ও মিরান্ডা কের
জনপ্রিয় ছবি শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন স্ন্যাপচ্যাটের প্যারেন্ট কোম্পানি স্ন্যাপ ইনকরপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইভান স্পাইজেল। অন্য দিকে মিরান্ডা কের বিশ্বের অন্যতম সর্বাধিক পারিশ্রমিক নেয়া মডেল। ২০১৫ সালে ডেটিং শুরু এবং ২০১৭ সালে এ জুটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একটি ছেলে রয়েছে।

মারিসা মেয়ার ও জ্যাচারি বগ
ইন্টারনেট কোম্পানি ইয়াহুর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও লুমি ল্যাবসের সহপ্রতিষ্ঠাতা মারিসা মেয়ার। তিনি সার্চ জায়ান্ট গুগলের প্রথম ২০ কর্মকর্তার একজন। অন্য দিকে জ্যাচারি বগ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ডাটা কালেক্টিভের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা অংশীদার। ২০০৭ সালে এক মিউচুয়াল বন্ধুর মাধ্যমে এ জুটির প্রথম দেখা হয়। এর দুই বছর পর তারা বিয়ে করেন। ২০১২ সালে যে দিন ইয়াহুর সিইও হিসেবে মেয়ারের নাম প্রথম ঘোষণা করা হয়, সে দিনই প্রথম জনসম্মুখে মা হওয়ার কথা জানান তিনি।

শেরিল স্যান্ডবার্গ ও ববি কোটিক
২০০৮ সাল থেকে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তার (সিওও) দায়িত্ব পালন করছেন শেরিল স্যান্ডবার্গ। ২০১৩ সালে প্রকাশিত কর্মজীবী নারীদের নিয়ে লেখা ‘লিন ইন’ বইয়ের জন্য তিনি সুপরিচিত। স্যান্ডবার্গের প্রথম স্বামী ডেভ গোল্ডবার্গ। ২০১৫ সালে ৪৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি। গোল্ডবার্গের আকস্মিক মৃত্যুর পর পুরনো বন্ধু এবং ভিডিও গেম কোম্পানি অ্যাক্টিভিশন ব্লিজার্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ববি কোটিকের সঙ্গে সংসার করছেন শেরিল স্যান্ডবার্গ।

মার্ক বেনিওফ ও লিন বেনিওফ
ক্লাউড কোম্পানি সেলসফোর্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক বেনিওফ। মানবহিতৈষী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যাপক পরিচিত তিনি। অন্য দিকে লিন বেনিওফ একটি অলাভজনক জনহিতৈষী প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য। ২০০৬ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ব্যক্তিগত অনেক বিষয় তারা গোপন রেখে চলেন। ২০১৮ সালে যৌথভাবে এ জুটি ১৯ কোটি ডলারে টাইম ম্যাগাজিন কিনে নেয়।

ডেভ মরিন ও ব্রিট মরিন
ফেসবুক প্লাটফর্ম ও ফেসবুক কানেক্ট সৃষ্টিতে সহায়তা করেছিলেন ডেভ মরিন এবং ফটোভিত্তিক অনলাইন প্লাটফর্ম ‘পথ’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা তিনি। অন্য দিকে ব্রিট মরিন জনপ্রিয় লাইফস্টাইল মিডিয়া কোম্পানি ‘ব্রিট প্লাস কো ডট’-এর প্রতিষ্ঠাতা। অ্যাপলে কর্মরত অবস্থায় এ জুটির প্রথম সাক্ষাৎ হয়। ২০১১ সালে মালদ্বীপে এই জুটির মন দেয়া-নেয়া হয়। পরের বছর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।

কেভিন হার্টজ ও জুলিয়া হার্টজ
২০১৬ সালে এ জুটি ‘ইভেন্ট ব্রাইট’ নামে অনলাইন টিকিটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। কেভিন হার্টজ এ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং জুলিয়া হার্টজ কোম্পানির সিইওর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৩ সালে এক বন্ধুর বিয়েতে এ জুটির প্রথম সাক্ষাৎ হয়। ২০১২ সালে বিজনেস ইনসাইডারকে এক সাক্ষাৎকারে জুলিয়া হার্টজ জানান, আমরা জানতাম একসঙ্গে বসবাস শুরুর আগে আমাদের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

পল গ্রাহাম ও জেসিকা লিবিংস্টোন
জনপ্রিয় স্টার্টআপ অ্যাকসেলেটর প্রোগ্রাম ‘ওয়াই কম্বিনেটর’ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন পল গ্রাহাম ও জেসিকা লিভিংস্টোন। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে উঠে এসেছে ড্রপবক্স, এয়ারবিএনবি এবং স্টাইপের মতো সফল প্রতিষ্ঠান। ২০০৫ সালে ওয়াই কম্বিনেটর প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই এ জুটির ঘনিষ্ঠতা। ২০০৮ সালে তারা বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।

ডিয়েন গ্রিনি ও মেন্ডেল রোসেনলাম
১৯৯৮ সালে ক্লাউড কম্পিউটিং সফটওয়্যার কোম্পানি ভিএমওয়্যার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে এ জুটি। যৌথভাবে তারা বেবপ নামে আরো একটি ক্লাউড স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে বেবপ অধিগ্রহণ করে গুগল। গ্রিনি এখন অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের পরিচালক পর্ষদ সদস্যদের একজন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় গ্রিনি ও রোসেনলামের মধ্যে পরিচয়। এ জুটির বিয়ে সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাদের দুই সন্তান আছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement