১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক দশকে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত ফেসবুক

-

১৫ বছর আগে আত্মপ্রকাশ করে ফেসবুক। বর্তমানে প্রতি মাসে ২৪৫ কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকার পাশাপাশি গত এক দশকে ডাউনলোড হওয়া শীর্ষ চারটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপের গর্বিত মালিক ফেসবুক। গত এক দশকে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা নিঃসন্দেহে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে গত এক দশকে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায়
ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে কোম্পানিটি। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে হয়েছে সমালোচনা

২০১০ সাল
ওপেন গ্রাফ প্লাটফর্ম চালু করে ফেসবুক। এটি এমন একটি প্লাটফর্ম, যেখানে বহিরাগত ডেভেলপারদের ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়ার অনুরোধ অনুমোদন করা হয়। এসব তথ্যের মধ্যে ব্যবহারকারীর নাম, লিঙ্গ, অবস্থান, জন্মদিন ও শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত। এই বছরে ফেসবুকের বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যাপ ব্যবহারকারীসহ তাদের বন্ধুদের নামের মতো ‘শনাক্তকারী তথ্য’ বিজ্ঞাপন ও ইন্টারনেট ট্র্যাকিং কোম্পানিগুলোর কাছে হস্তান্তর করছে বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়।

২০১১ সাল
ফেসিয়াল রিগনিশন ফিচার ‘ট্যাগ সাজেশন’ চালু করে ফেসবুক। এ ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ছবিতে বন্ধুদের চিহ্নিত করতে পারে। সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ফেসবুকের নতুন ফিচারটিতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তাবিষয়ক কোনো বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছিল।
২০১২ সাল
ফেসবুক নিজেদের ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়ে ভবিষ্যতে সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানায়। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের কার্যক্রম, সফটওয়্যার বাগ বা অন্যান্য প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য (ব্যবহারকারীর) তথ্য সুরক্ষার্থে গৃহীত প্রচেষ্টাগুলো ব্যর্থ হতে পারে বলেও কোম্পানিটি অগ্রিম জানিয়ে দেয়।

২০১৩ সাল
জানুয়ারিতে গ্রাফ সার্চ ফিচার চালু করে ফেসবুক। অন্য ব্যক্তি, ছবি ও ব্যবহারকারীর পছন্দ বা নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের সাথে মিলে যাওয়া স্থানগুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করে ফিচারটি। ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ ফিচারটি ‘গোপনীয়তা সংবেদনশীল’ বলে দাবি করেন। ফেসবুকের নিরাপত্তা দলকে একটি বাগ সম্পর্কে সতর্ক করার চেষ্টা করেন এক ডেভেলপার। পরে ডেভেলপার নিজেই বাগটি কাজে লাগিয়ে জাকারবার্গের ব্যক্তিগত পেজ হ্যাক করেন।

২০১৪ সাল
থার্ড পার্টি অ্যাপগুলো যাতে কেবল অনুমতি পাওয়ার পর ব্যবহারকারীর ডাটায় প্রবেশের সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে নিজেদের গোপনীয়তা সুরক্ষানীতি পরিবর্তন করে ফেসবুক।
২০১৫ সাল
ডিসেম্বরে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে ফেসবুক। ব্রিটিশ রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করে গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজের প্রেসিডেন্সিয়াল প্রচার শিবিরের হয়ে কাজ করছিল প্রতিষ্ঠানটি। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার গবেষকরা একটি জরিপের মাধ্যমে অসচেতন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রার্থী সম্পর্কে ‘বিস্তারিত মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল’ সংগ্রহ করছিল বলে অভিযোগ ওঠে।

২০১৬ সাল
বৈশ্বিক রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বছর ছিল ২০১৬ সাল। ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে রদ্রিগো দুতার্তে ফিলিপাইনের ও ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কিন্তু উভয় নির্বাচনেই ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার হস্তক্ষেপের বিষয়টি পরবর্তীতে সামনে চলে আসে। ২০১৬ সালকে ফেসবুকের জন্যও একটি সন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ বছরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি ‘বিশ্বকে কাছাকাছি আনার’ অনলাইন কমিউনিটি থেকে রাতারাতি বিশ্বের সবচেয়ে বিতর্কিত প্রযুক্তি কোম্পানিতে পরিণত হয়।
২০১৭ সাল
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্সিয়াল ভবন থেকে আগের বছরের নির্বাচনে প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে দুতার্তের ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করা হয়।

২০১৮ সাল
ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার হুইসেলব্লোয়ার ক্রিস্টোফার ওয়াইলি গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিকভাবে আনুমানিক পাঁচ কোটি প্রোফাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের কথা ফাঁস করে দেন। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা প্রাথমিকভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও কেলেঙ্কারি তথ্য ফাঁস হওয়ার তিন দিন পর সিইও আলেকসান্দ্রকে বরখাস্ত করে।

২০১৯ সাল
ফেসবুক ব্যবহারকারীর স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করার পরপরই একটি ত্রুটির কারণে কয়েক কোটি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড অভ্যন্তরীণ প্লাটফর্মে প্লেইনটেক্সট হিসেবে সংরক্ষিত হতে পারে বলে স্বীকার করে নেয় ফেসবুক। বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো ব্যবহারকারীদের আর্থিক তথ্য সুরক্ষার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে নিশ্চয়তা দাবি করে।


আরো সংবাদ



premium cement