১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ম র ণ : জহির রায়হান

-

আজ ৩০ জানুয়ারি প্রখ্যাত কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের অন্তর্ধানবার্ষিকী। তার জন্ম ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মজুপুরে, ১৯ আগস্ট ১৯৩৫ সালে। পিতা কলকাতা আলিয়া মাদরাসার অধ্যাপক (পরে ঢাকা আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ) মাওলানা মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহ। বাল্য ও কৈশোরে কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউট ও আলিয়া মাদরাসায় লেখাপড়া করেছেন। সোনাগাজীর আমিরাবাদ হাইস্কুল থেকে ১৯৫০ সালে ম্যাট্রিক ও ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে আইএসসি পাস করেন; বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৫৮ সালে অনার্স পাস করেন। ১৯৫৭ পর্যন্ত বামপন্থী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়ায় গ্রেফতার হন। ১৯৫৬-সালে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৬১ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত প্রথম ছবি কখনো আসেনি। পরিচালনা করেন সোনার কাজল, কাঁচের দেয়াল, বাহানা, বেহুলা, আনোয়ারা, সঙ্গম, জীবন থেকে নেয়া। শুরু করেছিলেন ইংরেজি ছবি লেট দেয়ার বি লাইট। এর কাজ শেষ না হতেই শুরু হলো স্বাধীনতাযুদ্ধ। চলে গেলেন কলকাতায় এবং তৈরি করলেন মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যার প্রামাণ্য চলচ্চিত্র 'ঝঃড়ঢ় এবহড়পরফব'। বাংলাদেশ লিবারেশন কাউন্সিল অব ইন্টেলিজেন্সিয়ার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক হিসেবে তার হাজার বছর ধরে উপন্যাসে আবহমান বাংলার জনজীবন, আরেক ফাল্গুন উপন্যাসে সংগ্রামমুখর নাগরিক জীবন ও একুশ উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা এবং বরফ গলা নদী উপন্যাসে বিপর্যস্ত মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। শেষ বিকেলের মেয়ে, আর কত দিন, কয়েকটি মৃত্যু ও তৃষ্ণা অপরাপর উপন্যাস। তিনি অনেক ছোটগল্পেরও রচয়িতা। সূর্যগ্রহণ তার সুপরিচিত গল্পগ্রন্থ। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন। ছাত্রজীবনে যুক্ত ছিলেন সাহিত্য মাসিক প্রবাহ এবং ইংরেজি সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস সম্পাদনা ও প্রকাশনায়।
স্বাধীনতার পরপরই ঢাকায় ফিরে শুনতে পান, অগ্রজ শহীদুল্লাহ কায়সার (সাংবাদিক-সাহিত্যিক) নিখোঁজ হয়েছেন। জহিরের চেষ্টায় তখন গঠিত হয় ‘বুদ্ধিজীবী হত্যা তদন্ত কমিটি’। জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন, মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় ভারতে অনেক নেতার ‘কাণ্ডকীর্তি’ দেখেছেন এবং এসব কিছুর ছবিও তুলে রেখেছেন। তাদের মুখোশ খুলে দেয়ার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটে কয়েক দিন পর ৩০ জানুয়ারি ভাইয়ের খোঁজে যান মিরপুর। সে দিন সেখানে সশস্ত্র অবাঙালি এবং সেনা ও পুলিশের যৌথবাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়েছিল। জহির রায়হান ওই দিন থেকে নিরুদ্দেশ রয়েছেন। তদানীন্তন আওয়ামী লীগ সরকার এমন একজন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বের অন্তর্ধানের রহস্য কেন উদঘাটনের প্রয়াস চালায়নি, সেটি জাতির কাছে এক বিরাট রহস্য। হ


আরো সংবাদ



premium cement