২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ছাত্ররাজনীতিকে সরাসরি না বলুন

-

ছাত্ররাজনীতি হালে একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়। ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি থাকবে না তা নিয়েই বিতর্ক। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে অবশ্য এ বিতর্কের প্রয়োজন ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সাথে সাথেই ছাত্ররাজনীতিকে সরাসরি না বলে দিলেই চলত। কিন্তু নানা অজুহাত তুলে ছাত্ররাজনীতিকে জিইয়ে রেখেছে গণবিচ্ছিন্ন কিছু ছোট-বড় রাজনৈতিক দল ও সেসব দলের নেতারা। তাই এ বিতর্ক অদ্যাবধি চলছে। লক্ষণীয় বিষয় হলোÑ যারা ছাত্ররাজনীতির পক্ষে বলছেন তাদের বেশির ভাগের ছেলেময়ে হয় বিদেশে কিংবা দেশের অভ্যন্তরে উচ্চ খরচে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশে লেখাপড়া করছে। ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্র পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো, যেখানে নি¤œবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকদের ছেলেমেয়েরা সাবসিডি খরচে বা কম খরচে লেখাপড়া করে। রাজনীতি যারা করেন তারা ডান-বাম যে পন্থীই হোন, তারা বিত্তবান শ্রেণীরই লোক। তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েদের রাজনীতিতে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেন। অথচ যুক্তি দেখান, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে ছাত্ররাজনীতি অপরিহার্য। ছাত্ররাজনীতি চালু রাখার সপক্ষে এ যুক্তি মোটেও সঠিক নয়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে দেশের জনগণ এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাথে অবশ্যই দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিণত বয়সের ছাত্ররা এগিয়ে আসবে। এর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি চালু রাখার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজনে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিণত বয়সের ছাত্রদের জন্য রাজনীতিনিরপেক্ষ বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ক্লাস চালু করা যেতে পারে; কিন্তু তারা সে কথা বলেন না।
দেশের রাজনীতিকরা ক্ষমতায় আরোহণের, ক্ষমতায় টিকে থাকার ও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ছাত্রদের সিঁড়ি ও খুঁটি হিসেবে ব্যবহারের জন্য ছাত্ররাজনীতি চালু রাখার পক্ষে। রাজনীতিকরা জনগণকে ভয় পান। এরা দেশের জনগণের মুখোমুখি দাঁড়াতে চান না। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশের জনগণ তাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু পায়নি। নিজেদের পরিশ্রমেই জনগণ টিকে আছে এবং দেশকে টিকিয়ে রেখেছে। এতদসত্ত্বেও ক্ষমতায় যাওয়া ও টিকে থাকা এবং নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য রাজনীতিকরা জনগণের ভোটের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না। নিজেদের জন্য যা করার তা নিজ দলীয় ছাত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়েই করিয়ে নিতে চান। দেশের জনগণ নয়, নিজ দলীয় ছাত্ররাই এদের পুঁজি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৬২ সালের হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পর থেকে আজ পর্যন্ত এ দেশের ছাত্রসমাজ জনগণের অধিকার রক্ষায় কোনো কাজে এগিয়ে আসেনি। ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন, ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রাম, ১৯৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান সবই রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে। পরবর্তীতে দেখা গেছে, ছাত্ররা তাতে অংশগ্রহণ করে দেশের আপামর জনগণের জন্য তেমন কিছু অর্জন করতে পারেনি। জনগণের স্বার্থের বিবেচনায় আজ সেসব আন্দোলন সবই বেহুদা মনে হয়। লাভবান হয়েছে এ দেশের বুভুক্ষু রাজনীতিকরা এবং তাদের পোষ্য ছাত্রনেতারা। দেশের জনগণ যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে। যেখানেই রাজনীতিকদের স্বর্থহানি ঘটেছে, সেখানেই তারা জাতীয় স্বার্থের ধুয়া তুলে ছাত্রদের ব্যবহার করেছেন। এখনো তাই করছেন। তাই ছাত্ররাজনীতির পক্ষে এরা এত সোচ্চার। এরাও ছাত্রজীবনে রাজনীতি করে সাধারণ ছাত্রদের ক্ষতির বিনিময়ে ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছেন। তাই ছাত্ররাজনীতির পক্ষে এখনো তারা ওকালতি করছেন।
গণভোগান্তি নিরসনে দলীয় ছাত্ররা কদাচিৎ এগিয়ে এসেছে। দেশে নিত্যপণ্যের মূল্যের ক্রমোর্ধ্বগতি ও ভেজালের মহোৎসব চলছে। এদের বাবা-মা এসবের উৎপাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কই! এর প্রতিবাদে ছাত্রদের তো এগিয়ে আসতে দেখি না! এরা উদগ্রীব থাকে ছাত্ররাজনীতির পৃষ্ঠপোষকদের ব্যালট বাক্স জাল ভোটে পুরতে, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ইত্যাকার কর্মে। বিনিময়ে এদের সুযোগ দেয়া হয় শিক্ষাঙ্গনে টেন্ডারবাজিতে, ভিন্নমতাবলম্বীদের হেনস্তা করতে, ছাত্রভর্তি ও শিক্ষক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে, পরীক্ষার হলে পর্যবেক্ষক নিরীহ শিক্ষকরা নকল ধরলে তাদের শাসাতে, হলে-হেস্টেলে ছাত্রছাত্রীদের সিট বরাদ্দ তদারকি করতে ব্যস্ত থাকতে। এরা আরো ব্যস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হল-হোস্টেলের সংখ্যা ও মান এবং ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি ব্যতিরেকে সীমিত আসনে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করতে ইত্যাদি। ছাত্ররাজনীতির প্রবক্তারা ছাত্রনেতাদের এসব কাজেই ব্যবহার করেন। হালে ছাত্রনেতারা তাদের রাজনৈতিক মুরব্বিদের ধরে দলীয় শিক্ষকদের প্রমোশন ও পছন্দের পোস্টিং পাইয়ে দিয়েও মাতবরি করছে। রাজনীতিকরা ভিন্নমতাবলম্বীদের পেছনে ছাত্রদের লেলিয়ে দিয়ে নিজেরা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করছেন।
এমনও সচরাচর দেখা যায়, একজন সৎ শিক্ষক বা অভিভাবক সারা জীবনের কামাই দিয়ে যা করতে পারেন না, একজন ছাত্রনেতা ছাত্রাবস্থায়ই তার শতগুণ করে ফেলেন। এ কারণে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ডাক উঠলেই তারা সব গেল গেল বলে রে রে করে ওঠে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অযোগ্য শিক্ষকরা ছাত্রদের কাঁধে হাত রেখে শিক্ষকতা করে ভালো প্রমোশন-পোস্টিং পান। এতদ্ব্যতীত যদি কোনো শিক্ষক কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোস্টিং পেয়ে যান, তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না কর্তৃপক্ষ ছাত্রনেতাদের ছাড়পত্র পান, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে সে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি দেয়া থেকে বিরত থাকেন। যদি আদৌ কোনো শিক্ষক সে অনুমতি না পান, তবে সে প্রতিষ্ঠানে তাকে যোগদান করতে দেয়া হয় না। শুধু শিক্ষকদের কথাই বলি কেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মসজিদের ইমামদেরও ইমামতি করতে ছাত্রনেতাদের ছাড়পত্র লাগে। এ অনুমতি রাজনৈতিক আনুগত্য বা পয়সার বিনিময়ে লাভ করতে হয়। অধিকন্তু যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে, সে সরকারের অনুগত ছাত্রনেতারা ভিন্নমতাবলম্বী ছাত্রদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। যারাই ক্যাম্পাসে থাকার অনুমতি পায়, তাদের সরকারদলীয় ছাত্রদের সাথে বাধ্যতামূলকভাবে মিটিং-মিছিলে গিয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করতে হয়। এ না করলে শান্তিপ্রিয় সাধারণ ছাত্রদের গুম-খুন-নির্যাতন এবং ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করতেও সরকারদলীয় ছাত্রনেতারা পিছপা হয় না। বিবেকবর্জিত ছাত্রনেতারা তাদের মুরব্বি জাতীয় রাজনীতিকদের ছত্রছায়ায় ছাত্রী ধর্ষণের ‘শতক’ পালন করে পার পেয়ে যায়। অবশেষে মুরব্বিদের মুখ রক্ষার্থে তাদেরই পৃষ্ঠপোষকতায় বিদেশে পাড়ি জমায়। ছাত্ররাজনীতির এমন নজিরও দেশে আছে।
দেশটি ভৌগোলিকভাবে ছোট হলেও ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটির ওপরে। এত লোকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বা তাদের সন্তুষ্ট করে ভোট করার চেয়ে কিছু ছাত্রকে সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া এবং টিকে থাকাই রাজনীতিকরা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করেন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনে যারা আছেন, তারাও এককালে তাদেরই লোক ছিলেন বা এমন লোককেই নেয়া হয় এবং ভবিষ্যতেও যারা আসবেন তারাও যেন তাদেরই লোক হন সেটা নিশ্চিত করতে ছাত্ররাজনীতি প্রয়োজন। রাজনীতিকরা জানেন, এ দেশের পররাষ্ট্রনীতি বন্ধ্যা। তাই যা পারা যায় দেশের ভেতর থেকেই আদায় করে নিতে হবে। তাই বন্ধ্যা পররাষ্ট্রনীতির আলোকে দেশের ভেতর এমন একটি শ্রেণী বের করে আনতে হবে, যারা এই পররাষ্ট্রনীতিকেই আদর্শ মনে করবে। লেখাপড়া চুলোয় যাক। ছাত্ররা সেøাগান দিতে শিখলেই হলো। দলীয় শিক্ষকরা তাদের পরীক্ষা বৈতরণী কৃতিত্বের সাথে পার করে দেবেন। সরকার তাদের চাকরি দেবে। সে রকম ছাত্রই স্বাধীনতার পর থেকে বেরিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতেও যাতে তাই হয়, তারই আয়োজন চলছে। এর নামই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা। তা না হলে লাখ লাখ ছেলেমেয়ে কেন প্রতিবেশী একটি বড় দেশে লেখাপড়া করতে যায়? সে ব্যাপারে ছাত্রদের চেতনা নেই কেন? লাখ লাখ ছেলেমেয়ে কেন বিদেশবিভুঁইয়ে কাজের খোঁজে দৌড়ায়? এ জাতীয় যাত্রায় মরুপথে সাগর পথে প্রাণ দেয়? ছাত্রদের মনে এ প্রশ্ন জাগে না কেন? জাগে না এ কারণে যে, ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক মুরব্বিদের মাথায় সে চেতনা বা প্রশ্ন নেই। ছাত্রনেতারা পরস্পর কোন্দল ও হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পঙ্গু ও অচল করে রেখেছে। ফলে বিদেশমুখী শিক্ষার্থী ও কর্মীদের স্রোতধারা নিয়ত সচল থাকে। তাই দেশে শিক্ষিত লোকবল তৈরি হচ্ছে না। দেশীয় শিল্পকারখানায় বিদেশী লোকবলের চাহিদা বাড়ছে। দেশীয় শিক্ষিতরা বেকার বসে রাজনীতিকদের দল ভারী করছে।
দেশে যারা ছাত্ররাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তারা দেশের ভালো চান না, সে কথা বলব না। যেটা বলতে চাই সেটা হলোÑ আজকের প্রেক্ষাপটে স্বাধীন দেশে তারা ভুল রাজনীতিক। একটা সময়, তাদের ভাষায় ঔপনিবেশিক আমলে, হয়তো ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন ছিল। আজ আর সেটা নেই। কোনো দল বা কোনো ব্যক্তি স্বাধীন দেশে ক্ষমতায় আসবে সেটা দেখার জন্য ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই। দেশে ভবিষ্যতের রাজনীতিক বেরিয়ে আসবে, সেজন্যও ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই। অনেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভবিষ্যৎ রাজনীতিকের সুতিকাগার বলে তৃপ্তি পান; দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জ্ঞানার্জনের পাদপীঠ বলতে তারা ভয় পান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মূলত সে জন্য নয়। ছাত্ররা দেখবে তারা ঠিকমতো যোগ্য শিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করতে পারছে কি না। তারা দেখবে দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কোয়ালিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে কি না। সচ্ছন্দে লেখাপড়া করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনের ছাত্রাবাস গড়ে উঠছে কি না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চক-ডাস্টার, ব্ল্যাকবোর্ড ল্যাবরেটরি লাইব্রেরি আছে কি না।
কোনো কোনো অতি উৎসাহী রাজনীতিক হয়তো লাফিয়ে উঠে বলবেন, এ জন্যই তো ছাত্ররাজনীতি দরকার বা এটাই ছাত্ররাজনীতি। না, একটি স্বাধীন দেশে এটা ছাত্ররাজনীতি নয়। এটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের নীতি। এ অধিকার ছাত্ররা সব দলের সরকারের আমলেই সমভাবে ভোগ করবে। এমনকি সামরিক সরকারের আমলেও। ছাত্রদের এ অধিকার আন্দোলনের লড়াইয়ে রাজনীতিকরা নাক গলাবেন না। যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তবে ছাত্রদের অভিভাবকরা নাক গলাতে পারেন। কারণ তাদের সন্তানের সুশিক্ষা চাই। এহেন আন্দোলনে ছাত্রনেতৃত্বেরও প্রয়োজন নেই। কাউকে নেতা বানিয়ে তাকে পরবর্তীকালে রাজনৈতিক দলে ভিড়ানোরও প্রয়োজন নেই। এটা ছাত্রদের এবং তাদের অভিভাবকদের একান্তই নিজস্ব ব্যাপার। রাজনীতিকরা তাদের নিজ কাজে মনোযোগী ও সত্যনিষ্ঠ হলে ছাত্রদের এ জাতীয় আন্দোলনেরও প্রয়োজন হবে না। আমাদের মতো শান্তিপ্রিয় সাধারণ নাগরিকদের সন্তানদের ছাত্ররাজনীতির নামে হত্যা করার বা তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করার অধিকার রাজনীতিকদের নেই। কোন নেতা কোন কালে ছাত্ররাজনীতি করে জাতীয় নেতা হয়ে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেনÑ সে খবর দিয়ে কাজ নেই। আমাদের সন্তানরা ভালো করে লেখাপড়া শিখুক। সেটাই আমরা চাই।
কোন দল ক্ষমতায় এলো আর কোন দলের নেতা দেশের নেতৃত্ব পেল সেটা ছাত্রদের দেখার বিষয় নয়। এমনকি জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার থাকার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না। জনগণের করের টাকার সাবসিডিতে লেখাপড়া করে যা করার জাতির জন্য ছাত্রজীবন শেষ করে তারা তা করবে। আমরা সে অপেক্ষায় থাকব। দেশের নেতা নির্বাচন তাদের অভিভাকরাই করবেন, ছাত্ররা নয়। ‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ’। এই ‘বাসি’ অথচ আজকের বাংলাদেশে একান্তই জরুরি সেøাগানটি এ দেশের ছাত্রদের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করতে বলি। এটাই জরুরি। খেলাধুলা করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ, সাঁতারের জন্য পুকুর আছে কি না তা ছাত্ররা খুঁজে দেখবে। না থাকলে তা যেন হয় সে দাবি জানাবে এবং আদায় করে নেবে। কারিকুলামে কী আছে তাও দেখবে। ছাত্ররা ছাত্ররাজনীতির পঙ্কিলতায় হাবুডুবু খেয়ে জীবন বিপন্ন করবে না। ছাত্ররাজনীতি করে কোটি কোটি লোক ঠকানো বিদ্যা শিখে দুর্নীতিবাজ নেতা বা মন্ত্রী হওয়ার চেয়ে প্রাইমারি স্কুলের আদর্শবান শিক্ষক হওয়া ঢের বেশি গৌরবের। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই শিক্ষাই আজ এবং সব সময় জরুরি। হ
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ভাইস প্রিন্সিপাল, কুমিল্লা মহিলা সরকারি কলেজ


আরো সংবাদ



premium cement