১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

ওআইসির মানবাধিকার ঘোষণা ও নারীর অধিকার

-

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি মুসলিম বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংগঠন। এটি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চার বছর পরপর এর শীর্ষ সম্মেলন এবং প্রতি বছর একবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর হেডকোয়ার্টার সৌদি আরবের জেদ্দায়। ওআইসির বিজ্ঞান, কালচার হেরিটেজ, ফিকহ, ব্যাংকিংসহ বেশ কয়েকটি পার্শ্ব সংগঠন রয়েছে।
১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল উনিশতম পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন। সেখানে ঙওঈ : উবপষধৎধঃরড়হ ড়ভ ঐঁসধহ জরমযঃং রহ ওংষধস নামে একটি ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়, যা ‘কায়রো ঘোষণা’ নামে পরিচিত। এর আলোকেই নারীর অধিকারগুলো এখানে আলোচনা করা হচ্ছে।
যদিও ১৯৯০ সালে পাস হয়, কিন্তু তার প্রায় এক বছর আগে থেকেই এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর এর ওপর কাজ করে নানা পদ্ধতির মাধ্যমে এগিয়ে প্রস্তুত করা ডকুমেন্টটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। এ ঘোষণায় ওআইসির আইনবিদেরা, ইসলামের পণ্ডিতগণ অংশীদার ছিলেন। এ দিক থেকে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, বিশ্বের সব বড় বড় ইসলামী পণ্ডিতের সংগঠন ওআইসির ফিকহ একাডেমির সমর্থন ও অনুমোদন এর পেছনে রয়েছে।
ওআইসির এ ঘোষণার প্রথম ধারায় বলা হয়েছে : ক. আদম থেকে উদ্ভূত এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ সমগ্র মানবজাতি একই পরিবারের সদস্য। জাতি, গোত্র, বর্ণ, ভাষা, নারী-পুরুষ, ধর্ম বিশ্বাস, রাজনৈতিক মতবাদ, সামাজিক অবস্থান বা অন্য যেকোনো বিবেচনা নির্বিশেষে মূল মানবিক মর্যাদা এবং দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিক থেকে সব মানুষ সমান। খাঁটি ঈমান ব্যক্তির মধ্যে মানবিক পূর্ণতা এনে দিয়ে এ মর্যাদা বৃদ্ধির গ্যারান্টি দেয়।
খ. প্রতিটি মানুষ আল্লাহর অধীন। সেসব ব্যক্তিকে তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, যারা তাঁর সমগ্র সৃষ্টিজগতের কল্যাণে নিয়োজিত এবং শুধু খোদাভীতি (তাকওয়া) ও সৎকর্মের ভিত্তিতেই একজন মানুষ অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারে।
এটি এখানে সুস্পষ্ট করে বলা হলো যে, সব মানুষের মর্যাদা জেন্ডার নির্বিশেষে মূলত সমান। এ ঘোষণার সব অধিকারই মানবাধিকার। এগুলো সবার জন্যই। আর এর ভেতর যদি কারো জন্য বিশেষ কোনো অধিকারের কথা থেকে থাকে, তা আলাদাভাবে বলা হয়েছে। যেমন, অনুচ্ছেদ ৬ক-তে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে : মর্যাদা এবং তা ভোগ করার অধিকারের পাশাপাশি কর্তব্য পালনের দিক থেকেও নারী-পুরুষ সমান। নারীর রয়েছে স্বতন্ত্র সামাজিক সত্তা বা পরিচয় ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং তার নিজের নাম ও বংশ পরিচয় বজায় রাখার অধিকার।
দেখা যাচ্ছে, এ ঘোষণার সব অধিকার সমান হওয়া সত্ত্বেও এখানে ইসলামী আইনের আলোকে নারীর বিশেষ অধিকার সুস্পষ্ট করে দেয়া হলো, যা জাতিসঙ্ঘের ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশনে নেই।
এ ৬ ধারায় নিজের নাম রক্ষার যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে, তাতে সে স্বামীর নাম গ্রহণে বাধ্য নয়। আমরা পাশ্চাত্যে এ ক্ষেত্রে মেয়েদের স্বামীর নাম নিতে দেখি। আমাদের সমাজেও কিছু লোকের মধ্যে এটি অনুপ্রবেশ করেছে। বর্তমানে তা অবশ্য কমছে বলে মনে হয়। কিন্তু ওআইসির ঘোষণায় সম্পূর্ণ আলাদাভাবে নিজের নাম রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
সুতরাং আমরা দেখতে পাই, ওআইসির এ মানবাধিকার সনদ ইসলামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, অর্থাৎ ইসলামভিত্তিক। এটি ইসলাম বিশেষজ্ঞদের অনুমোদনকৃত। কিন্তু খুব কম লোকই এ ঘোষণা সম্পর্কে জানেন। ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটসের সাথে এর অনেক মিল রয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। মানুষের প্রকৃতিগত যে স্বভাব, তা অনেক ক্ষেত্রে একই। এ ঘোষণায় ইসলামের মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেয়েদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হ
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার

 


আরো সংবাদ



premium cement
উন্মুক্ত করা হলো মদিনার ঐতিহাসিক আল ফকির কূপ জবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশ ফ্রান্সের হয়ে রেকর্ড ম্যাচ খেলা হলো না গ্রিজম্যানের ফ্রান্সের হয়ে রেকর্ড ম্যাচ খেলা হলো না গ্রিজম্যানের স্বর্ণের দাম এবার কমলো গণ-ইফতার কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা ছাত্রশিবিরের পাবনায় এক রাতে কবরস্থান থেকে ১৫টি কঙ্কাল উধাও! সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল হলে দুর্নীতি উৎসাহিত হবে : টিআইবি ফিলিপাইন ও জাপানের নেতাদের সাথে বৈঠকে বসছেন বাইডেন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের ভাড়া বেশি নিলে সেই বাস বন্ধের হুঁশিয়ারি মালিক সমিতির

সকল