দৃষ্টিপাত : নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো
- মাহমুদুল হক আনসারী
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
নিত্য আর ভোগ্যপণ্য ছাড়া মানুষের জীবন অচল। এসব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সংস্থাটির কার্যকর কোনো ভূমিকা আছে বলে মনে হয় না। ওই সরকারি সংস্থার দায়িত্ব ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের বাজার তদারকি করা। ভেজাল নি¤œমানের পণ্য এবং অযৌক্তিক দাম বেড়ে যাওয়ার রাশ টেনে ধরা। পণ্যমূল্য জনগণের নাগালের মধ্যে রাখা। রাষ্ট্রের এসব প্রতিষ্ঠান জনগণের সেবায় নিয়োজিত। বাস্তবে দেশের নাগরিকেরা এসব সংস্থার মাধ্যমে যে উপকার পাওয়ার কথা; তা তারা পাচ্ছেন না।
প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সম্প্রতি কী কারণে হঠাৎ করে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ল, সে বিষয়টি নাগরিকদের কাছে বোধগম্য নয়। কারসাজি করে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানোয় সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছে। একজন মানুষের আয় ও ব্যয় অবশ্যই একটা সীমারেখার মধ্যে রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। নাগরিকের রোজগারের আনুপাতিক হারে ব্যয়ে একটি নিয়ম থাকা চাই। কিন্তু আমাদের দেশে আয় ও ব্যয়ে বিশাল ফারাক দেখা যায়। অর্থ উপার্জনকারী ব্যক্তি নিজে ও পরিজনের জন্য যে পরিমাণ আয় করেন, তা খরচেরও একটা সীমারেখা করা থাকে। বর্তমানে আমাদের দেশে একজন উপার্জনকারী আয়-ব্যয়ে সঙ্গতি রাখতে পারছেন না।। না পারার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম একটি হলোÑ ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে অনবরত বেড়ে চলা। একদিকে ভেজাল ও নি¤œমানের পণ্যে বাজার সয়লাব। অন্য দিকে, কথায় কথায় কারণ ছাড়াই পণ্যমূল্য বাড়ানোতে সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ প্রবণতা সমাজের সব খাতে লক্ষণীয়। কোনো বিভাগ চুক্তি মোতাবেক লেনদেন বাস্তবায়ন করছে না। চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে।
আর বাজারের চিত্র ভয়াবহ। মাত্র ১০০ গজের মধ্যে একেকটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বাজারদর ভিন্ন ভিন্ন। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের কথাই ধরা যাক। দুটি ওষুধের দোকানে একই কোম্পানির একই ওষুধ দুইরকম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সেটি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করা হলে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না। দু’-একটি কথা বললেই বিক্রেতা ওষুধ দিতে চান না। ইচ্ছেমতো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওষুধ কোম্পানি আর ওষুধের দোকানদাররা। তাদের কাছে কোনো নীতি-নৈতিকতার বালাই নেই। ওষুধের দাম বাড়ানোর বিষয়টি পুরোপুরি ভোক্তার অগোচরেই চলে যায়।
ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ওষুধের মূল্য সম্পর্কে খুব একটা অবগত নন। ফলে এসব জায়গায় হয়রানি আর ভোগান্তির শেষ নেই। নিত্যদিন যেসব মানুষ ওষুধ সেবন করেন; তারা না পারছেন ওষুধ ছাড়তে, না পারছেন কিছু করতে। এক ধরনের অসহায়ত্ব তাদের গ্রাস করছে। পরিস্থিতির শিকার হয়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এসব বিষয়ের কোনো সুরাহা সরকারি তরফ থেকে দেখা যায় না। নিম্ন ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে কখনো কখনো লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা দেখা গেলেও সারা দেশে অসংখ্য ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে রোগী-ডাক্তার কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের মূল্য সম্পর্কে কিছুটা ধারণা ভোক্তাদের থাকলেও ওষুধ সম্পর্কে খুুব স্বল্প মানুুষই জানেন। এ ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি আর অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। একইভাবে পেঁয়াজ, রসুন, আদা থেকে গরম মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও কোনো নিয়মনীতি নেই। মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ববান ও অন্যের প্রতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে একমাত্র আইন নিয়ে এসব সমস্যার সমাধান কখনো সম্ভব নয়। হ
Email:mh.hoqueansari@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা