জনগণের স্বার্থই দেশের স্বার্থ
- সারওয়ার মো: সাইফুল্লাহ্ খালেদ
- ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই একটি কথা বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়াই আমার লক্ষ্য।’ সম্প্রতি লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার সেন্ট্রাল হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সভায় এ কথা তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ‘মুজিবের স্বপ্নের দেশ’ বলতে তিনি ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা’ বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি ‘ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই’ বললেও এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন অনেকে। কারণ, ২০০১ সালে তার প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে গেলে রাষ্ট্রীয় গণভবন ছাড়তে তিনি অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও ২০১৮ সালে ভোটারবিহীন ‘মধ্যরাতের’ নির্বাচনে আ’লীগ ‘জয়ী’ হলে তিনি পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এর আগে ২০০৬ ও ২০০৯ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। প্রায় ২০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এটি সম্ভব হয়েছে মূলত পরের দু’বার জনগণকে পাশ কাটিয়ে ‘নির্বাচনের’ মাধ্যমে এবং মুজিবের কন্যা বলে। এটি কি তার জীবনে পরম পাওয়া নয়? ব্যক্তিগত জীবনে বারবার প্রধানমন্ত্রী হতে এবং এ পদের আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে না চাইলে অন্তত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কারচুপির নির্বাচনের তিনি সমালোচনা করতেন। পিতার আমল থেকে শুরু করে তার আমল গণনায় নিলে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে ২৭ বছর দেশ শাসন করেছে। এ সময়কালে বাংলাদেশ কতটুকু পেয়েছে, তার একটি হিসাব কষা যায়।
সাম্প্র্রতিককালে ঢাকা শহরে ‘চোখ ধাঁধানো উন্নতি’ হয়েছে। অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার হয়েছে, মেট্রোরেল হচ্ছে। আরো অনেক কাজ হয়েছে এবং আরো হবে। বাংলাদেশ ফ্রান্স থেকে কিনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মহাশূন্যে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে এবং ‘আরো পাঠাবে’ বলেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে ইত্যাদি। এসব দেখে মনে পড়ে সেই অ্যাস্ট্রনমারের কথা, যিনি আকাশের তারা গুনতে গুনতে এক কূপের ভেতর পড়ে গিয়েছিলেন। আকাশের তারার দিকে বিভোরচিত্তে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পায়ের কাছের কূপটির দিকে নজর দেয়ার তিনি সময় পাননি। আমাদের নেতাদেরও যেন একই দশা। ‘বড় বড় কাজ’ নিয়ে তারা এত ব্যস্ত যে, জনগণের উপস্থিত হিতার্থে যা করা প্রয়োজন সে ‘ছোট’ কাজগুলোর দিকে নজর দেয়ার সময় তাদের নেই। সমালোচকেরা বলে, ওই সব কাজে লুটপাটের সুযোগ বেশি। তবে সেগুলোর তুলনায় জরুরি দেশের লোকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আশ্রয়, খাদ্য, কর্মসংস্থান ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। এরপর ওসব বড় কাজে হাত দেয়া যেত। আজকের উন্নত দেশগুলো এটাই করেছে। তবুও আমাদের নেতারা ‘ঘোড়ার আগে গাড়ি’ জুড়ে দিলেন। একে বলে ‘গরিবের ঘোড়া রোগ’। আজ তারা কোনো দিকই সামাল দিতে পারছেন না ভালোভাবে। দেশের সর্বক্ষেত্রে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজমান। তবে কাজের কাজ যেটি হচ্ছে, তা পদ্মা সেতু। এমন কাজ আরো হওয়া উচিত। তাহলে জনদুর্ভোগ কমত। তবে পদ্মা সেতু ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৯ সালেও হচ্ছে না। দফায় দফায় এর নির্মাণব্যয় বাড়ছে।
দেশে চলছে সড়কে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এর কোনো প্রতিবিধান নেই কেন? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, প্রতিদিনই কয়েকজন লোক খুন, নির্যাতিত, ধর্ষিত হচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেলিভিশন ও অনলাইনে এমনই বেলাগাম অশ্লীলতার জোয়ার বইছে যে, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও এ সংক্রান্ত খুনখারাবি বেড়ে চলার একটা বড় কারণ এটা। মাদক ব্যবসায় ও সেবনের মহোৎসব চলছে। সীমান্তে চোরাচালানি ব্যাপক। বিদেশী, বিশেষ করে পার্শ¦বর্তী একটি বৃহৎ দেশের পণ্যে দেশের বাজার এমনই সয়লাব যে, দেশীয় শিল্প ও কৃষি খাতের উন্নয়নের পথ রুদ্ধপ্রায়। ঈদে ঢাকা থেকে বাড়ি যাওয়া-আসায় যাত্রীদের দুর্ভোগ সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গেছে। ঢাকা থেকে ঈদে প্রায় এক কোটি লোক বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন। স্বাভাবিক সময়েও ছয় লক্ষাধিক লোক পথের দুর্ভোগ সহ্য করে প্রতিদিন কোনো-না-কোনো কাজে ঢাকা আসা-যাওয়া করছেন। এতেই বোঝা যায়, দেশের সার্বিক কর্মকাণ্ড কী বিপর্যয়করভাবে কেবল ঢাকায় কেন্দ্রীভূত। অপর দিকে, শাসক মহল হেলিকপ্টারে চলে।
দেশের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো বরবাদ হয়ে গেছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চলে গেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নিয়ন্ত্রণে। দেশের বিপুলসংখ্যক লোক শিক্ষার জন্য সামর্থ্যভেদে ভারত, ইংল্যান্ড ও আমেরিকা ছুটে যায়। চিকিৎসার জন্য সামর্থ্যভেদে ভারত, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে ছোটাছুটি করেন। এ দৌড়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি ও রাজনীতিক-আমলারাও পিছিয়ে নেই। সরকারি হাসপাতাল থেকে দালাল ও চিকিৎসকেরা রোগী ভাগিয়ে উচ্চ ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এন্তার তরুণ-যুবক কাজের অভাবে বিদেশে ছুটছে। ওদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে সলিল সমাধি বরণ করছে। দেশে বেকারের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ শিক্ষিত যুবক ‘বেকারবাহিনী’তে যোগ দিচ্ছে। কর্মসংস্থানের অভাবে এদের একটি বড় অংশ বিভিন্ন রাজনৈতিক, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের প্রশ্রয়ে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মতো অপকর্মে শামিল হচ্ছে। দেশীয় শিল্পকারখানাগুলোতে দেদার বিদেশী চাকরি পাচ্ছে। কেবল ভারতীয়রাই বছরে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে যাচ্ছে এভাবে। সরকারি খরচে নির্মিত বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক ব্যক্তিগত গাড়ির চাপে অচল হয়ে যাচ্ছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মদদে চাঁদার বিনিময়ে ফুটপাথ খুচরা ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাচ্ছে। ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের এ ছাড়া রুটি-রুজির বিকল্প উপায় নেই।
বাংলাদেশে ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয় চলছে। সারা দেশে মহামারী আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হয়েছে প্রলয়ঙ্করী বন্যা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসছে না। প্রতিদিন লোক মারা যাচ্ছে এতে। রোগটি রাজধানী ঢাকাতে শুরু হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ের চাপে দিশাহারা রোগীরা চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালের দিকে ছুটছে। অপর দিকে, মফস্বলের সঙ্কটাপন্ন রোগীরা সুচিকিৎসা নিয়ে প্রাণে বাঁচার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকায় এসেও প্রাণ হারাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ রোগ নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা মারার কার্যকর ওষুধ দেশে নেই। রোগটি বছরের প্রথম দিকে শুরু হয়ে এর মধ্যে জুলাই গেল, আগস্টও যাচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাকমুখর মেয়রের কথার ওপর যদি আস্থা রাখা যায়, তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আসার কথা সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে। এর মধ্যে কত লোককে প্রাণ দিতে হবে আল্লাহ মালুম।
দেশে বড় আকারে ডেঙ্গু জ্বর প্রথম দেখা দিয়েছিল ২০০০ সালে। তখন ৯৩ জন লোক মারা গিয়েছিল। পরের বছর মারা গিয়েছিল ২৩ জন। কিন্তু এরপর ১৮ বছরে দেশ থেকে ডেঙ্গু নির্মূল করার কোনো চেষ্টা করা হয়নি। সীমিত আকারে হলেও ডেঙ্গু প্রায় প্রতি বছরই হানা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ কি মনে করেছিল, দেশ আর কোনো দিন ভয়াবহ আকারে ডেঙ্গু আক্রান্ত হবে না? যদি তা না হয়ে থাকে, এডিস মশা নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ নেই কেন? এবার এ রোগে মৃতের সংখ্যা শতাধিক। দেশে আরেকটি এডিস মশাবাহিত রোগ, চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল ২০১৭ সালে। সে সময় এ রোগটিও ব্যাপক জনদুর্ভোগের কারণ হয়েছিল। এটিও দেশ থেকে নির্মূল হয়নি। এখনো অনেকেই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এক দিকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই, অন্য দিকে চিকুনগুনিয়াও আবার যেকোনো সময় মহামারী আকার ধারণ করতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিকেরা দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে। দেশে আজ নীতিনৈতিকতা প্রায় বিলুপ্ত। অসাম্প্রদায়িকতার ধুয়া তুলে একটি মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রের পার্লামেন্টে জনগণের প্রাত্যহিক নিকটজন, ধর্মবেত্তাদের সতর্কতার সাথে পরিহার করে অপসাংস্কৃতিক বিনোদনের নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা, নট-নটীদের কারচুপির নির্বাচন করে সংসদ সদস্য বানানো হচ্ছে। এ সবই হচ্ছে পার্র্শ্ববর্তী দেশের আদলে। টেলিভিশনের টকশো বা বিভিন্ন আলোচনায় ধর্মীয় নীতিজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের বর্জন করে জনগণকে কথিত নৈতিকতা শেখাতে অসৎ রাজনীতিকদের পাশাপাশি নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা, নট-নটীদের ডাকা হচ্ছে। এরাই কি সুমহান আদর্শ! টেলিভিশনের যেকোনো পণ্যের বিজ্ঞাপনে নারী চরিত্র অপরিহার্য রূপ ধারণ করেছে; এমনকি পুরুষের শেভিং লোশনের বিজ্ঞাপনেও নারী অপরিহার্য কেন? টেলিভিশনের বেশির ভাগ নাটক ও বিজ্ঞাপন কুরুচিপূর্ণ। অনেকের অভিমত, এসবের মূল উদ্দেশ্য ধর্মপ্রাণ মানুষের মগজ ধোলাই করা। এর নাম অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণ হতে পারে না। দেশকে একটি ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার এ এক নীরব, হীন ও গভীর অপপ্রয়াস। এমন রাষ্ট্রে খুন, গুম, ধর্ষণ, মাদক, ব্যভিচার ইত্যাদি অপরাধ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। এ প্রবণতা গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্র যেখানে এগুলোকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব দমন করতে পারার কথা নয়। এরই নাম কি ‘সোনার বাংলা’!
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় সিডর (২০০৭) ও আইলার (২০০৯) দগদগে ঘা এখনো বিদ্যমান। নদী ও নদীরক্ষা বাঁধগুলো ভেঙে যাচ্ছে, তা দেখার কেউ নেই। কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে বছরের পর বছর কপাল চাপড়াচ্ছেন। যে দেশের বেশির ভাগ মানুষ দুই বেলা পেটপুরে খেতে পায় না, সে দেশের রাজধানীতে দিনে প্রায় ১৮০টি খুব দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি রাস্তায় নেমে রাজপথ অচল করে দিচ্ছে। যে দেশে নদীভাঙনে লোকজন সহায়সম্বলহীন হয়ে যাচ্ছে, সে দেশের কিছু লোক মালয়েশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডায় ফার্স্ট হোম, সেকেন্ড হোম তৈরি করছে। সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হিসাবের টাকায় চলেন, সে দেশে তাদের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাল্লায় মেপে ব্যবসায়ীরা অবাধে মুনাফার পাহাড় গড়ছে। দেশের শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা বেপরোয়া রাঘব বোয়ালরা গিলে খাচ্ছে। এ ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ। দেশের বেশির ভাগ দরিদ্র মানুষের অবিরাম ক্রন্দনরোল দেশনেতাদের কর্ণকুহরে পৌঁছে না। এর কারণ খুঁজতে ভারতীয় গীতিকার শ্যামল গুপ্তের একটি গীতিকবিতার চরণ মনে পড়েÑ ‘জেগে জেগে খোলা চোখ বুজলে/ঘুমটা ভাঙানো তো যাবে না’। প্রভাবশালীরা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হওয়াতেই এ অবস্থা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ব্যতিরেকে মন্ত্রী-কর্মকর্তারা কেউ কিছু করেন নাÑ ক্ষমতার নাটাই তার হাতেই। প্রধানমন্ত্রী যদি বলেনÑ ‘আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই’; তখন এর অর্থ কী দাঁড়ায়? উপর্যুক্ত গীতিকারের একই গীতিকবিতার আরেকটি চরণÑ ‘কেউ নিজেকে ছাড়া ভাবে না’ স্মরণ করা যায়। মুজিব বলেছিলেনÑ “পৃথিবী দু’ভাগে বিভক্ত। শোষক এবং শোষিত, আমি শোষিতের দলে।” স্বভাবতই আজ জনমনে প্রশ্ন জাগে, তার দল ও ভক্তরা কাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে বলছেনÑ ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়াই আমার লক্ষ্য।’ এ ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্ব একবার ’হার্ট সার্চিং’ করে দেখতে পারেন। কারচুপির নির্বাচনে ‘জিতে’ পার্শ্ববর্তী একটি দেশের ওপর এতটা নির্ভরশীল হয়ে পড়া ঠিক নয় যে, একটি বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য সে দেশ বাংলাদেশের কাছে ৫২ একর জমি চাইতে পারে। অনেকেরই মনে আছে, স্বাধীনতার দুই বছর পরই মুজিব সে দেশের হাতে বেরুবাড়ি ইউনিয়ন হস্তান্তর করেছেন। কিন্তু সে দেশ বাংলাদেশকে যা দেয় তার ১৬ দ্বিগুণ ৩২ আনা উসুল করে নেয়। অতীত ও সাম্প্রতিক ইতিহাস এটাই বলে। হ
লেখক : অর্ধনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক,
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা