২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

-

১৯৮০ সালের কথা। এক বিকেলে ফুটবল খেলা দেখতে ঢাকা স্টেডিয়ামে এলাম। পশ্চিম গ্যালারির মাঝামাঝি উচ্চতায় বসেছি। দেখলাম, আমার সামনেই মাঠে একটি সাদামাটা স্টেজ। প্রায় কালচে রঙের সাফারি স্যুট পরিহিত সেনাপ্রধান লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসে মাঠের দিকে মুখ করে স্টেজে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে খেলা উদ্বোধন করলেন। সেই মুহূর্তে আমার পেছন থেকে একটি কণ্ঠস্বর ভেসে এলো, ‘জিয়াকে সরিয়ে তো ইনিই ক্ষমতায় আসবেন।’ পেছন ফিরে দেখলাম, এক যুবক সামনে ঝুঁকে বসে আছে, এটা তারই কণ্ঠস্বর। প্রেসিডেন্ট জিয়া ৩০ মে ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে নিহত হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরে সেনাপ্রধান এরশাদ রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ২৪ মার্চ, ১৯৮২ সালে নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি সাত্তারের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন। এরপর ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে এরশাদ নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে ১ জানুয়ারি ১৯৮৬ সালে নিজ দল জাতীয় পার্টি গঠন করেন।
এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণের কী প্রয়োজন ছিল, তা ইতিহাসবিদেরা ব্যাখ্যা করবেন। এখানে তার শাসনামলে নেয়া কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা আলোচনা করছি। তিনি ক্ষমতায় আসার আগে দেশের ১৯টি জেলায় প্রায় ২৮টি সাধারণ সরকারি কলেজ ছিল। এর মধ্যে তিনটি কলেজ সরকারীকরণ করা হয় স্বাধীনতা-উত্তরকালে; গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের কাগমারি কলেজ দু’টি ১৯৭৫ সালে জাতীয়করণ করেছিলেন শেখ মুজিব এবং করটিয়া সা’দত কলেজ জাতীয়করণ করেন ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান। এরশাদ ক্ষমতায় এসে দেশের ৪২টি মহকুমা ভেঙে দেশকে মোট ৬৪টি জেলায় এবং ৪৬০টি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করেন। এরপর প্রতিটি নবগঠিত জেলা সদরে তিনি কমপক্ষে একটি মহিলা কলেজসহ দু’টি করে সাধারণ কলেজ তো জাতীয়করণ করলেনই, এমনকি এর ব্যাপ্তি কোনো কোনো জেলার উপজেলায়ও ছড়িয়ে গেলে দেশে সরকারি কলেজের সংখ্যা অচিরেই ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এতে করে বিপুলসংখ্যক বেসরকারি কলেজ শিক্ষক, যাদের অনেকেই স্বল্প বেতনে অভাব-অনটনে জীবন কাটাচ্ছিলেন, তারা উপকৃত হলেন। যেসব ছাত্রছাত্রী জেলা সদরের সরকারি কলেজে পড়ার বা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেত না, তারাও বাড়ির কাছের সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পেল।
আমরা যারা পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) পরীক্ষা দিয়ে সরাসরি সরকারি কলেজে যোগদান করেছি, তারা এরশাদের কলেজ জাতীয়করণের বিরোধিতা এবং এর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমাদের যুক্তি ছিল, জাতীয়কৃত এসব কলেজ শিক্ষকদের অনেকেই একাধিকবার পিএসসি ফেস করে অকৃতকার্য হয়েছেন। উপরন্তু, যে নীতিতে কলেজ জাতীয়করণ হচ্ছে, তাতে করে তারা আমাদের টপকে রাতারাতি সিনিয়র হয়ে যাচ্ছেন। ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ পদোন্নতির পথ হয়ে যাচ্ছে রুদ্ধ। এ ছাড়া এসব শিক্ষকের বেশির ভাগই মেধার ভিত্তিতে নয়, বরং দলীয় বিবেচনায় বেসরকারি কলেজে চাকরি পেয়েছেন। অধিকন্তু জাতীয়করণ প্রক্রিয়াটি এমনই ত্র“টিপূর্ণ ছিল যে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, লেকচারার পদ থেকে পরবর্তী ধাপ সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে আমাকে ১৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং এর পরবর্তী ধাপ সহযোগী অধ্যাপক পদে যেতে ৯ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে; এর পরবর্তী ধাপ অধ্যাপক পদে মাত্র দুই মাসেরও কম সময় চাকরি করে অবসরে গিয়েছি। এ জটিলতা জাতীয়করণকৃত কোনো কোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রেও হয়েছে। এ কারণে তাদের কেউ লেকচারার, কেউ সহকারী অধ্যাপক, কেউ সহযোগী অধ্যাপক পদে থেকেই অবসরে গেছেন। তবে কোনো কোনো ভাগ্যবান শিক্ষক অধ্যাপক হতে পেরেছেন এবং পুরনো বনেদি সরকারি কলেজগুলোর অধ্যক্ষ পদেও আসীন হয়েছেন।
এরশাদ আমলে সরকারি কলেজ শিক্ষকেরা কাডার সার্ভিসের মর্যাদা পেয়েছেন। আমরা কলেজ জাতীয়করণের বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমাদের দাবি ছিল, জাতীয়করণের নীতিটি এমন হোক, যাতে তারা ক্যাডারভুক্ত না হয়ে অন্য কোনো উপায়ে সরকারি কলেজ শিক্ষক হতে পারেন। যাতে করে আমরা যারা পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি সরকারি কলেজে এসেছি, তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হই। বর্তমানে সে নীতিতে ৩১৭টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং তাতে করে ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
এরশাদের আরেকটি অবদান হলো তিনি দেশের অনেক স্কুল ও বিশেষ করে মাদরাসাকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে এরশাদ কতটা ধার্মিক ছিলেন, জানি না। তিনি দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রাণের ধর্ম ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দিয়ে গেছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান টেলিভিশনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে গেছেন। ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা ‘হলিডে’ রোববারকে পরিহার করে সাপ্তাহিক জুমার দিন শুক্রবারকে ‘হলিডে’ ঘোষণা করেছেন। এসব কারণে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ এরশাদকে চিরকাল স্মরণ করবেন। এ ছাড়া আমরা যারা বেতনের টাকার ওপর নির্ভর করে সংসার চালাতাম, তাদের জীবনে কখন ঈদ আসত আর যেত, টের পেতাম না। টের পেলে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আড়ালে চোখের পানি লুকাতাম। এরশাদ উৎসবভাতা চালু করে আমাদের সে চোখের পানি মুছে দিয়ে গেছেন। মাঝে মাঝে মনে হয়, এরশাদ যে দীর্ঘ সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন লাভ করেছেন, এর মূলে রয়েছে সম্ভবত এসব উপকারভোগী মানুষের অন্তর নিংড়ানো দোয়া।
এ কথা ঠিক, এরশাদ ক্ষেত্রবিশেষে কতেক জাতীয়কৃত শিক্ষককে নিজ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে লাগিয়ে ছিলেন। তারাও সানন্দে এরশাদকে যথাসাধ্য সহযোগিতা দিয়ে গেছেন এবং বাড়তি উপকারভোগী হয়েছেন। এরশাদ শিক্ষকদের মর্যাদার দিকে না তাকিয়ে, আন্দোলনরত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের ঢাকার রাজপথে বসিয়ে বক্তৃতা করে তাদের দাবি পূরণ করেছেন। পক্ষান্তরে ১৯৭৭ সালে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের বেতনগ্রেড উন্নয়নের দাবিতে সরকারি কলেজে শিক্ষকেরা রাস্তায় মৌন মিছিল করলে প্রেসিডেন্ট জিয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে তিরস্কার করে বলেছিলেন, ‘আপনি শেষ পর্যন্ত শিক্ষকদের রাস্তায় নামালেন!’ এ সমস্যা নিরসনের ভার জিয়া ন্যস্ত করেছিলেন বিচারপতি সাত্তারের ওপর। অবশেষে প্রেসিডেন্ট জিয়ার হস্তক্ষেপে বিষয়টি শিক্ষকদের অনুকূলে সুরাহা হয়। শিক্ষকদের দাবি পূরণের পরে তিনি কলেজ শিক্ষকদের বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ করে চা-সমুচা-মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন।
বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকেরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে দিনের পর দিন শুয়ে-বসে অনশন করেও দাবি আদায় করতে পারছেন না। শিক্ষকদের সাথে পুলিশের হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি হয়। অভিজ্ঞতা বলে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকারের আমলে শিক্ষকেরা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত ও হেনস্তা হয়েছেন। মুজিবও একবার শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘মনে রাখবেন ছাত্রদের ফেল করানোতে কোনো কৃতিত্ব নাই’। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শিক্ষকেরা কি ছাত্রদের ইচ্ছে করে ফেল করান? রাজনৈতিক সরকারের আমলে শিক্ষকেরা নিজেরা তো হাতাহাতি করেনই, ক্ষেত্রবিশেষে ছাত্র-অভিভাবকেরা শিক্ষকদের ধরে ঠ্যাঙায়। ১৯৭৪-এ মৌখিক পরীক্ষার মাধমে অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত মেধাবী বহু শিক্ষক পিএসসির দলীয় বিবেচনায় সার্ভিস রেগুরালাইজেশনের ফলে চাকরি থেকে বাদ পড়েন এবং তাদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর বিষয়টি নতুন সরকারের দৃষ্টিগোচর করা হলে পিএসসি এসব বাদপড়া মেধাবী শিক্ষকের চাকরি রেগুলারাইজ করেছিল।
এরশাদ দেশকে ৬৪টি জেলায় এবং ৪৬০টি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করে প্রতিটি উপজেলাকে প্রশাসনের একেকটি কেন্দ্রে রূপদান করেছিলেন। প্রতিটি উপজেলাকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচারব্যবস্থার নিউক্লিয়াসে পরিণত করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন। এ কার্যক্রম যদি পরবর্তী সরকারগুলো আন্তরিকতার সাথে চালিয়ে যেত, তবে আজকের বাংলাদেশের চেহারা যেত পাল্টে। প্রতিটি বিভাগে একটি করে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছিলেন এরশাদ। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের কাজটি তিনিই শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে ক্ষমতার বাইরে থেকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি বিভাগকে একেকটি প্রদেশে রূপান্তরিত করব’। অপর দিকে, আজ সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। সামান্য কাজের জন্যও এ দেশে দূর-দূরান্তের লোকদের ঢাকা দৌড়াতে হয়। এতে করে ঘুষ-দুর্নীতির পথ অবারিত হয়েছে। এরশাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হলে তা হয়তো সম্ভব হতো না; বরং জনভোগান্তি লাঘব হতো। যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর তিনিই স্থাপন করেছিলেন। এর অর্থ জোগানের জন্য তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের ওপর আড়াই শতাংশ লেভি ধার্য করেছিলেন। এ টাকা দিতে আমাদের কষ্ট হতো; তবু আমরা তা হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলাম।
১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় দেখেছি, এরশাদ রেইনকোট পরে স্পিডবোটে চড়ে দূর-দূরান্তের বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ ধরনের পরিদর্শনকালে তার চেহারায় বেদনার্ত অভিব্যক্তি লক্ষ করা গেছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট জিয়া নিজ হাতে খাল খনন করেছেন। এসব কাজ মহিলাদের দিয়ে সম্ভব হয় না। বর্তমান আমলে সরকারপ্রধান বিভিন্ন সময় ফিল্ডের কর্মকর্তাদের ঢাকায় ডেকে এনে উপদেশ প্রদান করে থাকেন। এবার বনভাসি মানুষের পাশে তিনি দাঁড়ালেনই না, বরং ডিসিদেরও স্টেশন থেকে তুলে ঢাকায় এনে পাঁচ দিনের অতি দীর্ঘ সম্মেলন করলেন। আজকাল সরকারের কর্তাব্যক্তিরা ফিল্ডওয়ার্ক করেন না; ক্ষমতা উপভোগ করেন; আয়েশ ও স্ফূর্তি করেন; বিদেশে দৌড়াদৌড়ি করেন; অথচ দেশের লোকের খবর নেন না। দেশ যখন বানের পানিতে ভাসছে, সরকারি খরচে তখন ১৭ দিনের সফরে বিলেত চলে গেলেন কোনো কোনো ভিভিআইপি। সরকারি ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, তিনি দেশের টিকিৎসকদের পরামর্শে গেছেন। উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ বাংলাদেশে চক্ষু চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত নেই!
জাতীয় জীবনে এরশাদের অবদানের কথা স্বীকার করেও বলতে হয়, তিনি দেশে একটি মন্দ নজির স্থাপন করে গেছেন, যা পত্রপল্লবে বিকশিত হয়ে মহীরুহে পরিণত হয়েছে। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে তিনি ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। অবশ্য এ আলামত আমরা ১৯৭৩ সালের স্বাধীন দেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনেই দেখেছিলাম। এরশাদ ছাত্রদের রাজনীতিতে টেনে আনার চেষ্টা করেও পরে এ সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ করে সুধীসমাজের প্রশংসা অর্জন করেছেন। তিনি যদি ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতেন, তবে তার পতন এত ত্বরান্বিত হতো বলে মনে হয় না। তার আমলে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নকলের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছিল। অবশ্য এটা বিশেষ করে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশেরই পরম্পরা। আজো তা ভিন্ন কৌশলে চলছে। এরশাদ আমলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হন, যেমনটি অদ্যাবধি চলে এসেছে। তার আমলেও মেয়েদের গায়ে এসিড নিক্ষেপ করা হতো মাঝে মধ্যে। আজ তারা মহামারী আকারে ধর্ষিত-নিহত হচ্ছে। তবে এরশাদ আমলে খুন, জখম, গুম, হত্যা আজকের মতো ডালভাত ছিল না। এরশাদ আমলে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সত্য, তবে আজকের মতো তা ‘প্রাতিষ্ঠানিক রূপ’ নেয়নি। সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর থেকে তেমন কোনো অগ্রগতি তো আমরা লক্ষ করছি না।
এরশাদের রাজনীতি তার পতনের পরও ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’। দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে দেখা গেল, এরশাদকে ছাড়া তাদের চলে না। ২০১৪ সালের প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ এরশাদকে সংসদে বিরোধী দলে রেখেও তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং তার দলের কয়েকজন সংসদ সদস্যকে মন্ত্রী করা হলো। ২০১৮ সালে ‘মধ্যরাতের নির্বাচনে’ জিতে আওয়ামী লীগ এরশাদকে সংসদে বিরোধী দলনেতা বানায়। আওয়ামী লীগ তার মধ্যে এমন কী পেয়েছিল যে, তাকে ছাড়া চলতে পারল না? এরশাদ তো মুক্তিযুদ্ধের কাছে-কিনারেও ছিলেন না। ইতিহাস এ রহস্য একদিন উদঘাটন করবে। অনেকের মতে, বর্তমানে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী যতটা; ক্ষমতায় বিশ্বাসী এর চেয়ে বেশি। তাই এমনটি ঘটতে পেরেছে। হ
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক,
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার

 


আরো সংবাদ



premium cement