২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : রমজান এবং আমাদের দায়িত্ব

-

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পবিত্র মাহে রমজান আমরা অতিবাহিত করছি। আল্লাহ তায়ালা দয়া করে আমাদের আমল যেন কবুল করেন। কুরআন শরিফ নাজিলের এ মাস অত্যন্ত মর্যাদাময়। ইসলাম গ্রহণের কথা, স্বীকার করে বা ঘোষণা দিয়েই আমরা মুসলমান হয়েছি। আমাদের আচরণগত কারণে মুসলমানিত্ব চলেও যেতে পারে। তাই নিছক বাপ-দাদার ধর্মানুসারী হিসেবে নয়, বরং ইসলাম কবুলকারী হিসেবেই আমরা এক-একজন মুসলমান। অথচ এ ব্যাপারে আমরা অনেকেই অসচেতন।
ইসলামের শ্রেষ্ঠ মাস রমজানে আত্মসমালোচনা করে বলতে পারি, আমরা কতটুকু মুসলমান। যেমন রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে অনেক চমৎকার, শিক্ষণীয় ও সুন্দর অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। লক্ষ করলে দেখা যায়, বিরতিহীন নাটক (স্পন্সরের মাধ্যমে) প্রচারিত হলেও অশোভন বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ইসলামি অনুষ্ঠানের সুধা পান করতে হয়। এত বিপুলসংখ্যক মুসলমানের দেশে পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক টিভি চ্যানেল দূরের কথা, একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি অনুষ্ঠান করাও কেন সম্ভব নয়? তাহলে দর্শক, নাগরিক, সম্প্রচারক ও স্পন্সর হিসেবে আমাদের দায়িত্ববোধের অভাব আছে বলে ধরে নিতে হয়।
টিভি একটি শক্তিশালী প্রচারমাধ্যম। বাংলাদেশে এত টিভি চ্যানেল, নানা রকম অনুষ্ঠান প্রচার করেও এ দেশে ইসলামি ভাবধারার অনুষ্ঠান করার যেন আগ্রহ বা অভিজ্ঞতাই কারো নেই। নাটক ও সিনেমাসহ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো ইসলামি আদর্শানুযায়ী তৈরি করা যায়। দুঃখের বিষয়, প্রিন্ট মিডিয়ার ঈদ সংখ্যায় রমজান, ঈদের তাৎপর্য, শিক্ষা ইত্যাদি নিয়ে তেমন লেখা থাকে না।
পৃথিবীজুড়েই ইসলামি সংস্কৃতির টিভি-সিনেমা, সংবাদমাধ্যম বিরল। এর অভাবে ‘অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে’ আমরা তার খেসারত দিচ্ছি। অশালীনতা, নাচ, গানবাজনায় ইসলামি বিধিনিষেধ থাকলেও নাটক-সিনেমা করা যায় এবং কিছু কিছু তৈরি হচ্ছেও। এ দিকে নজর দেয়া জরুরি। ভয় দেখিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই নিজেদের কলহ দূর করতেই হবে। কুরআনের নির্দেশনা মতে, পরকালকে ভয় করে চলতে হবে। মিথ্যাচার ও অত্যাচার পরিহার করতে হবে। যেমনÑ আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আর লক্ষ করো যে, আগামীকাল আল্লাহর সামনে কী আমলনামা পেশ করতে যাচ্ছো। (সূরা হাশর : ১৮)। কুরআনের এ নির্দেশ সবার জন্যই অনুকরণ করা বাধ্যতামূলক।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আজ আমি তাদের মুখের ওপর মোহর লাগিয়ে দেবো এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের চরণসমূহ সাক্ষ্য দেবে সে সম্পর্কে, যা তারা করত।’ (সূরা ইয়াসিন : ৬৫)। তাই শত অপকর্ম করে বা এতে সহায়তা করেও যারা মিথ্যা বলে এবং সাফাই গেয়ে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে; তাদেরই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একদিন তা ফাঁস করে সাক্ষ্য দেবে। কুরআন নাজিলের সম্মানিত এ মাসে মাতৃভাষায় কুরআনের তাৎপর্য বুঝে নিজে ধন্য হবো এবং নাজাতের পথে চলতে পারব; আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমিন। হ


আরো সংবাদ



premium cement

সকল