২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

স্ম র ণ : বিচারপতি আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী

-

বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামে ১৯২৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তার জন্ম। ইন্টারমিডিয়েটে মেধাতালিকায় অবস্থান করেও রাজনীতি সচেতন হিসেবে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি না হয়ে ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সক্রিয় ছিলেন মুসলিম ছাত্রলীগের কার্যক্রমে। পাকিস্তান হওয়ার পর ১৪ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করার পর এলএলবি এবং এলএলএম প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। এরপর কিছু দিন চট্টগ্রামে স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় ‘সিভিকস অ্যান্ড ইকোনমিকস’ নামে একটি বই রচনায় হাত দেন। ১৯৫৬ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুন্সেফ হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি মনোনীত হওয়ার পর ডেপুটেশনে আইন সচিব হিসেবে আট বছর দায়িত্ব পালনকালে অনেক উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের ক্ষেত্রে তার অবদান স্মরণীয়। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত লেবার অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান, অবসর নেয়ার পর লেবার ল কমিশনের চেয়ারম্যান, ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের পরামর্শক, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আরবিট্রেশনে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা ছাড়াও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের রিভিউ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হিসেবে যমুনা সেতু আইন এবং নির্বাচন কমিশনের আইনগুলো ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো তিনি এ সময়ে করেন।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি রাউজানে বাবা-মার স্মরণে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন মাজেদা মজিদ ওয়াকফ ফান্ড। এ ফান্ডের অনুদানে পরিচালিত হয় এমদাদুল ইসলাম মাদরাসা, মাজেদা মজিদ হেফজখানা ও এতিমখানা। বিচারপতি আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী নিজ গ্রামে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করার উদ্যোগ নিলেও ২০ মে ২০১০ সালে তাহাজ্জুদ নামাজের পরপরই মহান রবের সান্নিধ্যে ফিরে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী খোদেজা বেগমের অনুপ্রেরণায় সুযোগ্য দুই ছেলে ডা: চৌধুরী শওকত ওসমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন প্রফেসর ডক্টর চৌধুরী মাহমুদ হাসান ‘বিচারপতি আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী মেমোরিয়াল হসপিটাল’ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ব্যক্তিজীবন ও কর্মময় জীবনে তিনি সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও দূরদর্শিতার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। একাধিকবার হজ পালন করেছিলেন। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ৫০টিরও অধিক দেশ সফর করেন। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী তার প্রভিডেন্ড ফান্ডের বড় অংশ অভাবী মানুষদের দান করে গেছেন।হ
ডক্টর চৌধুরী মাহমুদ হাসান

 


আরো সংবাদ



premium cement